BBC Bangla
রংপুর থেকে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় গিয়ে এক বাড়ি থেকে দুজনকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিআইডির (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) তিনজন সদস্যকে আটকের পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ওই তিনজনসহ মোট পাঁচজনকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছিলো। মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে করা মামলায় তাদের আজ বুধবার বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়।
সিআইডির তিন সদস্য হলেন একজন সহকারী পুলিশ সুপার, একজন সাব ইন্সপেক্টর ও একজন কনস্টেবল। তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও তাদের সাথে আটক করা হয়েছে।
রংপুরে সিআইডির এসপি আতাউর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ওই তিনজন তার কোন অনুমতি ছাড়াই দিনাজপুরে গিয়ে ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তিনি জেনেছেন।
“তারা আমার কোন পারমিশন নেয়নি। নিজেরাই সেখানে গেছে বেসরকারি গাড়ি নিয়ে। এখন দিনাজপুর জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। তারা যে সিদ্ধান্ত নিবে সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেয়া হবে”।
ওদিকে ঢাকায় সিআইডির মুখপাত্র মোঃ আজাদ রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ঘটনাটি তারা শুনেছেন এবং বিস্তারিত তথ্যের অপেক্ষায় আছেন।
“আমরা শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে বিভাগীয় যা ব্যবস্থা নেয়ার সেটি করা হবে,” বলছিলেন মিস্টার রহমান।
বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
দিনাজপুর ও রংপুরের পুলিশ প্রশাসন সূত্রগুলো জানিয়েছে, চিরিরবন্দর উপজেলা সদরের সোলেমান শাহপাড়ায় সোমবার রাতে নাটকীয় কায়দায় বাড়ি থেকেই মা ও ছেলেকে অপহরণ করে নেয় একদল ব্যক্তি।
রাত সাড়ে নয়টার আট/নয় জন একটি মাইক্রোবোস নিয়ে সেখানে যায়। তাদের সাথে ২/৩টি মোটরসাইকেলও ছিলো।
কালো রংয়ের ওই মাইক্রোবাস থেকে নেমে তারা ঘরে ঢুকে মধ্যবয়সী এক নারী ও ছেলেকে তুলে নেয়। বাড়িতে থাকা একটি মোটরসাইকেলও তারা নিয়ে যায়।
পরে ওই নারীর স্বামী ও এক আত্মীয়কে ফোন করে তাদের মুক্তির জন্য পনের লাখ টাকা দাবি করা হয়।
এ নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর অপহরণকারীদের সাথে তাদের আলোচনা চলে এবং এর মধ্যে ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশও অবহিত হয়।
পরে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ রফা হলে অপহরণকারীদের টাকা নিতে হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আসতে বলা হয় কিন্তু সেখানে পৌঁছানো মাত্রই তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
পরে তাদের ধাওয়া করে দিনাজপুর সদরের দশমাইল নামক স্থান থেকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
অবশেষে মুক্তিপণ দাবির মামলার আজ বুধবার বিকেলে তাদের আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
চিরিরবন্দর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) সুব্রত কুমার সরকার ঘটনাটি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।