তুর্কি বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘এশিয়ার প্রবেশদ্বার হতে পারে বাংলাদেশ’

24 Live Newspaper

এশিয়ায় ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী তুর্কি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ ও তুরস্কের পতাকা

ইস্তাম্বুলে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করে তুর্কি প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে তা রপ্তানি বা সরবরাহ করতে পারবে। এর ফলে তুর্কি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ একটি কৌশলগত উৎপাদন ও সরবরাহ কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।

তিনি বাংলাদেশে তুর্কি বিনিয়োগের জন্য বস্ত্র ও পোশাক শিল্প, নির্মাণ, নির্মাণসামগ্রী, প্রতিরক্ষা শিল্প এবং ঔষধ খাতকে সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করেন। চৌধুরী আরও জানান, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা বিভিন্ন খাতের জন্য বিপুল সুযোগ তৈরি করবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। সম্প্রতি আঙ্কারা ও ঢাকার মধ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং যৌথ উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা চলছে, যা বাংলাদেশকে তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য একাধারে সরবরাহকারী ও ভবিষ্যৎ গ্রাহক করে তুলতে পারে।

আশিক চৌধুরী বলেন, ‘আমি মনে করি তুরস্ক একটি উন্নত দেশ।’ তিনি উল্লেখ করেন, তুরস্কের অনেক প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিকভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে। সাংস্কৃতিক নৈকট্য এবং উদীয়মান বাজারের মানসিকতা তুর্কি প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি স্বাভাবিক মেলবন্ধন তৈরি করে। এই অভিজ্ঞতা তুর্কি বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নিতে আগ্রহী করে তুলেছে এবং তারা এই যাত্রার মর্ম বোঝেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি পরামর্শ দেন, তুর্কি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের উচিত বাংলাদেশকে ‘এশিয়ার উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য একটি সম্ভাব্য দ্বিতীয় কার্যালয়’ হিসেবে বিবেচনা করা। চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশে তুরস্কের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার এটাই উপযুক্ত সময়’। তিনি লজিস্টিকস, বিশেষ করে বিমান ও সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনায় তুর্কি প্রতিষ্ঠানগুলোর সফলতার কথা উল্লেখ করে এই খাতেও বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ১৯৭৬ সালে ঢাকায় তুরস্ক দূতাবাস এবং ১৯৮১ সালে আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস খোলা হয়। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাৎসরিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১.১ বিলিয়ন ডলার।