গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও বিকল্প যানবাহনে করে দলে দলে মানুষ ঠাকুরগাঁওয়ে ফিরছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৯০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। ১৪টি গাড়ির চালককে জরিমানা করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমিত এলাকা থেকে এত মানুষ একসঙ্গে ফিরতে থাকায় স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পেড়েছেন।
পুলিশ জানায়, আটক ব্যক্তিরা ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে কাজ করেন। সম্প্রতি এসব এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় লকডাউন করে প্রশাসন। এর পরপরই তাঁরা গোপনে এসব এলাকা থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে রওনা হন। আজ ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও জেলা সীমানা অতিক্রমের সময় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম ও পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বে পুলিশ ১৪টি যাত্রীবাহী বাস, অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান ও প্রাইভেটকার আটক করে। এ সময় অনেক যাত্রী পালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ৯০ জনকে পুলিশ আটক করে।
আটকের পর পুলিশ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খবর দেয়। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে প্রত্যেক গাড়ির চালককে ৫০০০ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পণ্য উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নেওয়া হয়।
জগন্নাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল মমেন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমিত এলাকা থেকে দলে দলে মানুষ যেভাবে এলাকায় আসছেন, তাতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে।
সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম বলেন, সরকার গণপরিবহন বন্ধ করেছে। এ অবস্থায় কোনো যানবাহনে যাত্রী বহন করার সুযোগ নেই। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন যানে যাত্রী বহন করায় ১৪টি যানবাহন আটক করা হয়। এসব যানে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ দেড় শতাধিক যাত্রী ছিল। অনেকেই পালিয়ে যান।
ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, আটক ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। এরপর তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কোনো গণপরিবহনে যাত্রী পরিবহন করলে সেই পরিবহনের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। কঠোর নজরদারি করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।