মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু
ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদার করার পথ ও পন্থা নিয়ে জরুরি আলোচনায় ঢাকা আসছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু। যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে আসছেন তিনি। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সিনিয়র ডিরেক্টর লিন্ডসে ফোর্ড। গত মে মাসে সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন দক্ষিণ এশিয়ায় বহুল আলোচিত মার্কিন কূটনীতিক লু। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ডোনাল্ড লু তথা যুক্তরাষ্ট্রের কোন প্রতিনিধি দলের এটাই হতে যাচ্ছে প্রথম বাংলাদেশ সফর।
দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র রাতে মানবজমিনকে জানিয়েছে, প্রতিনিধিদলটি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করা ছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক চেয়েছে। মধ্যরাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলো ঠিক হয়নি।
সূত্র মতে, মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরে অর্থনৈতিক ও আর্থিক সহায়তার মতো বিষয়গুলোতে অগ্রাধিকার থাকলেও সার্বিক সম্পর্ক উন্নয়নের উপায় নিয়ে আলোচনা হবে। বিদ্যমান শ্রম আইন সংশোধনের অগ্রগতি জানতে চাইতে পারে প্রতিনিধি দলটি। কারণ আগামী দিনে ডিএফসি ফান্ড প্রাপ্তি সহ বাংলাদেশকে যে কোনো অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্র শ্রমমানকে অগ্রাধিকারে রাখবে। বিশেষত: আর্থিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে শ্রম মানের উন্নতি।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তথা ডেমোক্রেটিক শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির ফোকাস হচ্ছে বিশ্বময় গণতন্ত্রের চর্চা। বাংলাদেশে ১৬ বছরের স্বৈরশাসনে গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছে।
এটা যুক্তরাষ্ট্রসহ মানবাধিকার সংবেদনশীল রাষ্ট্রগুলোর অজানা নয়। সেই প্রেক্ষাপটে নতুন সরকারের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের আলোচনায় উপরুল্লিখিত বিষয়গুলো আসবেই- এমনটা জানিয়ে সেগুনবাগিচার এক কর্মকর্তা বলেন, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে গত এক যুগের বেশি সময়জুড়ে বাংলাদেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে সমালোচনা ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে গুমবিরোধী সনদে সই করেছে। গুমের ঘটনাগুলোর বিচারে তদন্ত কমিশনও গঠন করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক সংস্কারে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া হতে পারে।