টিপকাণ্ড তদন্তের খবর উধাও

Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত) : Most Popular Bangla Newspaper


লতা সমাদ্দারের ইভটিজিংয়ের ঘটনার তদন্ত রিপোর্টটি এখন সংবাদে কোথাও নেই। প্রধান সংবাদমাধ্যমে বহু খোঁজাখুঁজি করে ভেতরের পাতায়ও এর খবর পাওয়া গেল না। অখ্যাত কয়েকটি মিডিয়ায় এসেছে। তারা সম্ভবত এ খবরটির বাজারমূল্য বিবেচনা করে অনলাইনে আপ করেছে। এ ধরনের ঘটনায় বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রচুর আগ্রহ আছে। তারা প্রকৃত ঘটনা জানতে চায়। নামীদামি মিডিয়া ‘ব্লাক আউট’ নীতি গ্রহণ করলে অখ্যাত মিডিয়া এ খবর দিয়ে নিজেদের হিট কিছু বাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এমন বহু ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছে, প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম যেগুলো না দেখার ভান করেছে। তথ্যকে গায়েব করে দেয়ার এমন নীতিহীন কাজ মূলত কোনো কাজে আসে না। আমাদের দেশের প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম বারবারই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যাচ্ছে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে। সাংবাদিকতা করার বদলে অ্যাক্টিভিজম করে পরে তারা মুখ লুকিয়ে নেয়।

খবরে জানা যাচ্ছে, তদন্ত শেষে ডিএমপি কমিশনার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল ও লতা সমাদ্দারকে পৃথকভাবে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাতে সমাদ্দার জানান, তার সাথে কনস্টেবলের বাগি¦তণ্ডা হয়। আর সেটি হয়েছিল তার পায়ের সাথে মোটরসাইকেল লাগার কারণে। অন্য দিকে কনস্টেবল স্বীকার করেন, তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন তার সাথে স্ত্রী থাকার। তদন্ত রিপোর্টে এমন একটি প্রতিবেদন কেউ আশা করেনি। কারণ চিলে কান নিয়ে গেছে বলে যে সঙ্ঘবদ্ধ চিৎকার চেঁচামেচি চার দিক থেকে করা হয়েছিল তা একেবারে মাঠে মারা গেছে। শুধু সমাদ্দারের একক অভিযোগের ভিত্তিতে বিবিসিও বিস্তারিত কয়েকটি প্রতিবেদন রচনা করে। সংবাদমূল্যের বিবেচনায় এমন নিউজ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমটির কেবল বাংলা বিভাগেই সম্ভব হচ্ছে।

বিবিসির ওই প্রতিবেদনে সমাদ্দারের অভিযোগ ফাইনাল সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। খবরের সারনির্যাস হলো- পুলিশ কনস্টেবল টিপের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করেছেন। তাকে লাঞ্ছিত-অপমানিত করেছেন। বিবিসি এ সুযোগে আলাদা আরো প্রতিবেদন রচনা করে দেখানোর চেষ্টা করেছে, টিপ বাঙালি সংস্কৃতির অংশ এবং এর উৎস অনেক গভীরে। প্রতিবেদনে তারা এক্সপার্ট হিসেবে এমন ব্যক্তির মন্তব্য নিয়েছে, স্কলার হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। অথচ বৃহত্তর সমাজে তার মতামতকে গুরুত্বসহ গ্রহণ করার মানুষ সামান্য। ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক ব্যাপারে তার কাছে কেউ জ্ঞান নিতে যাবে না। ‘টিপকাণ্ড’ নামে বহুল পরিচিতি পাওয়া ঘটনাটি আমাদের সমাজের আড়ালে থাকা সঙ্ঘশক্তিকে চিহ্নিত করে। যেখানে দেখা গেল একটা শ্রেণী ওঁৎ পেতে থাকে বৃহত্তর সমাজ ও তাদের চিন্তাচেতনাকে সুযোগ বুঝে ‘আক্রমণ’ করার জন্য। ঝোপ বুঝে কোপ মেরে নিজেদের সাম্প্রদায়িক সংক্রমণকে সমাজ ও রাষ্ট্র্রের আরো গভীরে প্রবেশ করিয়ে দিতে চায় তারা। তারই ফসল হিসেবে আমরা দেখতে পেলাম, চাপের চোটে পুলিশ প্রশাসন সোজা থাকতে পারেনি। অপরাধ করেছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার আগেই কনস্টেবলকে তারা বরখাস্ত করে বসে। তদন্ত অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে উভয়ে সমানভাবে দোষী।

অথচ ইভটিজিংয়ের বহু প্রমাণিত ঘটনা রয়েছে যেখানে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগ্রহই পায়নি। কিংবা তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে সাহস পায়নি। শুধু ইভটিজিং নয়, সরাসরি নারী নির্যাতনের বড় বড় অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালের অক্টোবরে কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক মা ও মেয়েকে আস্তানায় নিয়ে দুর্বৃত্তরা নির্মমভাবে পেটায়। পরে উভয়কে দড়ি দিয়ে বেঁধে অনেকটা অর্ধবস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় চোরের মতো করে হাঁটায় বাজারে চোর ধরা খেলে ঠিক যেভাবে জুতার মালা পরিয়ে ভরা বাজারে ঘোরানো হয়। এ ধরনের ঘটনার সবচেয়ে বড় দিক একজন মানুষকে অপমানিত করা। কোনো একজন মানুষ মারধরের শিকার হতে পারে। সেটি সে কোনোভাবে মেনে নিতে পারে; কিন্তু তাকে যখন বিবস্ত্র বা অর্ধবস্ত্র করে ভরা বাজারে ঘোরানো হয় সেটি এমন এক অপমান, যা মেরে ফেলার চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ।

ওই দুই নারীর কোনো অপরাধ ছিল না। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের লোকেরা তাদের বিরুদ্ধে পশু চুরির অভিযোগ আনে। প্রকৃত কারণ পরে জানা গেল- মূলত এই চেয়ারম্যানের বিয়ের প্রস্তাব গ্রহণ না করায় এমন ভয়াবহ নির্যাতন ও অপমান মা-মেয়ের জীবনে নেমে আসে। ওই ঘটনার ক্ষেত্রে ঘটেছিল উল্টো ঘটনা। সে ঘটনা নিয়ে খবর প্রকাশে প্রধান ধারার সব সংবাদমাধ্যম চোখ বুজে যাচ্ছিল। তবে তাদের লজ্জায় ফেলে দেয় সামাজিক মাধ্যম। ঘটনাটির একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলো। সেখানে দেখা গেল, কোনো এক আদিম সমাজে অসভ্য মানুষের একটি দল এক নারী ও তার তরুণী কন্যাকে বেঁধে রাস্তায় প্রদর্শনী দিয়েছে। অর্থাৎ ঘটনাটি ঘটার শতভাগ প্রমাণ বিরাজমান ছিল। ঘটনার অভিযুক্ত কারা সেটিও ছিল নিশ্চিত।

সমাদ্দারের অপ্রমাণিত অভিযোগকে সত্য ঘটনা হিসেবে দাঁড় করিয়ে একজন দাড়িওয়ালা পুলিশ কনস্টেবলকে শায়েস্তা করার আমাদের এই জাতীয় প্রচেষ্টায় কিভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের টপ টু বটম সাড়া দিয়েছে একটু নজর বুলিয়ে দেখুন। প্রথমেই একেবারে স্টার সংবাদমাধ্যম ‘টিপ পরায় হয়রানি’ নামে সংবাদ ছেপে দিয়েছে। সেখানে যিনি হয়রানি হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার জোরালো বক্তব্য সুন্দর করে দেয়া হয়েছে। শেরেবাংলা থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেøখ করেন, ‘‘ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টের সামনে দিয়ে কলেজে যাওয়ার সময় পুলিশের পোশাক পরা একজন কপালে টিপ পরা নিয়ে ‘ইভটিজিং’ ও গালাগালি করেন। এর প্রতিবাদ করায় ওই পুলিশ সদস্য তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।’’ আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থার নেতিবাচক দিকটি সবাই জানে। মামলা করার সময় সত্য-মিথ্যা সব অভিযোগ একসাথে সাজিয়ে বলার চেষ্টা করা হয়। কেউ তখন সততার বিষয়টি আর মাথায় রাখতে চায় না। তা আমাদের জানা থাকার পরও সংবাদমাধ্যম কনস্টেবলের বক্তব্য ছাড়াই খবরটি ছেপে দেয়। খবর প্রকাশ পাওয়ার পর আমাদের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ত্বরিত প্রতিক্রিয়া বিস্ময় জাগানোর মতো।

ইভটিজিং করেছে কি না সেটি নিশ্চিত না হওয়ার পরও তারা অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তির দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ও সম্পাদক এক বিবৃতিতে বলেছেন, স্বাধীন রাষ্ট্র্রে এ ধরনের ঘটনা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ বিবৃতিতে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তার শাস্তি নিশ্চিত করতে বলেছে। এটিকে তারা পুলিশ প্রশাসনের এক অংশের সাম্প্রদায়িকতার নগ্ন রূপ বলে উল্লেখ করেছে। ‘আমরাই পারি’ পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে ঘটনাটিকে পুলিশের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধ পরিপন্থী আচরণ হিসেবে উল্লেøখ করা হয়েছে। ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ সমাবেশ করে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে অভিযুক্তকে আটক করার জন্য। ‘শাহবাগ’কে আন্দোলনের একটি প্রতীকী রূপ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল কিছু মানুষের ফাঁসি চাওয়ার মাধ্যমে। যারা এই আন্দোলনটি করেছে সবাই পরে ধিকৃত হয়েছেন। প্রধান সারির মিডিয়া এটিকে প্রথমে দেশের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে উল্লেøখ করে নজিরবিহীন কাভারেজ দেয় ও ব্যাপক মিথ্যা সংবাদ ছাপায়। পরে অবশ্য কোনো মিডিয়া এ আন্দোলনটিকে আর স্মরণ করে না। ওই আন্দোলনের নেতাদের এখন আর প্রকাশ্যে দেখাও যায় না।

লতা সমাদ্দারের সমর্থনে কঠোর ভাষায় আরো বিবৃতি দিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, নারীপক্ষ, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সঙ্ঘ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও প্রীতিলতা ব্রিগেড। মিডিয়া অত্যন্ত যতেœর সাথে তাদের বিবৃতি ও বক্তব্যগুলো একসাথে এক জায়গায় এনে সাজিয়ে দিয়েছে। সামাজিক রাজনৈতিক এসব প্রতিষ্ঠান ও মিডিয়ার যোগসাজশে গর্জে ওঠায় তার প্রভাব অনেকটা বন্দুকের নল থেকে একটি গুলির মতোই কাজ করেছে। যার কারণে প্রশাসন কোনো দিকে না তাকিয়ে কনস্টেবলকে বরখাস্ত করেছে। অথচ পুলিশের বিভিন্ন সদস্যের বিরুদ্ধে আরো গুরুতর অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে। সেসব ঘটনায় সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী। শত প্রমাণ থাকার পরও ওই সব পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেই।

অপ্রমাণিত সন্দেহযুক্ত ঘটনা নিয়ে গর্জে উঠেছে আমাদের জাতীয় সংসদও। সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তফা পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে ‘ইভটিজিংয়ের’ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আমাদের সংসদে কত কিছুই আলোচনার সুযোগ থাকে না। সাধারণত জনসাধারণের জীবন ও জীবিকার সাথে জড়িত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো মনোযোগ পায় না। সুবর্ণা একজন নারীর ইভটিজিং নিয়ে বলেছেন, ঠিক আছে। তার পরপরই ৬ এপ্রিল শরীয়তপুরে স্কুলে ভর্তির টাকা না পেয়ে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে অষ্টম শ্রেণী পড়–য়া এক ছাত্রী। স্কুলে যাওয়ার আগে ২০০ টাকা চেয়েছিল, বাবা সে টাকা দিতে না পারায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে নিজেকেই শেষ করে দেয়। নারী-শিশুদের নিয়ে প্রায় প্রতিদিন এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটছে। আমাদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যরা সরকারের কাছে মোটাদাগে সুযোগ-সুবিধা পান। তারা অন্তত নারীদের প্রকৃত ইভটিজিং, নিপীড়ন, অভাব অনটন ও দারিদ্র্য নিয়ে সজাগ হতে পারেন। একই সময় খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র একই ধরনের অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা করেছেন। এ ধরনের হৃদয়বিদারক প্রাণসংহারী ঘটনা সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। সরকারের নজর সে দিকে যেতে পারে। আমাদের সংসদ সদস্যরা এসব নিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও টিপ পরে কিছু স্পেশাল ছবি সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছেন। একেবারে সরকারের এতটা উঁচু স্তরের মানুষও যখন হুজুগে শামিল হয়ে যান, তখন অন্যদের বিরুদ্ধে কিছুই আর বলার থাকে না। সমাদ্দারের টিপকাণ্ড নিয়ে অভিনেতাদের একটি অংশ দৃষ্টিকটু প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করেছেন। তারা টিপ পরে সামাজিক মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। বাংলাদেশে পুরুষরা টিপ না পরলেও, তারা সেটি করেছেন। একটি ভিত্তিহীন ঘটনা নিয়ে সঙ্ঘবদ্ধ অর্থহীন প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য তারা কি এখন দুঃখ প্রকাশ করবেন! লজ্জার কথা না হয় নাই বললাম। আর যাকে অপবাদটি দেয়া হলো তার জন্য কেউ কি অনুতপ্ত হবেন? তার পক্ষ হয়ে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কেউ কি মানহানি মামলা করবেন? এ ধরনের একটি গর্হিত কাজ করার জন্য লতা সমাদ্দারকে কি বিচারের মুখোমুখি হতে হবে? পুলিশ ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তারা সমাদ্দারের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেবে না। অন্ততপক্ষে যারা তার কথায় ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজেরাই ভিক্টিম হয়ে সম্মান হারালেন তারা কি এখন তার বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন নেবেন?

আমাদের সমাজে টিপ পরা অতি সাধারণ একটি ঘটনা। এখানে নারীরা টিপ পরে থাকলে কেউ তাকে আলাদাভাবে দেখে না। সমাজের কোনো অংশের মানুষ তাদের প্রতি দ্বিধা সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায় না। কিংবা কেউ এটিকে মন্দ গর্হিত বা ঘৃণার চোখে দেখে না। কিন্তু আমরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে যে প্রতিক্রিয়া দেখালাম, তাতে মনে হচ্ছে টিপ পরে এ দেশে নারীরা প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত অপমানিত হচ্ছে। এসব ঘটনার আরো একটি ভিন্ন দিক হলো- এসবকে দ্রæততার সাথে ধর্মীয় রূপ দান। সাধারণত বোঝানোর চেষ্টা করা হয়- সংখ্যালঘুরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে আমাদের সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দারুণ। তবে যতটুকু সংখ্যালঘু হেনস্তা নির্যাতনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা রয়েছে তার সাথে মুসলমানদের বৃহত্তর সমাজের কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি ধর্মীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোরও কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং এই গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে কাজ করে। এর সাথে প্রধানত সম্পর্ক ক্ষমতাসীন স্বার্থগোষ্ঠীর। তারা ক্ষমতার চাদরের মধ্যে থেকে সংখ্যালঘুদের জমিজমা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তাদের উৎখাত করার চেষ্টা করে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, টিপ নিয়ে যারা সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখালেন তারা এ ধরনের কোনো একটি ঘটনারও প্রতিকার করতে পারেন না। ক্ষমতাসীনদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে তারা কিছুই করার মুরোদ রাখেন না। উনারা খুব বেশি সক্ষমতা দেখাচ্ছেন দাড়ি-টুপিওয়ালা কনস্টেবল শ্রেণীর ক্ষমতাহীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চোটপাট দেখাতে।
[email protected]