ভারতের লোকসভা নির্বাচনে কারাগারে থেকেও জয় পেয়েছেন খালিস্তানপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অমৃত পাল সিং। তিনি পাঞ্জাবের খাদুর সাহিব আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েছিলেন। মঙ্গলবার প্রাথমিকভাবে প্রকাশিত বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, কংগ্রেস প্রার্থী কুলবীর সিং জিরাকে হারিয়ে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন।
অমৃত পাল সিং ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২০ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। তিনি ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ নামের সংগঠনের প্রধান। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঞ্জাবের খাদুর সাহিব লোকসভা আসন থেকে অমৃত পাল সিংয়ের বিজয় কেবল তাঁর জন্যই নয়, তাঁর ৪১ সহযোগীদের জন্যও স্বস্তির নিঃশ্বাসের মতো এসেছে, যারা রাজনৈতিক অস্পৃশ্যতা এবং বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। তারা এখন পাঞ্জাব ও আসামের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ছিলেন।
১৪ মাসেরও কম সময় আগে খালিস্তানপন্থি ওয়ারিস পাঞ্জাব দের প্রধান অমৃত পাল সিং একজন ওয়ান্টেড পলাতক ছিলেন। কারণ, রাজ্যটির আম আদমি পার্টির সরকার ও কেন্দ্রে থাকা বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ধরপাকড় শুরু করে। দুবাই থেকে ফেরার আট মাসের মধ্যে খালিস্তান নিয়ে সক্রিয়তা অমৃত পাল সিংকে জেলে নিয়ে যায়। দুবাইয়ে তিনি নিজ পরিবারের পরিবহন ব্যবসার দেখভাল করছিলেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে খালিস্তান প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি অমৃত পাল সিং। প্রচারণায় তিনি পাঞ্জবে মাদকাসক্তি ও শিখ বন্দিদের মুক্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ২০২৭ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে কিনা জানতে চাইলে অমৃত পাল সিংয়ের মা বলবিন্দর কৌর বলেন, এটি ‘সংগত’-এর ওপর নির্ভর করবে। ‘সংগত’কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খাদুর সাহিব থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তও সংগত নিয়েছিল।
সংগত মূলত শিখদের একটি পরিষদ। দুই মাসেরও কম সময় আগে গত ৮ এপ্রিল অমৃত পাল সিংয়ের মুক্তির জন্য চাপ দিতে তালওয়ান্ডি সাবোর তখত দমদমা সাহিব থেকে অকাল তখত পর্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি ধর্মীয় মিছিল বের হয়। মিছিলটি পণ্ড করতে পাঞ্জাব পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। গ্রেপ্তার করা হয়নি কাউকে।
২৫ এপ্রিল অমৃত পাল সিং অনেককে অবাক করে দিয়েছিলেন, যখন তিনি আসামের ডিব্রুগড়ের একটি কারাগারে ২ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরে বসে খাদুর সাহিব আসনের জন্য তাঁর প্রার্থিতা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে ওই কারাগারে বন্দি আছেন।
ওয়ারিস পাঞ্জাব দের গুরমিত সিং, পাপ্পলপ্রীত সিং, কুলবন্ত সিং, হারজিত সিং, বসন্ত সিং, ভগবন্ত সিং, সরবজিৎ সিং কালসি, গুরিন্দর পাল সিং এবং সরবজিৎ সিংকেও ডিব্রুগড়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। এ সংগঠনের আরও ৩২ জন কাপুরথালা, লুধিয়ানা এবং অমৃতসরের কারাগারে রয়েছেন।
সমকাল