জুলাই শহীদদের স্বপ্নের ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

logo

নয়া দিগন্ত অনলাইন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস |সংগৃহীত

জুলাই শহীদদের স্বপ্ন বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত এক ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (১৬ জুলাই) জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে দেয়া বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

জুলাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জুলাই শহীদরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের পথে দৃপ্ত পদভারে একযোগে সবাই এগিয়ে যাব- আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে যারা নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন তাদের স্মরণে প্রথমবারের মতো আজ বুধবার পালিত হচ্ছে জুলাই শহীদ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সরকার আজ এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।

এদিন সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশের মাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এছাড়াও দেশব্যাপী মসজিদে শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও শহীদদের শান্তির জন্য প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রথমবারের মতো আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘জুলাই শহীদ দিবস’। এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহীদকে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা বিলোপের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলিতে ও সন্ত্রাসীদের হামলায় এই দিনে চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকায় অন্তত ছয়জন শহীদ হন।

তিনি বলেন, ক্ষণজন্মা অকুতোভয় এই বীরদের আত্মদান আন্দোলনে তীব্র গতির সঞ্চার করে। প্রতিবাদে দেশজুড়ে রাজপথে নেমে আসে লাখো শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতা। আন্দোলনের তীব্রতার সঙ্গে বাড়তে থাকে শহীদদের সংখ্যা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্য ও কোটাবিরোধী আন্দোলন অচিরেই রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। সর্বস্তরের মানুষের দুর্বার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় স্বৈরাচার। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে হয় মুক্তির নতুন সূর্যোদয়।

শহীদদের স্মরণ ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কয়েকটি কল্যাণমূলক উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের কল্যাণে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদফতর’ এবং ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন করা হয়েছে। জুলাই শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত ও গেজেটে প্রকাশের কার্যক্রম চলমান আছে।

তিনি আরো জানান, প্রতিটি শহীদ পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা ও মাসিক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণেও একই রকম নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বাণীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আত্মদানকারী সব শহীদের রূহের মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।

সূত্র : ইউএনবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here