আওয়ামী লীগ ভোটে থাকতে পারবে না ধরে নিয়ে আসছে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী বলয় গড়ার চেষ্টা করছে একসময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামী। ধর্মভিত্তিক দলের জোট এবং অন্যদের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতার এ প্রচেষ্টা আটকাতে তৎপর বিএনপিও। জামায়াত যে দলগুলোর দিকে হাত বাড়াচ্ছে, বিএনপিও সেগুলোকে কাছে টানছে।
শেখ হাসিনার পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বিএনপির প্রকাশ্য বিরোধ ও জামায়াতের বন্ধুভাব থাকলেও দু’পক্ষই যোগাযোগ রাখছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র এবং নেতারা সমকালকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
‘বড়শি ফেলে’ জামায়াত সময় নিয়ে যাদের কাছে আনছে, বড় দল বিএনপি আসন এবং জাতীয় সরকারে জায়গা দেওয়ার ‘জাল ফেলে’ তাদের নিজের দিকে তুলে নিচ্ছে। ভোট-জোটের এমন প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে রাজনীতিতেও।
জামায়াত এবং চরমোনাইর পীরের ইসলামী আন্দোলনের দীর্ঘ আদর্শিক বিরোধ থাকলেও ২১ জানুয়ারি দু’দলের প্রধানের দেখা হয়। ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বরিশালের চরমোনাই গিয়ে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সাক্ষাৎ নতুন আলোচনার জন্ম দেয়।
বিএনপির একাধিক নেতা একে ‘স্বাধীনতাবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদের সহযোগীর মিলন’ আখ্যা দিয়ে কটাক্ষও করেন। তবে আজ সোমবার চরমোনাই পীরের সঙ্গে দেখা করতে দলটির কার্যালয়ে যাচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সাক্ষাৎ এমন সময়ে হচ্ছে, যখন চরমোনাই পীর জামায়াতসহ অন্য ধর্মভিত্তিক দল নিয়ে ইসলামী জোট গঠনে সক্রিয় হয়েছেন। চাঁদাবাজি, দখলের জন্য বিএনপি নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করছেন। বিএনপি শাসনামলের ব্যর্থতার ফিরিস্তি দিয়ে দলটি ক্ষমতায় যেতে মরিয়া বলে প্রকাশ্যে সমালোচনা করছেন।
যাদের নিয়ে জোটের চেষ্টা
মামুনুল হকের বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আবদুল বাসিত আযাদের খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে নিয়ে জোট গঠনের চেষ্টা করছে জামায়াত এবং ইসলামী আন্দোলন। অন্য দুই নিবন্ধিত ধর্মভিত্তিক দল ইসলামী ঐক্যজোট এবং খেলাফত আন্দোলন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল। তাই দল দুটিকে জোটে রাখা হবে না। কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সংশ্লিষ্ট অনিবন্ধিত নেজামে ইসলাম গত ১৮ ডিসেম্বর জামায়াত কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করেন। এর আগে আগস্টের বৈঠকে ছিল খেলাফত মজলিসসহ অন্য ধর্মভিত্তিক দল। ছিল না চরমোনাই পীরের দল।
বাংলাদেশ খেলাফতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন সমকালকে বলেন, আদর্শিক পার্থক্য থাকলেও ইসলামী দলগুলোকে এক নির্বাচনী মঞ্চে আনতে চেষ্টা চলছে। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, জমিয়ত, দুই খেলাফত একসঙ্গে আসতে কথা বলছে। সব দলই সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। তবে শুধু ইসলামী নয়, অন্য গণতান্ত্রিক এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর সঙ্গেও নির্বাচনী সমঝোতার আলাপ আছে।
দলগুলোর সূত্র জানিয়েছে, নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ, ১২ দলীয় জোটকে বৃহত্তর সমঝোতায় কাছে টানার চেষ্টা করেছে জামায়াত। গত ১৫ আগস্ট জামায়াতের মহানগর কার্যালয়ে যান ১২ দলীয় জোটের নেতারা। এ জোটে রয়েছে জাতীয় পার্টি (জাফর), জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ, বিকল্পধারার একাংশ, ইসলামী ঐক্য জোটের একাংশ, বাংলাদেশ জাতীয় দলসহ কয়েকটি দল।
জামায়াতের বড়শি কাটতে বিএনপির জাল
১২ দলীয় জোট ইতোমধ্যে বিএনপির দিকে ভিড়ে ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের কথা বলছে। জোটের সমন্বয়ক এবং জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাকে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে সহায়তায় স্থানীয় নেতাকর্মীকে চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি।
অন্তর্বর্তী সরকার এবং অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের ঘনিষ্ঠ একটি দলের নেতা সমকালকে বলেছেন, অন্য দলগুলো কাছে টানা এবং ধরে রাখার ক্ষমতা বিএনপিরই বেশি। বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে বিএনপির বিজয় প্রায় নিশ্চিত। ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, জয়ী হলে আন্দোলনের সঙ্গী দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার করবে। ভোটের মাঠে বিএনপির চেয়ে অনেক পিছিয়ে থাকা জামায়াত দলগুলোকে ৫ থেকে ১০ আসন ছাড়লেও বিএনপির কাছ থেকে একটি দুটি আসন পেলেও সংসদে যাওয়া অধিকতর নিশ্চিত । এ সমীকরণে দলগুলো জামায়াতের বদলে বিএনপির ডাকেই সাড়া দেবে।
ইতোমধ্যে এ বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা গেছে জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় থাকা খেলাফত মজলিসের অবস্থানে। দলটি ২২ জানুয়ারি বিএনপির আমন্ত্রণে গুলশান কার্যালয়ে যায়। দ্রুত নির্বাচনসহ সাত দাবিতে ঐকমত্য পোষণ করে। গত ২৯ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খেলাফতের সম্মেলনে যোগ দিয়ে জামায়াতের আমির বলেছিলেন, ইসলামী দলগুলোর মাথায় আর কেউ কাঁঠাল ভেঙে খেতে পারবে না।
খেলাফতের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, বিএনপির ডাকে বৈঠকে গেলেও ইসলামী দলগুলোর জোট গঠন প্রচেষ্টা থেকে সরে দাঁড়াইনি। বিএনপির সঙ্গে কথা হয়েছে জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে। আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর প্রতীক ভিন্ন হলেও প্রতি আসনে একক প্রার্থী রাখার চেষ্টা রয়েছে।
২০১৮ সালের নির্বাচনে খেলাফতকে দুটি আসন ছেড়েছিল বিএনপি। ২০২১ সালের মার্চে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় কর্মসূচিতে সহিংসতার মামলায় খেলাফত এবং জমিয়তের শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হন। ওই বছরের জুলাইয়ে খেলাফত মজলিস এবং জমিয়ত বিএনপির জোট ছাড়ার মাসখানেকের মধ্যে তাদের জামিন হয়। এতে স্পষ্ট হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের চাপেই বিএনপির জোট ছেড়েছিল দল দুটি। সংসদে যেতে বিএনপির সহযোগিতা প্রয়োজন– এ সমীকরণ থেকে পুরোনো মিত্রের সঙ্গে খেলাফত ফিরছে বলে রাজনৈতিক সূত্রের ভাষ্য।
৫ আগস্টের পর বিএনপির সমালোচক ছিল গণঅধিকার পরিষদ। দলটির সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতার কথা শোনা যাচ্ছিল। এ দলটিকেও পাশে টেনেছে বিএনপি। গণঅধিকার সভাপতি নুরকে পটুয়াখালী-৩ এবং সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ঝিনাইদহ-২ আসনে সহায়তা করতে অক্টোবরে বিএনপি চিঠি দেওয়ার পর অবস্থান বদলেছে। গণঅধিকারও দ্রুত নির্বাচন, জাতীয় সরকারের কথা বলছে। একটি দলের যুগ্ম মহাসচিব সমকালকে বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার মতো জোট করতে পারলে গণঅধিকারও আসবে।
বিএনপি ডাকছে মামুনুল হকের খেলাফতকেও। দলটি ২০০৬ সালে বিএনপির জোট ছাড়ে। স্বল্প সময় ছিল আওয়ামী লীগের মহাজোটেও। খেলাফতের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, গুলশান কার্যালয়ে বৈঠকের আমন্ত্রণ রয়েছে। ইসলামী দলগুলোর জোট গঠনে ভূমিকা রাখা খেলাফত এ আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান না করলেও এড়িয়ে যাচ্ছে।
এ নেতার ভাষ্য, নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে হলে একটি-দুটি আসনের জন্য বিএনপির কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ধর্মভিত্তিক দলগুলোর জোট ২০ শতাংশ ভোট পেতে সক্ষম। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না থাকলে, তা আরও বাড়তে পারে। তখন ইসলামী দলের নেতারা নিজের শক্তিতে যেতে পারবেন সংসদে। যদি সংস্কার প্রস্তাব অনুযায়ী সংসদে উচ্চকক্ষ হয়, তাতে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ইসলামী দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।
চরমোনাই পীরে কৌতূহল
বিএনপির জোটে না থাকায় আওয়ামী লীগ শাসনামলে অন্য ইসলামী দলের চেয়ে মুক্তভাবে সভা-সমাবেশ করতে পেরেছিল চরমোনাইর পীরের দল। বিএনপি ও অন্য বিরোধীরা বর্জন করলেও অংশ নিয়েছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে। আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের অদৃশ্য সমঝোতার গুঞ্জন ছিল। তবে দলটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেয়। জামায়াতের মতো এ দলটিরও ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বন্ধুভাব দেখা যাচ্ছে।
চরমোনাইর পীর গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ইসলামী দলের বৃহত্তর জোটের কথা বললেও তাঁর ভাই এবং দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম জামায়াতের সমালোচনা অব্যাহত রাখেন। দলীয়প্রধানের সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাতের পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বিএনপির বিরুদ্ধে সুর চড়া করে ইসলামী আন্দোলন। গত শনিবারই রেজাউল করীম বলেন, ‘৫ আগস্টের পর একটি দল ক্ষমতায় যেতে মরিয়া। বিএনপি নতুন করে আর কী দেখাবে। তারা যা করবে, তা এখন তো দেখছি’।
জোট গঠনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে সেদিন চরমোনাই পীর বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘দুটি ইসলামী দলের সৌজন্যে সাক্ষাতে অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। জনগণ ইসলামের পক্ষে একটি ভোট বাক্স চায়।’
ইসলামী আন্দোলন সূত্র জানিয়েছে, ২১ জানুয়ারি জামায়াত আমির সাক্ষাৎ করার পরপরই বিএনপি গুলশানের কার্যালয়ে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানায়। তবে চরমোনাই পীরের দল বিএনপিকেই ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে আসার আমন্ত্রণ জানায়। তা মেনে মির্জা ফখরুল আজ যাচ্ছেন।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুস আহমাদ সমকালকে বলেন, ইসলাম, দেশ এবং মানবতার পক্ষে যারা, তাদের সঙ্গে কাজে আপত্তি নেই। বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে। এতে ইসলামী জোট গঠন এগিয়ে নেওয়া থেমে থাকবে না।
গত কয়েক দিনে চাঁদাবাজি এবং অতীতের কথা টেনে বিএনপির সমালোচনার পর বৈঠক আগের অবস্থান থেকে সরে আসা কিনা– প্রশ্নে ইউনুস আহমাদ সমকালকে বলেন, ইসলামী আন্দোলন চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে বলছে। দেশের মানুষও বলছে। বিএনপি তো চাঁদাবাজির পক্ষে বলেনি।
ছাত্রদের দলে দৃষ্টি, অপ্রকাশ্য সমঝোতার আভাস
ছাত্র নেতৃত্বের সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির রাজনৈতিক দল ফেব্রুয়ারিতে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। এ দল ভোটের রাজনীতিতে কতটা প্রভাব রাখবে, এর ওপরও নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনের জোট। ছাত্রনেতারা প্রকাশ্যে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রশিবিরের সহযোগিতার কথা বলছেন। দুই সংগঠনেই এমন অনেক নেতা আছেন, যারা অতীতে শিবিরের রাজনীতি করেছেন। সেই তুলনায় ছাত্রদল, বিএনপির রাজনীতি করা আসা নেতাকর্মী সংখ্যায় কম। সংস্কারের পর নির্বাচন– ছাত্রদের এ অবস্থানকে সমর্থন করতে দেখা যাচ্ছে জামায়াতকে।
রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ, সংবিধান পুনর্লিখন এবং জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপির সঙ্গে ছাত্রদের প্রকাশ্য বিরোধ রয়েছে। নির্বাচন ও সংস্কার নিয়েও রয়েছে মতভেদ। ছাত্রনেতারা জুলাই গণহত্যার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বিচার এবং সংস্কারের পর নির্বাচনের কথা বলছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিএনপির তোলা প্রশ্ন, দ্রুত নির্বাচনের চাপকে ‘আওয়ামী লীগের সুর’ বলছেন ছাত্রনেতারা। সরকারে থাকা ছাত্র উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম তা প্রকাশ্যেই বলেছেন।
ছাত্রনেতারা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে চান না। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম প্রকাশ্যে ঘোষণায় জানিয়েছেন। জামায়াতের একজন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সমকালকে বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না থাকলে এক হিসাব, না থাকলে ভিন্ন। আওয়ামী লীগ না থাকলে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা বা জোটের সম্ভাবনা নেই। বরং বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার চেষ্টা করবে জামায়াত। ছাত্ররা যদি দল গঠনে সফল হয় এবং বিএনপির সঙ্গে যে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক থাকে, তবে ছাত্রদের সঙ্গে জামায়াতের জোট না হলেও অপ্রকাশ্য নির্বাচনী সহযোগিতার সম্পর্ক থাকবে।
বিএনপিও সঙ্গে ছাত্রদের যোগাযোগ রয়েছে। গত শনিবার রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিষ্কার করেছেন, ছাত্রদের দলকে স্বাগত জানান। তিনি বলেছেন, ‘অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি তাদের (ছাত্র) আচরণ বক্তব্য–মন্তব্য যদি ঝগড়াসুলভ অথবা প্রতিহিংসামূলক হয়, সেটিও জনগণের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত হবে।’
নানা ইস্যুতে প্রকাশ্য বিরোধ থাকলেও, বিএনপি নির্বাচনী সমঝোতার বার্তা দিয়েছে বলে সমকালকে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির একাধিক নেতা। গতকাল রোববার আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যেও তা স্পষ্ট। তিনি ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘বিএনপির সাথে ছাত্রনেতাদের দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয়।… বিএনপি ও ছাত্রনেতারা এমনকি নির্বাচনকেন্দ্রিক বৃহত্তর সমঝোতার বিষয়েও অনাগ্রহী নন (এর ধরন ও ফর্মুলা আলোচনা সাপেক্ষে)। তাই বিরোধের কোনো কারণ নেই। সবাইকে বরং বুঝতে হবে ঐক্য ছাড়া আমাদের বিকল্প নেই।’
ইসলামিক নয়, গণতান্ত্রিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা
বিএনপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী দলের জোট হলে আওয়ামী লীগ একে উগ্রবাদের উত্থান বলে দুনিয়ার কাছে দেখাবে অভিমত একাধিক দলের নেতার। তারা সমকালকে জানান, তাই বিএনপিও বিরোধী দল হিসেবে ইসলামী জোটকে চায় না। তাই ধর্মভিত্তিক নয়– এমন দলগুলোকে টানার চেষ্টা রয়েছে জোটের মধ্যপন্থি চেহারা দিতে। চরমোনাই পীর শনিবার জানান, শুধু ইসলামী নয়, সমমনা দলগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর জোট গঠনের কাজ চলছে।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের সমকালকে বলেন, কারও সঙ্গেই বিরোধ নেই। ইসলামী দলের জোটের আলাপ আছে। জোট কেমন হবে, তা নির্বাচনী আবহ শুরু হলে স্পষ্ট হবে। শুধু ইসলামী দল নয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির সঙ্গে ঐক্য চায় জামায়াত।
samakal