- ২৪ ডেস্ক
জামায়াতে ইসলামীকে কেবল একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং একটি ‘ইউনিভার্সাল ইউনিভার্সিটি’ বা আদর্শিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব ড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। ১৯ জুলাই, শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটির জাতীয় সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন। একই মঞ্চ থেকে তিনি দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল—আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—উভয়কেই হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রতারণা ও বঞ্চনার দায়ে অভিযুক্ত করেন।

‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বন্দী ছিলাম’
দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়কে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে ড. প্রামাণিক বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের কাছে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে ছিলাম।’ তর মতে, ১৯৫৪ সালে গঠনের দিন থেকেই আওয়ামী লীগ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকে অস্বীকার করে আসছে। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, ‘প্রতিনিধিত্বকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়েই আওয়ামী লীগ গঠন হয়েছে।’
একইভাবে বিএনপির শাসনামল নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি ২০০১ সালের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সে সময় ফেনীর একটি উপজেলায় প্রায় ২০০ হিন্দু নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে চারজন বিএনপি কর্মীর দ্বারা একজন আদিবাসী কিশোরী ধর্ষিত হলেও কোনো বিচার হয়নি।
দাবি এক দফা: পিআর সিস্টেম ও পৃথক নির্বাচন
দেশের বর্তমান চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও টেন্ডারবাজির পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. প্রামাণিক ভবিষ্যৎ নির্বাচনের জন্য দুটি সুস্পষ্ট দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য এক দফা পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু করতে হবে।
এই দাবিগুলোকে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘যদি এই দেশে পিআর সিস্টেম ছাড়া নির্বাচন হয় তাহলে আবার ফ্যাসিবাদ আসবে। আবার আপনাদের এই ফ্যাসিবাদ সরানোর জন্য জীবন দিতে হবে।’ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, পিআর পদ্ধতি ও পৃথক নির্বাচন ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না এবং ‘যদি জামায়াতে ইসলামী মনে করে, তাহলে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’
জামায়াতের আদর্শিক অবস্থানকে প্রশংসা
জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে উপস্থিতিকে যৌক্তিক হিসেবে তুলে ধরে গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, এই দলটি একটি আদর্শিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কর্মীরা ধর্মীয় নীতি ও আদর্শের শিক্ষা লাভ করেন। তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, জামায়াতের সঙ্গে থাকলে রাজনৈতিক ক্ষমতা না পেলেও জীবন ধন্য হবে, কারণ এখানে আদর্শিক শিক্ষা পাওয়া যায়।