২৮ জুলাই ২০২৩
আমার দেশ ডেস্ক
এবার শান্তিরক্ষা মিশনে র্যাবসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের নিষিদ্ধ করতে এবং বাংলাদেশকে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকে বহিষ্কার করার করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জাতিসংঘে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির ১৪ কংগ্রেসম্যান।
চিঠিতে শেখ হাসিনা সরকারের সন্ত্রাস, নির্যাতন ও বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস এবং রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসহ বিপুল সংখ্যক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ভয়ভীতি, হামলা, মিথ্যা কারাদন্ড, নির্যাতন, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড রয়েছে।
একই চিঠিতে তারা বাংলাদেশে জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা নিতে আহবান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কোন অংশ জাতিসংঘে কোন প্রস্তাব তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করলে তা জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এর মাধ্যমেই করা হয়ে থাকে। কূটনীতিকরা কংগ্রেসম্যানদের এ ধরনের চিঠি জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপনের প্রক্রিয়া বলে অভিহিত করেছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছেন যে বাংলাদেশ “সাংবাদিক এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীদের দীর্ঘায়িত বিচারের জন্য দোষী।”
চিঠিতে ২০২১ সালে র্যাবের সাবেক ডিজি ও পুলিশের সাবেক আইজি বেনজির আহমদসহ ৭ কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞাগুলি সরকারের সন্ত্রাসকে মন্থর করেনি।
সরকার বিরোধী সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভে হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। এতে বলা হয়, গত ৬ থেকে ৮ মাসে হাজার হাজার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। এই বিক্ষোভগুলি প্রায়ই সহিংসতা, নৃশংস হামলার সম্মুখীন হয়েছে। আমরা অত্যন্ত সন্দিহান যে হাসিনা সরকার সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের অনুমতি দেবে। এই কারণগুলির জন্য, এবং আরও অনেকগুলি দুর্নীতি, অত্যাচার, সহিংসতা এবং অপব্যবহার বন্ধে নিম্নে উল্লেখিত বিষয়গুলি কার্যকর করার জন্য অনুরোধ করছি:
এক. জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ অবিলম্বে স্থগিত করার জন্য ব্যবস্থা নিন। শেখ সরকারের বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্তের ব্যবস্থা নিন। বিশেষ করে সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তার সরকার যে সকল ব্যবস্থা নিয়েছে।
দুই. অস্থায়ীভাবে বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর যে কোন সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মোতায়েন করা বন্ধ রাখতে হবে।
তিন. জাতিসংঘ বিশ্বজুড়ে নিরপেক্ষ সরকারগুলির সাথে সমন্বয়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তত্ত্বাবধানে এবং পরিচালনায় অংশ নেবে। এতে ভোটারদের ভয়ভীতি, ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি, বা ভোটারদের উপর হামলা প্রতিরোধের জন্য শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করবে।
২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার লেখা এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কংগ্রেসম্যান বব গুড,অ্যানা পলিনা-লুনা, র্যালফ নরম্যান, টম পেরি, যশ ব্রেচেন, এন্ড্রু ক্লেড, এইলি ক্রেইন, পল এ গসার, রনি এল জ্যাকসন, ব্রইন বেবিন, করি মিলস, ডাগ লামাফা, র্যান্ডি ওয়েবার ও গ্লেন গ্রোথম্যান।