- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৩ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৬
যার কিনা একাদশে জায়গা নিয়েই ছিল সংশয়, সেই মোস্তাফিজই জেতালেন চেন্নাইকে! পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগালেন দারুণভাবে। অনবদ্য পারফরম্যান্সে যেমন মুগ্ধ করলেন সবাইকে, তেমনি জিতলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও। সব মিলিয়ে শুক্রবার আইপিএল ম্যাচে চেন্নাইয়ের হয়ে অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখলেন মোস্তাফিজ।
প্রথম দুই ওভারে মোস্তাফিজ যেন ছিলেন চোখের বিভ্রম। তার নামের পাশে ছিল তখন ৭ রানে ৪ উইকেট। উইকেট সংখ্যার চেয়েও আকর্ষণীয় ছিল উইকেটগুলোর নাম! ডু প্লেসিস, রজত পাতিদার, বিরাট কোহলি ও ক্যামেরন গ্রিন! পুরো ব্যাঙ্গালুরুকে যেন থামিয়ে দিয়েছিলেন এই ম্যাজিক ম্যান।
নিজের করা দ্বিতীয় বলে চার খেলেও পরের বলেই ফাফ ডু প্লেসিকে বিদায় করেন মোস্তাফিজ। ডিপ পয়েন্টে থাকা রাচিন রবীন্দ্র সহজ ক্যাচ লুফে নেয়ায় ৩৫ রান করেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। ওভারের শেষ বলে রজত পাতিদারকেও ফেরান মোস্তাফিজ। ব্যাটে বল চুমু খেয়ে ঠাঁই নেয় ধোনির গ্লাভসে।
অথচ মোস্তাফিজকে অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড় যখন বোলিংয়ে আনেন, বেঙ্গালুরু রীতিমতো উড়ছিল। ৪ ওভারে বেঙ্গালুরুর রান তখন বিনা উইকেটে ৩৭। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান তিনি দিয়েছেন দারুণভাবে। তবে দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার পরও মোস্তাফিজকে বোলিং থেকে সরিয়ে নেন রুতুরাজ।
পরে ইনিংসের ১২তম ওভারে তাকে আবার ফিরিয়ে আনেন অধিনায়ক। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই থিতু হওয়া কোহলিকে সাজঘরে পাঠান তিনি। আজিঙ্কা রাহানে এবং রাচিন মিলে টিকিটাকা ক্যাচ নিলে কোহলিকে ফেরে ২১ রানে। এক বল পর ক্যামেরন গ্রিনকেও নিজের শিকার বানান মোস্তাফিজ।
জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হোন এই অজি তারকা। আউট হবার আগে করেন ২২ বলে ১৮ রান। সব মিলিয়ে নিজের প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ। সেই সাথে সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে আইপিএলে স্পর্শ করেন ৫০ উইকেটের মাইলফলক।
শেষ ওভারটা অবশ্য আশানুরূপ ছিল না। ১৬ রান আসে এই ওভার থেকে। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ৪ উইকেট নেন মোস্তাফিজ ২৯ রানে। যা তার আইপিএল সেরা বোলিং। এরপরও দিনেশ কার্তিক ও আনুজ রাওয়াতের দারুণ জুটিতে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান তুলে বিরাট কোহলির দল। রাওয়াত ২৫ বলে ৪৮ ও কার্তিক করেন ২৬ বলে ৩৮ রান।
লক্ষ্য তাড়ায় বড় জয় পেয়েছে চেন্নাই। আইপিএলের উদ্বোধনী ব্যাঙ্গালুরুকে হারিয়েছে ৬ উইকেটে। ১৭৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৪ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন রুতুরাজ ও রাচিন রবীন্দ্র। অধিনায়ক রুতুরাজ ১৫ রান করে ফিরে গেলেও ১৫ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন রবীন্দ্র।
এরপর অজিঙ্কা রাহানে ও ড্যারিল মিচেলও রানের চাকা সচল রাখেন। যদিও ইনিংস বড় করতে পারেনি তাদের কেউ। রাহানে করেন ১৯ বলে ২৭ আর মিচেল আউট হন ১৮ বলে ২২ করে। এরপর বাকি কাজটা সেরেছেন রবীন্দ্র জাদেজা ও শিবম দুবে। জাদেযা ১৭ বলে ২৫ ও দুবে করেন ২৮ বলে ৩৪ রান।
ম্যাচ শেষে মোস্তাফিজুর রহমানকে ম্যাচ সেরা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পুরস্কার হিসেবে পান এক লাখ রুপি। তাছাড়া জেতেন ফ্যান্টাসি প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কারও। এখান থেকেও পান এক লাখ রুপি। এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালেও হায়দবাদের হয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন মোস্তাফিজ।