চার বছর পর বুঝতে পেরেছেন বিএনপি’র হারুন

 আমার দেশ
২২ ডিসেম্বর ২০২২

পদত্যাগের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হারুন অর রশিদ

পদত্যাগের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হারুন অর রশিদ

নিজস্ব প্রতিনিধি

দীর্ঘ চার বছর আওয়ামী সংসদকে বৈধতা দিতে সংসদের প্রতিটি অধিবেশনে যোগ দেওয়া হরুন অর রশিদ বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) পদত্যাগ করেছেন।

পদত্যাগের পর প্রতিক্রিয়ায় হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সংসদ মহাজোটের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে।

বর্তমান সংসদ মহাজোটের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে, এটা বুঝতে চার বছর লেগেছে বিএনপি’র এ নেতার। অথচ, তাঁর ভাষায় মহাজোটের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হওয়া সংসদে চার বছর ধরে প্রতিটি প্রসিডিংস-এ অংশ নিয়েছেন তিনি নিজেই।

বৃহস্পতিবার আওয়ামী স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তাঁর পদত্যাগের মধ্য দিয়ে বিএনপির দলীয় সব সংসদ সদস্যের পদত্যাগ নিশ্চিত হয়েছে। এ সময় তার সাথে ছিলেন সদ্য পদত্যাগ করা সাবেক সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন ও জি এম সিরাজ।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার অধীনে একটি সাজানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের আগের রাতেই ব্যালটে সীল দিয়ে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করে রাখার অভিযোগ উঠে ভোটের দিন। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেয় দলটির বিজয়ী ৬ জন শপথ নেবেন না। কিন্তু স্থায়ী কমিটির এই সিদ্ধান্তে অনড় থাকা সম্ভব হয়নি। শপথের জন্য নির্ধারিত সময়ের শেষ দিনে বিএনপি’র সদস্যরা শপথ নিয়ে এই সংসদে যোগ দেয়। এতে শেখ হাসিনার অধীনে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদটি অনেকটা বৈধতা পেয়ে যায়। পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্তে একজন মহিলা সদস্যও মনোনয়ন দেওয়া হয়। এতে দলীয়ভাবে বিএনপি এই সংসদের প্রসিডিংসে পুরোপুরি অংশ গ্রহণ করেন। চার বছর পর পদত্যাগ করেছেন বিএনপি’র ৭ সদস্য।

পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার পর হারুন বলেন, বর্তমান সংসদকে অবিলম্বে বিলুপ্ত করার দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, সংসদ বিলুপ্ত করে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।

মহাজোটের শরীকদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়, বিএনপি ও তার জোট আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে দেশে কোনো অর্থবহ নির্বাচন হবে না।

এর আগে, ১১ই ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন বিএনপির ছয়জন সদস্য। সেদিন বিএনপির সাত সংসদ সদস্য পদত্যাগপত্র জমা দিলেও এমপি হারুন বিদেশে থাকায় তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি স্পিকার।

ওই সময় স্পিকার বলেছিলেন, এমপি হারুনুর রশিদ বিদেশে থাকায় অনুপস্থিত রয়েছেন। ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগ পত্র দেয়ায় হারুনুর রশীদের আবেদন গ্রহণ হবে না। তাকে পরে এসে জমা দিতে হবে। এরই ফলে আজ সশরীরে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিলেন এমপি হারুন।

গত ১০ই ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আয়োজিত সমাবেশ থেকে ই-মেইল-যোগে স্পিকারের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠান বিএনপির সাত এমপি। তারা হলেন আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), হারুন অর রশীদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩), মোশাররফ হোসেন (বগুড়া-৪), জি এম সিরাজ (বগুড়া-৭), আব্দুস সাত্তার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) ও রুমিন ফারহানা (সংরক্ষিত নারী আসন)।

এরপর ১১ই ডিসেম্বর দুপুরে শূন্য ঘোষিত ওই ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটির সদস্য সশরীরে গিয়ে স্পিকারের কাছে ছয়জনের পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এমপি হারুন ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠানোয় ওই দিন তার আবেদন গ্রহণ করেননি স্পিকার।