টেকনাফ, কক্সবাজার
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় হ্নীলা থেকে অপহৃত আবদুস সালাম নামের আরও এক কৃষক মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বুধবার বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে পাহাড় থেকে তিনি নিজ বাড়িতে আসেন।
আবদুস সালাম টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। গত মঙ্গলবার রাত আটটায় ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসেন অপর তিন কৃষক। তাঁরা হলেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে আবদুর রহমান, রাজা মিয়ার ছেলে মুহিব উল্লাহ ও ফজলুল করিমের ছেলে আবদুল হাকিম।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, অপহৃত আবদুস সালামের পরিবারের সদস্যরা তাঁর পরিবারে ফিরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিন লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মুক্তিপণের টাকা কার হাতে, কীভাবে পরিশোধ করেছেন, তা কোনোভাবেই প্রকাশ করছেন না পরিবারের লোকজন।
তাঁরা কী কারণে তথ্য দিচ্ছেন না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে খেত-খামার করে জীবিকা নির্বাহ করেন আবদুস সালাম ও তাঁর স্বজনেরা। আবারও অপহরণ কিংবা হামলার হুমকির ভয়ে হয়তো তাঁরা তথ্য দিচ্ছেন না। এলাকাবাসী পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতায় আতঙ্কে আছেন। ফিরে আসা আবদুস সালামকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। তিনি আহত ও ক্ষুধার্ত থাকায় কোনো কথা বলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, মুক্তিপণের বিষয়টি পুলিশ জানে না। এমনকি ঘটনার পর থেকে চারজন কৃষকের পরিবার কোনো ধরনের অভিযোগ পুলিশের কাছে দেয়নি। তবে পুলিশ ঘটনার পর উদ্ধার অভিযান চালাতে দিন-রাত কাজ করেছে। হয়তো পুলিশের তৎপরতার কারণে একে একে চারজনকে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা।
৭ জানুয়ারি ভোরে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় খেতে পাহারা অবস্থায় চার কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায় একটি চক্র। পরে মুঠোফোনের মাধ্যমে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।
অপহৃত কৃষকদের পরিবারের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অপহৃত চারজন কৃষকই মুক্তিপণের টাকা পরিশোধের পর ছাড়া পেয়েছেন। নগদ টাকা তাঁরা হাতে নিয়ে পাহাড়ের একটু ভেতরে গিয়ে অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের হাতে দিয়েছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে তাঁরা রাজি হননি।