গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে: জ্বালানি উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার

(১ ঘন্টা আগে) ২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৭:১১ অপরাহ্ন

mzamin

facebook sharing button

গরমে লোডশেডিং সীমিত রাখতে সরকার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি জানান, এজন্য বাড়তি এলএনজি ও পর্যাপ্ত কয়লাসহ অন্য জ্বালানি আনার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রজেকশনে আছে ১৮ হাজার মেগাওয়াট। আমরা আশা করছি, অনেকটা ম্যানেজ করতে পারবো। লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।

শনিবার দুপুরে বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত ‘জ্বালানি সংকট উত্তরণের পথ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের (এফইআরবি) চেয়ারম্যান মো. শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী পরিচালক সেরাজুল ইসলাম সিরাজের সঞ্চালনায় সেমিনারে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন।

বিদ্যুৎ উপদেষ্টা আরও বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এবার সহনীয় থাকবে। গ্রাম-শহরে বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো বৈষম্য থাকবে না। রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ক্রাইসিস বললেই রাজনীতিবিদদের সুবিধা হয়। ক্রাইসিস বলেই রেন্টার-কুইক রেন্টাল হয়েছে। ক্রাইসিসকে অনেকে সুবিধা হিসেবে নেয়।

সাংবাদিকদের সহানুভূতিশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফাওজুল কবির বলেন, অনেকে সংবাদ করছে ভয়াবহ লোডশেডিং হচ্ছে। কিন্তু দেশে সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয়েছে ২৪শে এপ্রিল ১৩৯ মেগাওয়াট। মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকলে লোডশেডিং হয়। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জায়গায় ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়। এতে মেরামতে একটু সময় লাগে। কিন্তু সেটা লোডশেডিং নয়।

তিনি আরও বলেন, গ্রাম ও শহরের মধ্যে সমন্বয় থাকবে। জ্বালানি আমদানি করতে পারবো। আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখতে হবে। উপদেষ্টা বলেন, এটা স্বল্পমেয়াদের সরকার। জ্বালানির সব কিছুতে অনেক সময় লাগে। এমন কিছু আমরা হাতে নেই না যা আমরা করতে পারবো না। আমরা অগ্রাধিকার নিয়েছি বকেয়া পরিশোধের। বিল পেমেন্ট না করলে কোন দেশ ব্যবসা করবে!
তিনি বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে সিস্টেম লস কমে আসবে। লাইন লিকেজ ছিল সেগুলো ঠিক করা হচ্ছে। গ্যাস চুরির বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আমরা এলএনজি আমদানি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে এনেছি। তবে আগামী বছর তো বকেয়া দিতে হবে না। শুধু কারেন্ট পেমেন্ট দিতে হবে। আগামী বছর ভর্তুকি বাড়বে না বরং কমবে। আমরা গহ্বরে পড়েছিলাম সেখান থেকে উঠে আসার চেষ্টা করছি।
সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে তিনি বলেন, বিটে কেউ অংশ নেয়নি, মিনিস্ট্রিতে ফাইনাল অ্যাপ্রুভ হলে পুনরায় রি-টেন্ডার করা হবে। জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ বিইআরসিকে দেয়া হচ্ছে না কেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চিন্তা করছি, মন্ত্রণালয় আছে, কারণ তেলের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যায়। আবার আপনারাই বলতে পারেন তেলের দাম কমছে না কেন! এটার জন্য প্রতিবেশী দেশের দাম আর ভর্তুকির বিষয় থাকে।

সেমিনারে ক্যাব’র জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি সুবিচার সংকট কেবল একটি কারিগরি সমস্যা নয়-এটি অধিকার, সাম্য ও সুশাসন ব্যবস্থার প্রশ্ন। তিনি বলেন, জ্বালানির সুবিচার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। বাংলাদেশকে এখন একটি সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেও তিনি মনে করেন।

সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জ্বালানির জন্য নতুন নীতিমালা দাবি করে বলেন, আমরা কোনোভাবে এলএনজিকে উৎসাহিত করতে পারি না। দেশে গ্যাস অবিষ্কারের প্রতি নজর দেয়ার জন্য তাগিদ দেন এই গবেষক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here