গণ-আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান মির্জা ফখরুলের

logo

স্টাফ রিপোর্টার

১১ আগস্ট ২০২২

7

সরকার পতনের দাবিতে আগামীতে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে দলের নেতাকর্মী ও সমমনা দলগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিভাবে এই দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অনেকেই বলে আওয়ামী লীগ একটি ফোর টোয়েন্টি পার্টি। আমি এই কথার সঙ্গে একমত। আমি এর সঙ্গে যোগ করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ একটা প্রতারক দল। দেশের বিচার বিভাগকে এই সরকার দলীয়করণ করেছে। এই দেশের সংবিধানকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছিলো আমাদের সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটা নির্বাচন হয়েছে। প্রত্যেকটি নির্বাচনই অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়েছে।

কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে তারা বাতিল করেছে। সেই দিন থেকেই এই দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে। এতে ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ ঘিরে দুপুরের পর নয়া পল্টন এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। হাজারো নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে সকাল থেকেই সমাবেশে আসতে থাকেন। দপুরের দিকে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশ বন্ধ হয়ে যায়। পুরো এলাকায় অবস্থান নেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ সময় নেতাকর্মীরা জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। 

এদিকে সমাবেশ ঘিরে যে কোনো ধরনের নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে ছিলো পুলিশ। সমাবেশস্থল ও আশেপাশের এলাকায় মোতায়েন ছিলো বাড়তি পুলিশ সদস্য। প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো প্রিজন ভ্যান, জলকামান ও সাজোয়া যান। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ হলেও সমাবেশে আসার সময় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে বলতে চাই, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নতুন নির্বাচন দিয়ে সংসদ গঠন করতে হবে।
দলের নেতাকর্মীদের রাজপথ দখলের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের রাজপথ দখল করতে হবে। রাজপথে দখল করে গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, তরুণ সমাজই দেশকে স্বাধীন করেছে। আমরা যখন তরুণ ছিলাম, যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছি। আজ আবারও এ তরুণ সমাজকে জেগে উঠতে হবে। তরুণদের নতুন করে দেশ স্বাধীন করতে হবে। সেই স্বাধীনতা হবে আমাদের গণতন্ত্রের।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সংগ্রাম শুরু হয়েছে, লড়াই শুরু হয়েছে। এ লড়াই আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই। এ লড়াই বিএনপির নয়, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বাঁচা মরার লড়াই। আমাদের লড়াইয়ে শরিক হতে হবে, ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিস্ট, দানবীয়, মাফিয়া সরকারকে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।