পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে কি না সেটা নিয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। এসব কখনোই আমাদের আগে থেকে জানানো হয়না। আমরা আশা করছি, আমেরিকার শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা এসব করবে না।”
সোমবার (২২ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাতার সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।
নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ওই দৈনিকের প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে মোমেন বলেন, “ওরা মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। খুবই অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর। কোনো রেফারেন্সও দেয়নি।”
“রিপোর্টে বলা হয়েছে আমি মন্ত্রী হওয়ার আগে চাইনিজ লবিস্ট হিসেবে কাজ করেছি বলেছে। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। আমি কোনোদিন কোনো চাইনিজ কোম্পানিতে কাজ করিনি এবং লবিস্ট ছিলাম না। বরং বলতে পারেন আমি সারাজীবন আমেরিকাতে ছিলাম। খুব অদ্ভুত। তারা জেনেশুনে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে,” বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিবিদরা অনেক কিছু বলেন যাতে অন্যান্য দেশের জন্য একটা সতর্কবার্তা থাকে।
“সেটার আক্ষরিক অর্থ কী সেটা আমি বলতে পারব না। তবে আমি বলতে পারি, এটা হচ্ছে ইঙ্গিত যে বাংলাদেশ বিজয়ের জাতি। আমরা ফেলে দেওয়ার মতো দেশ না,” বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা মোটামুটিভাবে আগের মতো দারিদ্রক্লিষ্ট নই, দানের ওপর থাকি না। জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব আছে। আমাদের একটা পজিশন আছে। আমরা বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ থেকে বিজয় অর্জন করেছি।”
“কেউ চোখ রাঙালে সরকার ভড়কিয়ে যাবে না,” বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
যুক্তরাজ্য সফরকালে বিবিসির সাথে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করেন। দেশটি তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সেই পক্ষপাতিত্বের প্রতিফলন হিসেবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিক্ষোভ সংশ্লিষ্ট সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন দূতাবাস
রোববার বাংলাদেশে আমেরিকান দূতাবাসের জারি করা একটি সতর্কতা বিজ্ঞপ্তিতে আমেরিকান নাগরিকদের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিক্ষোভের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলায় দুঃখ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এটা দুঃখজনক যে জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে আমেরিকান দূতাবাস এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। “মার্কিন মল বা স্কুল বা বারে যাওয়ার সময় সতর্ক থাকার কথা বলা উচিত মানুষকে,” বলেন তিনি।
“আমাদের দেশে কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনা। বিক্ষোভের সময় মানুষ মারা যায় না। সড়কে নৃশংসতায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় শূন্য। তাহলে কেন এমন সতর্কতা জারি করা হলো?”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “আগামী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে বা সে মাসেই নির্বাচিত বলে আশা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশ ও অন্যান্য নির্বাচন-সম্পর্কিত কার্যক্রম ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। সাধারণ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় কিছুদিন পরপর জোরালোভাবে রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হতে পারে।”
“মার্কিন নাগরিকদের এসময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং লক্ষ্য রাখা উচিত যে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভগুলোও সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। আপনাদের এ সময় বিক্ষোভ এড়ানো উচিত এবং যেকোনো বড় সমাবেশের আশেপাশে থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত,” বলা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।