ক্ষমতাসীনেরা দখলদারির নজির সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেছেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমসহ গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্পূর্ণভাবে দখল করেছে। ওদের দখলদারি সর্বব্যাপী, দখলদারির নজির সৃষ্টি করা হয়েছে।’
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে নাগরিক অধিকার আন্দোলন নামে একটি সংগঠন এই বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করে।
সেলিমা রহমান বলেন, ‘আজকে জনগণ দেখছে ওদের (সরকার) দখলদারি। কীভাবে একজন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান দখল করা হচ্ছে। তাঁকে তো হেনস্তা করেছেই, এখন তাঁর টেলিকম…গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্পূর্ণভাবে দখল করেছে। ওদের দখলদারি সর্বব্যাপী, দখলদারির ওরা নজির সৃষ্টি করেছে।’
সেলিমা রহমান বলেন, ‘শুধু তা–ই নয়, ওরা ধর্ষণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আপনারা দেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা। প্রতিদিন খবরের কাগজে দেখছেন মহিলারা কীভাবে নিপীড়িত-লাঞ্ছিত হচ্ছে। এই বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছে আমাদের মায়েরা। মায়ের সন্তানেরা যুদ্ধ করেছে…কাজেই এ দেশে মায়ের সম্মান সবচেয়ে বড়। আজকে সেই মায়ের কোনো সম্মান থাকছে না।’
এর কোনো প্রতিকার নেই বলে উল্লেখ করে সেলিমা রহমান বলেন, ‘প্রতিটি জায়গায় অনিয়ম। পুলিশের কাছে যান কথা বলবে না, র্যাবের কাছে যান কথা বলবে না। কোথাও আপনি বিচার পাবেন না…বিচার ওরা করবে না।’
দ্রব্যমূল্যের আগুনছোঁয়া দাম বলে অভিযোগ করেন সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা আজকে অসহায় হয়ে গেছি, জিনিসপত্রের দাম আগুনছোঁয়া। সরকার প্রতিদিন বলছে, জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে। আমি বলছি, তাদের সিন্ডিকেট দাম কমাবে না এবং তারা সিন্ডিকেটকে কিছু বলবে না।’
এ অবস্থার উত্তরণে জনগণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আর কোনো স্লোগান নয়, রাজপথে দাবি নিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
গ্রামীণ টেলিকম ভবন দখল করার কথা জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘ড. ইউনূস নিজেই বলছেন যে ভাই, আমি পুলিশকে ফোন করছি, কোনো সাহায্য পাচ্ছি না। ইউনূসের পক্ষে বিশ্বের প্রায় তিন শ গণমান্য ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন, তাঁর যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে আমি আর আপনি কোথায় আছি বাংলাদেশে?’
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দ্রব্যমূল্য কমে যাবে। মিথ্যা কথা বলার জন্য কাউকে যদি নোবেল পুরস্কার দেন, তাহলে বাংলাদেশের এই অবৈধ সরকারকে দেওয়া উচিত। যত দিন এই সরকার আছে, আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যে পর্যায়ে নিয়ে গেছে, তাতে এ দেশের মানুষ বিপদে পড়ে যাবে। কারণ, এই দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের মাধ্যমে কখনো মূল্যস্ফীতি কমবে না।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী, নাদিয়া পাঠান, কৃষক দলের ইব্রাহিম, আবদুল্লাহহিল বাকি, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান, মৎস্যজীবী দলের ইসমাইল হোসেন, সাংবাদিক রাশেদুল হক প্রমুখ।
prothom alo