বড় আশা দেখিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। তাকে ঘিরে দিন বদলের স্বপ্ন বুনছিল সমর্থকেরা। তবে সেই স্বপ্নে গুড়ে বালি পড়ে দ্রুতই, মাত্র নয় মাসেই শেষ হয় তার বিসিবি অধ্যায়।
নানা অভিযোগ আর সহকর্মীদের অনাস্থার কারণে তাকে বিসিবির পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তবে ফারুকের এমন বিদায় ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
অবশ্য ফারুককে বিসিবি’তে নিয়োগ দেয়া আবার সরিয়ে দেয়ার পেছনে ছিল ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের হাত। তবে ঠিক কী কারণে ফারুকের ওপর আস্থা হারালেন আসিফ, তা এতোদিন জানা যায়নি।
তবে সম্প্রতি নিউইয়র্কভিত্তিক টেলিভিশন ঠিকানা টিভি’র প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের সঞ্চালনায় এক টকশোতে প্রসঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেন আসিফ। জানান বেশি ‘লোভ’ করাই কাল হয়েছে ফারুক আহমেদের।
স্পষ্টই বলেন, ক্রিকেট উন্নয়নের চেয়ে আসন্ন বিসিবি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কৌশল নিয়েই বেশি মনোযোগ ছিল ফারুক আহমেদের। এ কারণেই তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আসিফ বলেন, ‘ফারুক ভাইকে আমরাই নিয়েছিলাম। ক্রিকেটের স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা বলেই তাকে দায়িত্বটা দেয়া হয়। এনএসসির কোটায় তাকে পরিচালক করা হয়েছিল, পরে তিনি বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন।’
‘কিন্তু বোর্ডের নয়জন ডিরেক্টরের মাঝে আটজন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন ফারুক স্বেচ্ছাচারিতা করছেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। আবার গত বিপিএল আয়োজন করতে গিয়ে কী হয়েছে সেটাও আপনারা দেখেছেন।’
বিপিএল বিতর্ক মুক্ত করতে না পারার ব্যর্থতাই যে কাল হয়েছে ফারুকের, তা স্পষ্ট করেন আসিফ মাহমুদ। বলেন, ‘বিপিএল নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে একটা অনুসন্ধান কমিটি করা হয়। সেই কমিটির রিপোর্ট তাকে সরানোর ক্ষেত্রে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।’
‘মন্ত্রণালয় থেকে তাকে আগেই বলা হয়েছিল রাজশাহী ও চট্টগ্রাম টিম পরিচালনার মতো দক্ষ নয়। কিন্তু দিনশেষে সেটাই হয়েছে। তারা প্লেয়ারদের পারিশ্রমিক দিতে পারেনি। দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের মান ক্ষুন্ন হয়েছে। এগুলোকে কি আপনি ব্যর্থতা বলবেন না?’
তবে এরপর ফারুক আহমেদকে নিয়ে রীতিমতো বোমা ফাঁটান আসিফ মাহমুদ। জানান, ‘ক্রিকেটের চেয়ে কিভাবে পরবর্তী নির্বাচনে বিসিবি সভাপতি হয়ে আসা যায় তিনি সেজন্য ক্লাব কিভাবে পক্ষে নেয়া যায় আর বিজনেসের দিকেই তার আগ্রহটা বেশি।’
‘অবশ্য আমরা গঠনতন্ত্রের বাইরে কিছুই করিনি। মন্ত্রণালয় চাইলে এনএসসি’র মনোনয়ন উইথড্র করতে পারে। আমরা সেটাই করেছি এবং নতুন একজনকে মনোনয়ন দিয়েছি। যিনি এখন বিসিবি প্রেসিডেন্ট।’