‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণ করে ডলারের বাজার স্থিতিশীল করতে পারেনি কোনো দেশ

দেশে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল করতে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের জুনের মধ্যেই এ নীতি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে, ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণ করা হলে ডলার সংকট কেটে যাবে। বিনিময় হারজনিত অস্থিরতাও হ্রাস পাবে। যদিও বিভিন্ন দেশের বাস্তব অভিজ্ঞতা দিচ্ছে ভিন্ন তথ্য। অর্থনৈতিক সংকটের মুহূর্তে এ নীতি অনুসরণ করে কোনো দেশই এখন পর্যন্ত সাফল্য পায়নি। বরং তা প্রয়োগ করতে গিয়ে অনেক দেশের মুদ্রা ব্যবস্থাপনাই ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

‘ক্রলিং পেগ’ হলো কোনো দেশের স্থানীয় মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয়ের একটি পদ্ধতি। এটি অনেকটা নিয়ন্ত্রিত নীতিরই অনুকরণ। এ নীতির মৌলিকত্ব হলো কোনো মুদ্রার বিনিময় হারকে নির্দিষ্ট একটি সীমার মধ্যে ওঠানামার অনুমতি দেয়া। অর্থাৎ কোনো দেশে ডলারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্য কত হবে সেটির একটি রেঞ্জ ঠিক করে দেয়া। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও বিনিময় হারজনিত অস্থিরতা তৈরি হলে এ সীমা ঘন ঘন সমন্বয় করা হয়। নিয়ন্ত্রিত বা বেঁধে দেয়া বিনিময় হার থেকে উন্মুক্ত বাজারদরে প্রবেশের আগের ধাপটিই মূলত ‘ক্রলিং পেগ’।

বিনিময় হারের অস্থিরতা দূর করতে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণ করা দেশগুলোর একটি আর্জেন্টিনা। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, স্থানীয় মুদ্রার রেকর্ড অবমূল্যায়নসহ নানা সংকটে অনেকটাই ডুবে গেছে লাতিন আমেরিকার দেশটির অর্থনীতি। আর এ সংকটের সূত্রপাত বিদেশী ঋণ অব্যবস্থাপনা থেকে। বিনিময় হারের অস্থিরতার কারণে দেশটির ব্যাংক খাতের সঙ্গে কালোবাজারে ডলারের মূল্যের ব্যবধান দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। এ অবস্থায় বেঁধে দেয়া দর থেকে গত বছরের আগস্টে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি গ্রহণ করে আর্জেন্টিনা।

আর্জেন্টিনায় পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল মাত্র ৩৭ পেসো। এর পর থেকেই দেশটির অর্থনীতিতে বিনিময় হার নিয়ে অস্থিরতা চলছে। গত এক বছরে এ সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করে। পেসোর ধারাবাহিক অবমূল্যায়নের পরও ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি প্রতি ডলারের বিপরীতে ১৮৩ পেসো পাওয়া যেত। কিন্তু দেশটির খুচরা ও কালোবাজারে প্রতি ডলারের বিপরীতে পাওয়া যেত প্রায় দ্বিগুণ অর্থ। এ অবস্থায় ডলারের বিনিময় হারকে পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে না দিয়ে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি গ্রহণ করে আর্জেন্টিনা। গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি এ নীতি অনুসরণ করে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ৩৫০ থেকে ৩৫৫ পেসো নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতি মাসে মুদ্রাটির অবমূল্যায়ন ধরা হয় সর্বোচ্চ ২ শতাংশ।

যদিও তিন মাস না যেতেই ক্রলিং পেগ নীতি পুরোপুরি মুখ থুবড়ে পড়ে। ব্যাংক খাতের সঙ্গে কালোবাজারে ডলারের দামের ব্যবধান আরো বেড়ে যায়। এ অবস্থায় গত ডিসেম্বরে এসে পেসোর বিনিময় হার এক সঙ্গে ৫০ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটানো হয়। প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়ায় ৮০০ পেসোয়। এর পরও বাজার পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়নি। বর্তমানে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ৮১৮ পেসো ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশেও গত দুই বছর ডলারের বিনিময় হার নিয়ে অস্থিরতা চলছে। এ সময়ে মার্কিন মুদ্রাটির বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। তার পরও দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল হয়নি। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দর ১১০ টাকা। যদিও এ দামে ব্যাংক কিংবা কার্ব মার্কেট (খুচরা বাজার) কোথায়ও ডলার মিলছে না। এ দুই বাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্যের ব্যবধান ১০-১৫ টাকা। এ অবস্থায় দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহের একটি বড় অংশ অবৈধ হুন্ডির নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। রফতানি আয়ের একটি অংশও ব্যাংকিং চ্যানেলে না এসে আসছে হুন্ডির মাধ্যমে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও এখন হুন্ডি কারবারিরা ভূমিকা রাখছে। উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফির মতো বৈধ লেনদেনও হুন্ডিতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ), আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিশ্বের বৃহৎ ও সুপ্রতিষ্ঠিত অর্থনীতির কোনো দেশেই বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে এখন ‘ক্রলিং পেগ’ নীতির চর্চা নেই। নিকারাগুয়া, বতসোয়ানা, একুয়েডর, উরুগুয়ে, কোস্টারিকা, ভিয়েতনাম, আর্জেন্টিনাসহ কিছু দেশ কেবল এ নীতি অনুসরণ করছে। এরই মধ্যে আবার অনেক দেশ এটি থেকে বের হয়েও এসেছে। সম্প্রতি এ নীতি অনুসরণের ঘোষণা দিয়েছে নাইজেরিয়া। দেশটির স্থানীয় মুদ্রা ‘নাইজেরিয়ান নাইরা’-এর বিনিময় হার নিয়ে অস্থিরতা চলছে। ব্যাংক খাতের সঙ্গে কালোবাজারে নাইরার বিনিময় হার প্রায় দ্বিগুণ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার সময়ে কোনো দেশে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণ করা হলে সেটির ফল পাওয়া যায়। কিন্তু কোনো দেশের রিজার্ভ দুর্বল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিনিময় হারের অস্থিরতা বেড়ে গেলে এবং একই সঙ্গে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলমান থাকলে সেখানে এ নীতি কাজ করে না। বরং এটি বিনিময় হারের অস্থিরতাকে আরো উসকে দেয়। পাশাপাশি হুন্ডির বাজারকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তুলতে ভূমিকা রাখে।

এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ক্রলিং পেগ নীতিটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীল সময়ের চর্চা। এ নীতিতেও বিনিময় হারকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। ডলারের সংকট বিদ্যমান অবস্থায় থাকলে ক্রলিং পেগ কিছুটা সুফল দিতে পারে। কিন্তু সংকট বেড়ে গেলে এ নীতির অনুসরণ কোনো কাজে আসবে না।’

‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণ করে কোন কোন দেশ এখন পর্যন্ত সাফল্য পেয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ভালো কোনো দেশে এ নীতির চর্চা নেই। এ নীতি কোনো দেশে সফল হয়েছে, সেটিও আমার জানা নেই। উন্নত দেশগুলো বিনিময় হারকে বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়। কিছু দেশ আবার বাজারের ওপর ছেড়ে দিলেও কিছুটা নিয়ন্ত্রণও রাখে।’

অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের দায়িত্ব ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) হাতে ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পর সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে ডলারের বিভিন্ন দর ঘোষণা করা হয়। যদিও কোনো দরই দেশের ব্যাংক খাতে কার্যকর হতে দেখা যায়নি। বর্তমানেও বাফেদা ও এবিবির মাধ্যমে ডলারের বিনিময় হারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দর ঠিক করা হচ্ছে। এটি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শ নেয় সংগঠন দুটি। দেশের বিদ্যমান বিনিময় হার নীতি অনেকটা ‘ক্রলিং পেগ’-এরই অনুকরণ বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘চলতি বছরের জুনের মধ্যে আমরা ‍ক্রলিং পেগ নীতি চালু করতে চাই। মার্চ-এপ্রিল থেকেই এটির চর্চা শুরু হতে পারে। এ নীতি অনুসরণের ক্ষেত্রে ব্যাংক খাতে ডলারের বিদ্যমান বিনিময় হারই আমলে নেয়া হবে। কার্ব মার্কেটে ডলারের দরের বিষয়টি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ওই মার্কেটের ডলারের দর আমলে নিলে সেটি প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে। কারণ কার্ব মার্কেটে ডলারের দর নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন।’

‘ক্রলিং পেগ’ নীতির বৈশ্বিক চর্চার ফল কতটা সুখকর? এ প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ নীতি অনুসরণ করে ইসরায়েল যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছে। অন্য দেশ থাইল্যান্ডও এক সময় এটি অনুসরণ করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমরা আইএমএফের কাছে ‍ক্রলিং পেগ নীতি অনুসরণের প্রস্তাব দিয়েছি। সংস্থাটির পক্ষ থেকেও স্বাগত জানানো হয়েছে। আমাদের বৈদেশিক বাণিজ্যের চাপ অনেক কমে এসেছে। আশা করছি, কিছু নিয়ন্ত্রণ ও কিছু সহযোগিতা বিদ্যমান সংকট উত্তরণে সহায়ক হবে। তবে বাজার ও অর্থনীতির কোনো বিষয়েই নিশ্চয়তা দিয়ে কিছু বলা যায় না।’

দেশে ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত আড়াই বছরে রিজার্ভ থেকে ২৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়া গ্রস রিজার্ভ এখন ২৫ বিলিয়নের ঘরে নেমে এসেছে। গত ১৭ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী (বিপিএম৬) দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার। তবে একই দিন দেশের নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৬ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘হুন্ডি কারবারিদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে কোনো নীতিই কাজে আসবে না। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে চিন্তাভাবনা করে। কিন্তু হুন্ডিতে এসবের বালাই নেই। সংকট থাকলে হুন্ডির বাজারে ডলারের যে কোনো দর হতে পারে। উচ্চশিক্ষায় বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিও এখন হুন্ডিতে লেনদেন হয়। বিনিময় হার স্থিতিশীল করতে হলে এর কারবারিদের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রশাসনিক ও আইনি তৎপরতা জোরদার করতে হবে।’

দেশে ডলার সংকট কাটাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের মাঝামাঝি সময় থেকে আমদানি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের ব্যাংক খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছরে আমদানি ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে যায়। নিয়ন্ত্রণের এ পদক্ষেপ এখনো অব্যাহত রয়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বিদেশ থেকে পণ্য আনা কমেছে ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। রেকর্ড পরিমাণ আমদানি কমিয়ে আনার পরও দেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ প্রত্যাশা অনুযায়ী কমাতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎস রফতানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহে স্থবিরতা চলছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে কেবল শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ। একই সময়ে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯১ শতাংশ। যদিও গত তিন বছরেই ২৫ লাখের বেশি বাংলাদেশী শ্রমিক অভিবাসী হয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২১ শতাংশ আমদানি কমে যাওয়ার পরও চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৪৭৬ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৮২ কোটি ডলার। বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমে আসার প্রভাবে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স বা চলতি হিসাবের ভারসাম্য ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। চলতি বছরের পাঁচ মাস শেষে চলতি হিসাবে ৫৭ কোটি ৯০ লাখ উদ্বৃত্ত রয়েছে। চলতি হিসাব উদ্বৃত্তের ধারায় ফিরলেও ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। নভেম্বর শেষে ব্যালান্স অব পেমেন্টের (বিওপি) ঘাটতির পরিমাণও ৪৮৯ কোটি ৮০ লাখ ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এখন বাধ্য হয়ে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণের কথা বলছে বলে মনে করেন সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক সংকট এখন অনেক গভীর। এ অবস্থায় ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এ শঙ্কা থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রলিং পেগ নীতির কথা বলছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোনো নীতিরই সুফল মিলবে না। এখন প্রয়োজন হলো ব্যাংক খাতসহ আর্থিক খাতের কার্যকর সংস্কার করে সুশাসন ফিরিয়ে আনা। পাশাপাশি রফতানি ও রেমিট্যান্স যাতে বাড়ে সে ব্যবস্থা নেয়া। একই সঙ্গে বিদেশী বিনিয়োগ আনার বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া দরকার।’

বনিক বার্তা