আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চীন, ভারত, রাশিয়া আমাদের বন্ধু হতে পারে। কিন্তু আমাদের সরকারকে কোনো বিদেশি শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি। ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটারের ভোটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার। গতকাল বিকালে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা একটা হয়ে গেছে। ৫ বছরের জন্য নির্বাচনের খেলা শেষ। এখন খেলা রাজনীতির। খেলা হবে- দুর্নীতি, সামপ্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, হরতাল, অবরোধ ও আগুনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোথায় অক্টোবরের ২৮ তারিখ? সময় ঠিক এরকম। কোথায় ছিলেন এতদিন গয়েশ্বর? বলেছিলেন, অলিগলি খুঁজে পাবো না, কে পালিয়েছে, অলিগলি খুঁজে পাননি? এক দোকানে গিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা তাড়া করেছে।
দোকানদার বলে আমিও আওয়ামী লীগ। যাবে কোথায়? দেখতে দেখতে ১৫ বছর, সামনে আরও ৫ বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর? কবে হবে আন্দোলন, এ বছর না ওই বছর? রোজার পর, না কোরবানির পর? তিনি বলেন, ৩০ তারিখ আবার বিএনপি’র কালো পতাকা মিছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলছি- সেদিন আপনারা লাল-সবুজ পতাকা হাতে গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবেন। সারা দেশে নেতাকর্মীরা পাহারায় থাকবে। এ অপশক্তিকে আমরা আর বাড়তে দিতে পারি না। এদের রুখতে হলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপি শোকের মিছিল করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কালো পতাকা মানে কী? শোক মিছিল। এ আরেক ভুয়া। ৩০ তারিখে আবার কালো পতাকা মিছিল ডাকছে, সেটাও ভুয়া। লোকজন নেই, জনগণ নেই, নেতাকর্মীরাও হতাশ। নেতাকর্মীদের এখন আর তারেক জিয়ার প্রতি কোনো আস্থা নেই। তারা এখন নেতাদের ফরমায়েশে কান দেয় না। এ সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী। বলেন, শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা হারাবেন না, ধৈর্যহারা হবেন না। এ বিশ্ব সংকটে সারা দুনিয়া আজ রণক্ষেত্র। এ যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশে আছে। আমাদের বেশি টাকা দিয়ে আমদানি করতে হয়। বিক্রি করতে হয় কম দামে।
সরকারের অবকাঠামোগত উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ সুখে আছে। তবে দ্রব্যমূল্য বেশি। সেটিও কমে যাবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে সংকট মোকাবিলা করতে পুরো টিম নিয়ে নেমে গেছেন। গোটা মন্ত্রিসভাকে নিয়ে তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণে হাত দিয়েছেন। মন্ত্রিসভার কেউ বসে নেই। সবাই কাজ করছে। ইনশাআল্লাহ এভাবে চললে অচিরেই দ্রব্যমূল্য আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো। ওবায়দুল কাদের বলেন, সামনে রমজান, মানুষের কষ্ট আমরা জানি। আমরা জনগণের সরকার। শেখ হাসিনা জনগণের মানুষ। আপনাদের কষ্ট তার হৃদয়ে লাগে, আঘাত পান। তাই বলি- আস্থা হারাবেন না। বিএনপি’র কথায় কান দেবেন না। তারা সত্য কথা বলে না। সব মিথ্যাচার করে। দেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশিদের ডেকে আনে। তারা সরকারকে বিদেশিদের ভয় দেখায়। এদের কোনো দেশপ্রেম নেই।
দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকলে, দেশের সংকট দেশের জনগণকে নিয়ে সমাধান করতো। এরা আটলান্টিকের ওপার থেকে বন্ধু ডাকে, নিষেধাজ্ঞা আনতে চায়। কিন্তু শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না। দেশের মানুষ ছাড়া কাউকে পরোয়া করেন না। সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্বাচন বানচাল করতে এমন কোনো হেন কাজ নেই যা বিএনপি করেনি। এমন কোনো কর্মসূচি নেই যা তারা দেয়নি। বিদেশি ষড়যন্ত্রও হয়েছে। তারপরও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপি’র কর্মসূচির সমালোচনা করে তিনি বলেন, কালো পতাকা কীসের? দলটির নেতাকর্মীদের পরামর্শ দেবো কেন্দ্রীয় নেতাদের কালো পতাকা দেখিয়ে তৃণমূলের নেতাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।