কৃষকদের দিল্লি অভিযান: সামনে নির্বাচন, তবুও মোদি কেন নির্বিকার

সরকারের সঙ্গে চারটি ব্যর্থ বৈঠকের পর গত বুধবার কৃষকেরা শুরু করেছেন ‘দিল্লি চলো’ অভিযান
সরকারের সঙ্গে চারটি ব্যর্থ বৈঠকের পর গত বুধবার কৃষকেরা শুরু করেছেন ‘দিল্লি চলো’ অভিযানছবি: রয়টার্স

ভারতের কৃষকসমাজ খেত ছেড়ে আরও একবার রাজপথে। চার বছরের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এত বড় আকারে কৃষকেরা শুরু করেছেন তাঁদের দিল্লি অভিযান। প্রধান দাবি, উৎপাদিত ২৩টি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা ‘এমএসপির’ আইনি বৈধতা।

সরকারের সঙ্গে চারটি নিষ্ফলা বৈঠকের পর গত বুধবার থেকে কৃষকেরা আবার শুরু করেছেন তাঁদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান। এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা নতুন করে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষকনেতাদের।

আন্দোলনের শুরু, দিল্লি অভিযান ও আইন প্রত্যাহার

২০২০ সালের ৯ জুন কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি সংস্কারের নামে তিনটি অর্ডিন্যান্স আনে। তখন থেকেই শুরু অসন্তোষ। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন কৃষকসংগঠন অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতায় নামে।

পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও দাক্ষিণাত্যেও শুরু হয় প্রতিরোধ। নির্বিকার সরকার সেপ্টেম্বর মাসে সংসদে বিনা আলোচনায় তিনটি অর্ডিন্যান্সই আইনে পরিণত করে। সেটা ছিল আগুনে ঘৃতাহুতি।

তিনটি আইনের প্রথমটির মাধ্যমে সরকার-নিয়ন্ত্রিত পাইকারি কৃষিবাজার (মান্ডি) কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়। যুগ যুগ ধরে এই মান্ডি ব্যবস্থা কৃষক ও কৃষিপণ্য ব্যবসায়ীর মধ্যে একটা সম্পর্ক স্থাপন করেছে। কৃষকদের আশঙ্কা, প্রথম আইন (কৃষির করপোরেটাইজেশন) সেই সম্পর্ক মুছে দেবে। দ্বিতীয় আইনে নিশ্চিত করা হয় চুক্তিভিত্তিক চাষ বা কন্ট্রাক্ট ফার্মিং।

কৃষকেরা মনে করেন, ওই আইন করপোরেটদের করে তুলবে কৃষি ও কৃষকদের নিয়ন্ত্রক। তারাই হবে যন্ত্রী, কৃষককুল যন্ত্র।

তৃতীয়টি আইনটির মাধ্যমে বিলোপ করা হয় চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মজুতের ঊর্ধ্বসীমা। তুলে দেওয়া হয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ।

দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের চেহারায় শ্রেণিযুদ্ধ চলছে

আইনে বলা হয়, আলু বা পেঁয়াজের মতো পচনশীল পণ্যের ক্ষেত্রে দাম ৫০ শতাংশ ও অন্য পণ্যের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ বেড়ে গেলে সরকার হস্তক্ষেপ করবে। তা না হলে বাজারই সর্বেসর্বা। কৃষকদের অভিযোগ, তিনটি আইনের মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদির সরকার কৃষিক্ষেত্র বৃহৎ বেসরকারি শিল্পপতি বা করপোরেটদের হাতে তুলে দিতে চাইছে। সেটা করা হচ্ছে কৃষি সংস্কারের নামে।

তিন আইন কৃষকসমাজকে সংঘবদ্ধ করে তোলে। দেশের ছোট-মাঝারি-বড় পাঁচ শতাধিক কৃষকসংগঠন একজোট হয়ে গড়ে তোলে সংযুক্ত কিষান মঞ্চ (এসকেএম)। সিদ্ধান্ত হয়, আইন প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করতে শুরু হবে দিল্লি অভিযান।

শীত আসার আগেই লাখো কৃষক জড় হন দিল্লির সীমান্তে। অবরুদ্ধ হয়ে যায় দিল্লি লাগোয়া হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের সীমান্তগুলো। মূল দাবি, তিন আইন বাতিল ও আইনের মাধ্যমে ফসলের ন্যূনতম দাম বা ‘এমএসপি’ নিশ্চিত করা।

আন্দোলন ভাঙতে সরকার চেষ্টার অন্ত রাখেনি। প্রধানমন্ত্রী মোদি কখনো আন্দোলনকারীদের ‘ফরেন ডেসট্রাকটিভ ইডিওলজি’ বা এফডিআইয়ের সঙ্গে তুলনা করেন। কখনো বলেন, ওরা খালিস্তানি। কখনোবা বলেন, কৃষকনেতারা আন্দোলনজীবী। আন্দোলন না করলে তাঁদের পেট ভরানো কঠিন।

এগারো দফা আলোচনা চললেও সমাধানের সূত্র থাকে অধরা। কৃষক ঐক্যও অটুট থাকে। শেষ পর্যন্ত ২০২১ সালের নভেম্বরে তিনটি আইন খারিজ করতে বাধ্য হয় সরকার; যদিও অমীমাংসিত থাকে এমএসপির আইনি বৈধতার প্রশ্নটি।

এমএসপির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এম এস স্বামীনাথনের নাম। কৃষকদের কাছে তিনি প্রণম্য।

কৃষি সমস্যা ও স্বামীনাথন কমিশন

তামিলনাড়ুর এই কৃষিবিজ্ঞানী ও উদ্ভিদ জিনতত্ত্ববিদ ভারতের কৃষিবিপ্লবের জনক। ষাটের দশকে প্রধানত ইন্দিরা গান্ধীর উদ্যোগে স্বামীনাথনের নেতৃত্বে ভারতে ঘটে যায় সবুজ বিপ্লব। ধান ও গমের জাত পরিবর্তন করে তা উচ্চ ফলনশীল করে তোলা, সেচের বিজ্ঞানসম্মত বিস্তার, প্রয়োজনীয় সার ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিকাজের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দেন তিনি। সেই কাজে তাঁকে সহায়তা করেছিলেন নোবেলজয়ী মার্কিন কৃষিবিজ্ঞানী নর্মান বোরলাগ। ভারতে কৃষিকাজে যে গণ-আন্দোলনের জন্ম তাঁরা দেন, তা ছড়িয়ে পড়ে উপমহাদেশের অন্যত্র।

কৃষকদরদি এই বিজ্ঞানীর নেতৃত্বেই ২০০৪ সালে গঠিত হয়েছিল ‘ন্যাশনাল কমিশন ফর ফারমার্স’ (এনসিএফ)। সেটাই স্বামীনাথন কমিশন নামে পরিচিত। ২০০৪ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে কমিশনের মোট পাঁচটি প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা পড়ে।

পঞ্চম প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সবুজ বিপ্লবের সুফল যত কমতে থাকে, ততই বাড়তে থাকে কৃষক অসন্তোষ ও আত্মহনন। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে কীভাবে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করা যায়, স্বামীনাথন সেই পথ বাতলেছিলেন। সেখান থেকেই জন্ম ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ও তার ফর্মুলা।

কৃষক আন্দোলনের চ্যালেঞ্জ ও বিশ্বাসের ঘাটতি

স্বামীনাথন বলেছিলেন, ফসল উৎপাদনে কৃষকের যা খরচ হয়, তা ন্যায্যমূল্যে বিক্রির জন্য রাষ্ট্রকে সাহায্যের হাত বাড়াতে হবে। সেই ন্যায্যমূল্যটিই হলো মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইজ বা এমএসপি। এটাই হবে চাষিদের কাছে সরকারের আশ্বাস। তাঁরা উৎপাদিত ফসলের উপযুক্ত দাম না পেলে সরকার এমএসপি দিয়ে তা কিনে নেবে, যাতে দেশের অন্নদাতাদের ঋণের ফাঁদে জর্জরিত হয়ে আত্মহত্যা করতে না হয়।

স্বামীনাথনের এসএমপি ফর্মুলা ছিল ‘সি২ + ৫০%’। ফসল উৎপাদনে কৃষকের মোট খরচ ‘সি২’। এর মধ্যে জমির ভাড়া, বীজ, সার, সেচের জল যেমন ‘ইনপুট কস্ট’, ততটাই হিসাবের মধ্যে আনতে হবে কৃষক ও তাঁর পরিবারের শ্রম, যা এ দেশে প্রায় দেখাই হয় না। এই ‘ইনপুট কস্ট’ দিয়ে যে ফসল উৎপাদিত হলো, তার ৫০ শতাংশ যুক্ত হবে এমএসপি নির্ধারণে। সহজ হিসাব, এক টন ফসলের ইনপুট কস্ট ১০০ টাকা হলে তার ন্যূনতম দাম হবে ১৫০ টাকা। টনপ্রতি ওই ৫০ টাকা কৃষকের লাভ।

স্বামীনাথন কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমএসপি নির্ধারণ মনমোহন সিং সরকার করতে পারেনি। এখন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও রাহুল গান্ধী প্রতিদিন নতুন করে বলছেন, ২০২৪ সালে ক্ষমতায় এলে আইন করে এমএসপির বৈধতা দেবেন; তা বাধ্যতামূলক করবেন।

২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে এমএসপি নির্ধারণে পরিবর্তন আনবেন। স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণ করবেন। দলের নির্বাচনী ইশতেহারেও সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ১০ বছর কেটে গেছে। প্রতিশ্রুতি এখনো অপূর্ণ। কৃষকেরা তাই বারবার খেত ছেড়ে রাজপথে নামছেন দাবি আদায়ের জন্য।

দুই আন্দোলনের মিল-অমিল

তিন থেকে চার বছর আগের মতো এবারের আন্দোলনের মিল-অমিল দুই-ই আছে। মিল কৃষকদের মানসিকতায়, দীর্ঘ লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে, সরকারি দমন-পীড়নের মোকাবিলা ও মনোবলের ক্ষেত্রে। সরকারি প্রস্তুতিতেও অনেক মিল। আগেরবারের মতো এবারও রাস্তা কেটে কৃষকদের গতিরোধের ব্যবস্থা হয়েছে।

হাজার রকমের ব্যারিকেড বসানো হয়েছে, কৃষকেরা যাতে দিল্লি ‘দূষিত’ করতে না পারেন। অমিল বলতে এবারই প্রথম পুলিশ ড্রোন ব্যবহার করল। ড্রোন মারফত কাঁদানে গ্যাসের শেল ফেলা হলো কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে।

এসবের বাইরে লক্ষণীয় অমিল কৃষকদের যোগদানের ক্ষেত্রে। গতবারের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল সংযুক্ত কিষান মঞ্চ। এবার প্রধানত পাঞ্জাবের কিছু সংগঠন।

গতবার একটা বড় ভূমিকা ছিল পশ্চিম-উত্তর প্রদেশের কৃষকসংগঠন ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন বা বিকেইউর। তারা এবার এই অভিযানে শামিল হয়নি; যদিও তারা বারবার কৃষকদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। প্রতিটি জেলা সদরে বিক্ষোভও দেখাচ্ছে।

কৃষকদের মধ্যে এই সাংগঠনিক বিভাজনের সুবিধে নিতে চেয়েছিল সরকার। তারা চেয়েছে এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দিতে, যা আন্দোলনকারী কৃষকনেতাদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান বন্ধ রাখবে। বিজেপিও নিশ্চিন্ত হবে এই ভেবে যে লোকসভার ভোটের আগে তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলার মোকাবিলা করতে হবে না। সেই উদ্দেশ্যেই ধান ও গমের বদলে ডাল, ভুট্টা ও তুলা চাষের প্রস্তাব। জমির উর্বরতা ও জলস্তর রক্ষার আরজি। ওই তিন ফসলের এমএসপির জন্য পাঁচ বছরের চুক্তির প্রতিশ্রুতি।

কৃষকনেতাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সরকারকে নতুন করে ভাবাচ্ছে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী আলোচনার প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। আন্দোলন শান্তিপূর্ণ রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।

প্রথমবারের আন্দোলনে দেড় বছরে সাত শতাধিক কৃষকের মৃত্যু হয়েছিল। এবার এখন পর্যন্ত মারা গেছেন তিনজন। ভোটের মুখে এই বিড়ম্বনা সরকার নিশ্চিতই চায় না। তবে এটাও ঠিক, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবার অনেক নিশ্চিত।

আন্দোলন চলছে, ঘর গোছাচ্ছে বিজেপি

স্বামীনাথন মারা যান ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে, ৯৮ বছর বয়সে। তিনি ‘পদ্মশ্রী’ পেয়েছিলেন ১৯৬৭ সালে, ‘পদ্মভূষণ’ ১৯৭২ ও ‘পদ্মবিভূষণ’ ১৯৮৯ সালে। তিন ‘পদ্ম’ পুরস্কারের পাশাপাশি ‘ভারতরত্ন’—স্বামীনাথনের মতো আর কেউ এভাবে সম্মানিত হয়েছেন কি না জানা নেই।

কথায় বলে, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কার্যকারণ ছাড়া হয় না। কৃষিবিজ্ঞানী স্বামীনাথন ও কৃষকনেতা চরণ সিংকে একই সঙ্গে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ার রাজনীতিও তাৎপর্যপূর্ণ; বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদির সম্ভাব্য হ্যাটট্রিকের বছরে।

সেবার ও এবারের কৃষক আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অমিল শাসকের মানসিকতায়। প্রথমবারের আন্দোলন সরকারকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। নার্ভাস করে তুলেছিল প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। অনেকভাবে তিনি চেষ্টা করেছিলেন কৃষক ঐক্য ভাঙার। বিস্তর প্রচার করিয়েছিলেন—কেন ওই তিন আইন কৃষকদের মঙ্গলের জন্য। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে।

কিন্তু এসব কথায় কোন কাজ হয়নি। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা উপেক্ষা করে চোয়াল চেপে হাজার হাজার কৃষক দিল্লির সীমান্তে মাসের পর মাস পড়ে ছিলেন। তাঁরা ঘরে ফিরেছিলেন তিনটি আইন প্রত্যাহার হওয়ার পর।

কিন্তু এমএসপির আইনি বৈধতা না পাওয়ায় আবার দিল্লিমুখী কৃষকসমাজ; অথচ প্রধানমন্ত্রী অবিচল।

২০২০-২১ সালের আন্দোলনের সময় জনপ্রিয় রাজনৈতিক ধারণা ছিল, এই আন্দোলন পশ্চিমাঞ্চলসহ গোটা উত্তর প্রদেশে বিজেপিকে ব্যাপক ধাক্কা দেবে। অথচ দেখা গেল, ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিই আবার ক্ষমতায় এল। আগেরবারের তুলনায় ৫৭টি আসন কম পেল ঠিকই, কিন্তু তাতে সরকার গড়তে অসুবিধা হলো না। পশ্চিম-উত্তর প্রদেশে মাত্র ২০টির মতো আসনে বিজেপিকে বেগ পেতে হয়েছিল।

ওই ফল এবং গত বছর হিন্দি বলয়ের রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রীর মনোবল ও আস্থা বাড়িয়েছে বিপুলভাবে। বারবার হ্যাটট্রিকের আগাম ঘোষণা করছেন। বিজেপি একাই ৩৭০ আসন পাবে বলছেন। এনডিএ ৪০০ পেরোবে জানাচ্ছেন। বিদেশ সফর শেষে বলেছেন, বিদেশিরাও বিশ্বাস করছে ‘আয়েগা তো মোদি হি’।

এ আস্থার পেছনে রয়েছে তাঁদের ‘ক্ষুরধার’ পরিকল্পনা। স্বামীনাথন ও চরণ সিংকে ‘ভারতরত্ন’ দিয়ে কৃষকমন জেতার পাশাপাশি তাঁরা জোটে টেনেছেন চরণের নাতি ‘ইন্ডিয়া’র জাট নেতা জয়ন্ত চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় লোকদলকে।

এর আগে নীতীশ কুমারকে দলে টেনে ভেঙে দিয়েছেন ‘ইন্ডিয়া’র পাঁজর। ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনকে জেলে ঢুকিয়েছেন। মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান থেকে দলে টানছেন কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের।

অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ভূপেশ বাঘেল, ডি কে শিবকুমার, এম কে স্ট্যালিনদের ঘাড়ের ওপর ঝুলিয়ে দিয়েছেন ডেমোক্লিসের খাঁড়া। রাজনৈতিক সমীকরণ ও ধর্মীয় মেরুকরণ এমনভাবে ঘটাচ্ছেন, যাতে লোকসভা নির্বাচনী বৈতরণি পেরোনোর পথ বাধাহীন হয়ে ওঠে।

দ্বিতীয় দফার কৃষক আন্দোলন সেই গুড়ে বালি দেবে—এমন সন্দেহকে আমল দিতে বিন্দুমাত্র প্রস্তুত নন নরেন্দ্র মোদি। আন্দোলন চললেও তিনি হাঁটছেন তাঁর রাস্তায়। নিরুদ্বেগে।

prothom alo