কূটনীতি অর্থনীতি সামাল দিতে না পারলে বিপদ

কূটনীতি অর্থনীতি সামাল দিতে না পারলে বিপদসমকাল

 

 নির্বাচন বর্জন করা দলগুলো বড় ধরনের চাপ তৈরি করতে না পারলেও নতুন সরকারকে অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এতে সফল না হলে সরকারকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে। অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে পারলে নতুন সরকারের মেয়াদপূর্তিতে সমস্যা হবে না। অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এ অভিমত জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং নতুন সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, অর্থনীতি, কূটনীতি ও রাজনীতি সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ। নতুন সরকারের শপথ গ্রহণের পরের দিন শুক্রবার তিনি বলেছেন, বিশ্ব সংকটের বাস্তবতা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা সহজ কাজ নয়।

তবে সরকার এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আশাবাদী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘সংকট অতিক্রম করে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পেরেছি। শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের জন্য তা সম্ভব হয়েছে। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে দক্ষতা, দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন এবং সংকটে রূপান্তরের রূপকের ভূমিকা পালন করেছেন, সে কারণেই মূলত আমরা সাহস রাখি, আশা রাখি।’

দৃশ্যমান কূটনীতির চ্যালেঞ্জ

বছর দুয়েক ধরেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের চাপে রয়েছে সরকার। পশ্চিমা দেশগুলোর বিপরীতে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আওয়ামী লীগের প্রতি অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনের আগে-পরে তা দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অভিমত, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। একই অবস্থান কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার। জাতিসংঘও উদ্বেগ জানিয়েছে।

পুরোনো অবস্থান ধরে রেখে অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত, চীন, রাশিয়া। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টেলিফোন করেছেন শেখ হাসিনাকে।

অন্তত ১৯ দেশের ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে নির্বাচনে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইউরোপের ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) অভিনন্দন না জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো কঠোর বার্তা দেয়নি। নির্বাচনে সহিংসতা ও অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ জানালেও জিএসপি প্লাসসহ অন্যান্য বিষয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ সালের ডিসেম্বরে র‍্যাব এবং সংস্থাটির সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। গত মে মাসে ভিসা নীতি ঘোষণা করে জানিয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টিকারীরা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। গত অক্টোবরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ শুরু করা হয়েছে। গত নভেম্বরে ঘোষিত নতুন মার্কিন শ্রমনীতি সারা দুনিয়ার জন্য প্রযোজ্য হলেও বাংলাদেশকে লক্ষ্যবস্তু করার শঙ্কা রয়েছে।

কম্বোডিয়াসহ কয়েকটি দেশের নির্বাচনের পর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তেমন কিছু হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে সবচেয়ে বেশি ডলার আসে বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রে গত ১১ মাসে গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানি প্রায় ২৫ শতাংশ কমেছে।

তবে ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা এলে সরকারের জন্য তা বড় সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন অধিকাংশ কূটনীতিক। তাদের অভিমত, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা সংকট সৃষ্টি করতে পারে। অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে রপ্তানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করায় বাণিজ্যিক কূটনীতিতে বড় সংকটের আশঙ্কা করছেন না তারা।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নবগঠিত মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোসহ প্রায় সব দেশের রাষ্ট্রদূতরা গিয়েছিলেন। অর্থাৎ বর্তমান সরকারকে সম্ভাষণ জানাতে তারা সবাই গিয়েছিলেন।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেছেন, বাংলাদেশকে ঘিরে বৈশ্বিক মেরূকরণ রয়েছে। এই সংকটের সমাধানে অভ্যন্তরীণভাবে রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলেই দেশের অর্থনীতিসহ সার্বিক পরিস্থিতি ঝুঁকিমুক্ত হবে। এখন যেভাবে চলছে, তাতে চ্যালেঞ্জ আরও বাড়বে।

হুমায়ুন কবিরের মূল্যায়ন জাপান বাদে সব দেশ নির্বাচনের আগে যে অবস্থানে ছিল, ভোটের পরও একই জায়গায় রয়েছে। তিনি বলেছেন, বিদেশিদের মধ্যে বিভাজন রয়েছে। কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা সরকারের দক্ষতার ওপর নির্ভর করবে।

হুমায়ুন কবির বলেছেন, নির্বাচনের পর বিদেশিরা নানা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এর মানে এই নয়, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় না। তারা সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখতে উপাদেয় কিছু জিনিস, অর্থাৎ তারা যেসব বিষয়ে খুশি হয়, তা চাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ যে সমস্যাগুলোর কারণে বাংলাদেশে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা রাজনৈতিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হলে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক অবনতির যে শঙ্কা রয়েছে, তা থাকবে না; বরং পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। নির্বাচনের আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, ভূরাজনৈতিক টানাহেঁচড়ায় পড়তে পারে বাংলাদেশ, তা মোকাবিলায় সরকারকে যথেষ্ট দক্ষতা প্রদর্শন করতে হবে।

মূল চ্যালেঞ্জ অর্থনীতি

বছর দুয়েক ধরেই সংকটে রয়েছে দেশের অর্থনীতি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ নাকাল। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্ষয়ে সরকারও নেই স্বস্তিতে। রিজার্ভকে পুষ্ট করা রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স বাড়ছে না। ক্ষেত্রবিশেষে কমে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে কমছে রপ্তানি। গত দুই বছরে ২৪ লাখ কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশ গেলেও রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি নেই।

ডলারের দাম দেড় বছরে ৮৪ থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছে। যদিও এ দামে ডলার পাওয়া যায়। মাঝে খোলাবাজারে ১২৭ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। ডলার সংকটে আমদানিকারকরা ঋণপত্র খুলতে পারছেন না। জরুরি কাঁচামাল আমদানিতেও বেগ পেতে হচ্ছে। তেল, গ্যাস, কয়লার মতো জরুরি জ্বালানি আমদানিতে যথেষ্ট ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। আমদানি করা জ্বালানি পণ্যের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছে না সরকার। জ্বালানি সংকটে সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন হচ্ছে না কলকারখানায়।

অন্যদিকে হুন্ডি খেয়ে ফেলছে রেমিট্যান্স। টাকা পাচার সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এতে ডলার সংকট তীব্রতর হয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সরকার বিদেশি ঋণে বড় কিছু অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। সেগুলোর ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় এসেছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৭৮ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। ২০২৯-৩০ অর্থবছরে ঋণ পরিশোধে প্রয়োজনে হবে ৫১৫ কোটি ডলার।
২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ বেড়ে হয়েছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। তা কমে ২০ বিলিয়নে নেমেছে। রিজার্ভ ঠিক রাখতে আইএমএফের কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণে নিচ্ছে সরকার। সদ্য সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত মঙ্গলবার বলেছেন, আইএমএফ রিজার্ভের যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে, তা পূরণ সম্ভব নয়।

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনেও স্পষ্ট, অর্থনীতি সঠিক পথে আনতে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। অর্থ, পরিকল্পনা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বদল হয়েছে। অর্থনীতির সংকট দূর করাকেই আসল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেছেন, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা করা নতুন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারকে দেশের অর্থনীতিতে যেমন নজর দিতে হবে, তেমনি বিদেশি অর্থনীতির সঙ্গে যে সংযোগ– সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

সরকারি হিসাবেই ৯ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি। বেসরকারি হিসাবে তা আরও বেশি। আতিউর রহমান বলেছেন, এতদিন ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকলে তা মানুষের মনের মধ্যে বসে যায়। তারা মনে করে, এভাবেই হয়তো চলতে থাকবে। এই অবস্থা থেকে বের হতে মুদ্রানীতি অনেক কঠিন করতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এটা শুরু করেছে। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি নিয়েছে তারা।

সাবেক এই গভর্নর বলেছেন, শুধু টাকার সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার কারণেই যে মূল্যস্ফীতি হয়, তা নয়। আরেকটি কারণ টাকার মান কমে যাওয়া, যা এরই মধ্যে ঘটে গেছে। তাই আমদানি করা জিনিসপত্রের দামও বেড়ে গেছে। এর প্রভাব দেশে উৎপাদিত পণ্যের ওপরও পড়েছে। এখন করণীয় হলো বিনিময় হারকে নমনীয় রাখতে হবে। যাতে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়ে। মূল্যস্ফীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে। অন্যদিকে সংযত রাজস্ব নীতিও গ্রহণ করতে হবে সরকারকে। অর্থাৎ আয় বুঝে ব্যয় করতে হবে।

নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীও মানছেন অর্থনীতি বহুমুখী চাপে রয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন, নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ অর্থনীতি। অর্থনীতির এ বেহাল দশা সামাল দিতে কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবেন– প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী সমকালকে বলেন, আগে সার্বিক অর্থনীতির দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা হবে। এ জন্য আগামীকাল রোববার অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। তার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মাহমুদ আলী বলেছেন. অর্থনীতির বিষয়গুলো জটিল। একে সহজ ভাবলে দেশের জন্য ভালো হবে না। তা ছাড়া আমি নিজেও কূটনৈতিক এলাকা থেকে এসেছি। তাই অর্থনীতি নিয়ে হুট করে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে এটা বলতে পারি, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে নিয়ে কাজ করব। একটা কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে। অর্থ পাচার রোধ, ব্যাংকিং খাতে সংস্কারসহ অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসান ইসলাম বলেছেন, দ্রব্যমূল্য জনগণের নাগালে আনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পণ্যের দাম হয়তো আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে ওঠানামা করবে, তাই সরবরাহ বৃদ্ধিতে জোর থাকবে। আমদানি পণ্যে কারসাজি রোধে ভোগ্যপণ্য সরবরাহের সঙ্গে জড়িত বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।

রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ

বিএনপিসহ ১৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারার মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার অর্থনীতি ও কূটনীতি সামাল দিতে ব্যর্থ হলে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জে পড়বে।

সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, যারা নির্বাচিত হন, তারা ছাড়া অন্যদের কাছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের চাপ ছিল নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে। শেখ হাসিনা তা মোকাবিলা করে সরকার গঠন করেছেন। কিন্তু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফল আগেই নির্ধারিত ছিল।

বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে আবুল কাসেম বলেছেন, এর মাধ্যমে বিদেশি শক্তিকে বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে ভীষণভাবে জড়িয়ে ফেলা হয়েছে। আবার দেশের ভেতরে রাজনৈতিক ঝামেলা চলছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে দলীয় ঐক্য নেই। বলা হয়, এই আওয়ামী লীগ আগের আওয়ামী লীগ নয়, হাসিনা লীগ হয়ে গেছে। এই কথার তাৎপর্য আছে। শেখ হাসিনার রাজনীতি যদি মানুষের জন্য কল্যাণকর হয়, তাহলে ক্ষমতা টিকবে।

অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হলে বিরোধীদের আন্দোলন জোরদার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু মনে না করা শক্তিগুলোর সমর্থনে ভিন্ন পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেছেন, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশের বহির্বিশ্বের সহায়তা দরকার। বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হবে। অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার ওপর যদি মানুষের আস্থা তৈরি না হয়, তাহলে বিনিয়োগ আসবে না, রেমিট্যান্স কমবে। তখন সমস্যাগুলোর সমাধান কঠিন হয়ে যাবে। এ জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর সংস্কার দরকার। রাজনৈতিকভাবে একটা সৃজনশীল জায়গা যদি তৈরি করা যায়, তাহলে সবাই মিলে কাজ করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা গেলে মানুষের আস্থা বাড়বে।

সমকাল