বাংলাদেশ ব্যাংক এমন এক সময়ে ব্যবসায়ীদের এই ছাড় দিল, যখন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ব্যাংক খাতে আমানতকারীরা এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অন্য ব্যাংকে জমা রাখছে। ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকা মজুতের পরিমাণও বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনার ফলে ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনায় চাপ তৈরি হবে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। কারণ, লক্ষ্য অনুযায়ী ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হবে সব ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বহির্বিশ্বে যুদ্ধাবস্থা প্রলম্বিত হওয়ায় তার দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাবে শিল্পের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ঋণগ্রহীতাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখা এবং ঋণগ্রহীতাদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ সহজ করতে মেয়াদি ঋণের বিপরীতে গত অক্টোবর থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ৭৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫০ শতাংশ ডিসেম্বরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে উক্ত ঋণগুলো খেলাপি করা যাবে না।
এ সময়ে কিস্তির যেসব টাকা বকেয়া থাকবে, তা ঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। ফলে এসব ঋণের মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরও এক বছর বেড়ে যাবে। এ নির্দেশনার ফলে খেলাপি ঋণ সেভাবে বাড়বে না। কারণ, অর্ধেক কিস্তি দিলেই খেলাপি থেকে বাইরে থাকা যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ব্যাংক খাতে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। খেলাপিতে পরিণত হয়েছে মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।