গ্রিন পার্কের উইকেট ঐতিহ্যগতভাবে কালো মাটির। কিছুটা মিরপুরের ছবি। ২০২১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যে টেস্ট ম্যাচটি এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে লো বাউন্সার পেয়েছিলেন বোলাররা। অতীত রেকর্ড দেখা হলে ভারতের ব্যাটারদের জন্য কানপুর স্বর্গ। কখনও কখনও স্বর্গও যে খোলস পরিবর্তন করে, চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টের উইকেট তারই প্রমাণ দিয়েছে। চেন্নাই ঐতিহ্যগতভাবে স্পিনারদের। কানপুর সম্পর্কেও তেমনই একটি ধারণা হয়েছে– বড় রানের উইকেট থাকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টের কন্ডিশন যে ঐতিহ্যের ধার ধারবে না, সেটা পরিষ্কার।
ভারতের দল থেকে কিউরেটরকে দুটি উইকেট বানাতে বলা হয়েছে। গ্রিন পার্কের কিউরেটর শিবকুমারও অর্ডারি দুটি উইকেট প্রস্তুত রেখেছেন। মাঠকর্মীরা দিনভর খাটাখাটুনি করেছেন রহিত শর্মাদের মনের মতো উইকেট দিতে। কালো আর লাল দুই মাটির উইকেট। কালোর ওপর লালের প্রলেপও দেওয়া। যেটা প্রতিপক্ষ দলের জন্য ভীষণ ধোঁকা। সার্ফেস দেখে কিছুই বোঝার জো নেই। রোহিতরা কোনটা বেছে নেবেন কালো না লাল– সে সিদ্ধান্ত হবে আজ।
বিশ্ব ক্রিকেটে ভারত এখন সবদিক থেকে এগিয়ে। দেশ-বিদেশ সবদিক মাথায় রেখে কন্ডিশন তৈরি করে তারা। প্রচলিত স্পিন কন্ডিশনের ধারণা থেকে ১০ বছর হলো বেরিয়ে এসেছে দেশটি। নিখাদ ব্যাটিং বা স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হয় বেশির ভাগ ম্যাচ। চেন্নাইয়ের মতো কানপুরও রহস্যের ঝাঁপি খুলে দিতে পারে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্ট ম্যাচটি হতে পারে স্পোর্টিং উইকেটে। যেখানে ব্যাটিং-বোলিং উভয় গ্রুপ সমান সুবিধা পাবে। বাংলাদেশের বিপক্ষে পিচ নিয়ে ভারতের এমন কারসাজির কারণও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভেবে করছে না। দেশটির ক্রিকেট সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়া সফর সামনে রেখে দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেটে খেলছেন রোহিতরা। ভারত তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মাথায় রেখে কন্ডিশন বানাচ্ছে।
বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে পিচ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে পরিষ্কার কোনো ধারণা দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘দুটি পিচ আছে, কোনটাতে খেলা হবে বলতে পারছি না। কাল দেখে বলা যাবে। কন্ডিশন দেখার পরই একাদশ সাজানো হবে।’
ভারতীয় মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, কালো মাটির পিচে খেলা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এক দিন আগে এসব অনুমান নাও ফলতে পারে। বাংলাদেশের মিডলঅর্ডার ব্যাটার মুমিনুল হক পিচ দেখে একটু বিস্মিত হয়েছেন। ঘাসের আধিক্য ভাবাচ্ছে তাঁকেও। শেষ পর্যন্ত এই ঘাস নাও থাকতে পারে। আবার কালো পিচে খেলা নাও হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ কালোতে খেলে ভালো করে। লালে বরং অনভ্যস্ত।
samakal