সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের সর্বক্ষেত্রেই একটা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলে অভিমত প্রকাশ করে গণতন্ত্র মঞ্চ অভিযোগ করেছে, কার্যত এই সরকারই এখন এক বৃহৎ সিন্ডিকেট।
সোমবার সন্ধ্যায় গণসংহতি আন্দোলন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র মঞ্চের এক সভায় নেতারা এ অভিযোগ করেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ‘ব্যাংক লোপাট ও অর্থ পাচারের প্রতিবাদে’ গণতন্ত্র মঞ্চ ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটায় পুরানা পল্টন মোড়ে এই সমাবেশ করবে তারা।
সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, ‘অবৈধ এই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সর্বক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের ফলে দেশে লুটপাট ও নৈরাজ্য কায়েম হয়েছে। ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের পরিস্থিতি গভীর সংকটে পড়েছে। টাকা ছাপিয়ে এখন শেষ রক্ষার চেষ্টা চলছে।’ তাঁরা আরও বলেন, সরকার ব্যাংক খাত পরিচালনার নীতি পরিবর্তনের কথা বললেও পরিস্থিতি মোকাবিলার উপযোগী প্রকৃত কোনো উদ্যোগ সেখানে নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণের হাঁকডাক সত্ত্বেও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। দ্রব্যমূল্যের বেপরোয়া ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হচ্ছে।
সভায় নেতারা এ–ও বলেন, জনগণের পকেট হাতিয়ে নেওয়া দুর্বৃত্তদের স্বার্থ রক্ষার্থেই কাজ করছে সরকার। সরকারের জবাবদিহিহীন শাসনের ফলে সামাজিক নৈরাজ্যের বিস্তার ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজের বিভিন্ন অংশে ধর্ষক, নিপীড়ক, দুর্বৃত্ত ও দখলদারদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি দল ও প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় এসব রোমহর্ষক ঘটনা ঘটছে।
বাংলাদেশ-ভারত এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফলে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ অনুযায়ী এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উপযোগী নীতি গ্রহণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার। সীমান্তে হাজার হাজার বাংলাদেশের নাগরিক বাড়িঘর ছেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সীমান্তে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নতুন ঢেউ আসার হুমকি তৈরি হচ্ছে। যে কোনোভাবে ক্ষমতায় থাকার বিনিময়ে জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিকিয়ে দিতেও তারা দ্বিধা করছে না।
মঞ্চের নেতারা বলেছেন, গণ–আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে বিদায় করা এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা ছাড়া বাংলাদেশের মানুষের কোনো মুক্তি নেই। সভায় নেতারা সেই লক্ষ্যে গণ-আন্দোলন জোরদার করতে সব গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান। গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভায় সভাপতিত্ব করেন।
prothom alo