হাসানুল হক ইনু: নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার যে কথা বলেছিল, সামগ্রিকভাবে তা হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত কারচুপির ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশনও তা স্বীকার করেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত ঘটনার জায়গাগুলোর মধ্যে আমার আসনটি পড়েছে। আমাকে জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে হারানো হয়েছে।
হাসানুল হক: আমি প্রমাণ দিয়েই বলছি, কারচুপি করে আমাকে হারানো হয়েছে। আমার প্রতিপক্ষের গুন্ডা বাহিনীর প্রভাবে ১৬১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৮টিতে অস্বাভাবিক ভোট হয়েছে। এই ১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১টি কেন্দ্রে আমার প্রতিপক্ষ (আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী) পেয়েছেন ২ হাজার ৮০০ ভোট, ওই কেন্দ্রে আমি নৌকা প্রতীকে মাত্র ৮৫ ভোট পেয়েছি। এই ভোটের চিত্র দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়, কতটা অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু সেখানে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এটা দুঃখজনক।
হাসানুল হক: ভোটে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটা বিরাট অংশ প্রশাসনের সহযোগিতায় নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও একাংশ নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছে, যা দুঃখজনক। তবে সামগ্রিকভাবে ৯৫ শতাংশ জায়গায় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে, কিছু সমস্যা হয়েছে ৫ শতাংশ জায়গায়।
হাসানুল হক: না, সে জন্য নয়। কারচুপি করে আমাকে হারিয়েছে। এ রকম কিছু জায়গায় হয়েছে। যেমন ১৪ দলের শরিক জেপি নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে হারানো হয়েছে।
হাসানুল হক: আমাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়েছিল। শরিক দল থেকে নৌকার প্রার্থী বনাম আওয়ামী লীগ হয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের দিক থেকে এই পরিস্থিতির নিষ্পত্তি করার কোনো উদ্যোগ ছিল না। সে কারণে বিপর্যয় হয়েছে। পরাজিত হয়েছে জোটের রাজনীতি।
আপনাদের জোটের রাজনীতিতে কি এই ভোট পরিস্থিতির কোনো প্রভাব পড়তে পারে?
হাসানুল হক: আমরা এখন সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে জোটে আলোচনা করব। যেহেতু আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক লক্ষ্যের ব্যাপারে ঐকমত্য আছে, ফলে আমরা একসঙ্গেই কাজ করব। তবে ভোটকে কেন্দ্র করে যে সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা হলো, তার রেশ এখনো চলছে। শরিকদের আসনগুলো আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী যাঁরা জয়ী হয়েছেন, তাঁদের সমর্থকেরা এখন পরাজিত জোট শরিকদের সমর্থকদের ওপর হামলা করছে। আমার এলাকাতেই জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা জাসদ নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হচ্ছে। এখন এগুলো বন্ধ করা উচিত।