- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ জুলাই ২০২০
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনার এই বৈশ্বিক সঙ্কটেও বিএনপি নেতারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করে দেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত।
রোববার সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক আনলাইন ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে নেমেছে। দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এসব কারণে দলটি দিন-দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং রাজনীতিতে অপ্রসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।’
বিএনপির এক নেতার ইতালিতে দেশ বিরোধী বক্তব্যে প্রবাসীরা বিক্ষুব্ধ হয়েছেন জানিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘একটি অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখলাম ইতালির বিএনপির’র সাবেক সভাপতি দেশের গণমাধ্যমকে দেয়া দেশ বিরোধী অসত্য বক্তব্যে প্রবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী এ বিএনপি নেতা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বাংলাদেশে নাকি দশ লাখ লোক আক্রান্ত। কোনো চিকিৎসা নেই দেশে। ১০ হাজার মানুষ ইতালির পথে রয়েছে। যারা ইতালি যাচ্ছে এবং তাদের সবার কাছে না কি ভুয়া রিপোর্ট আছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে ছোট করা।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘লাখ-লাখ প্রবাসীদের অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দেয়া, এমন অসত্য তথ্য ইতালির গণমাধ্যমকে দেয়া বক্তব্যে ওখানকার প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ। বিএনপি নেতার ভিডিও ইতালির লেগা নর্দ দলের নেতা মাতেও সালভিনি তার ফেসবুকে শেয়ার করেছে বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে।’
বাংলাদেশী নাগরিকদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে সরকার নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশ ভ্রমণের পূর্বে সরকার নির্ধারিত ষোলটি প্রতিষ্ঠানটিকে করোনার সনদ গ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য বিদেশগামী ভাই-বোনদের আমি অনুরোধ করছি। আমাদের কিছুসংখ্যক জনশক্তির অবহেলা এবং তথ্য গোপনের ফলে ২/৩টি দেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা অস্বস্তিতে পড়েছে। এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি আমরা চাই না।
সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ বিষয়ে মানুষের ভীতি কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে করোনা সংক্রমণ বিষয়ে জনমানুষের মাঝে ভয়-ভীতি কমে গেছে। নমুনা পরীক্ষা সংখ্যাগত বিচারে কমেছে। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, লক্ষণ ও সংক্রমণ লুকিয়ে অনেকে চলাফেরা করছেন কিন্তু পরীক্ষা করাচ্ছেন না। অপরদিকে নমুনার সংখ্যা কমলেও আক্রান্তের হার শতকরা হিসেবে বাড়ছে।
দরিদ্রদের বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকে মনে করছেন অসহায় দরিদ্র মানুষকে ফি দিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে বলে নমুনা পরীক্ষা থেকে দূরে থাকছে। করোনার অভিঘাতে অনেক মানুষ এখনো কর্মহীন অসহায়। দরিদ্র মানুষের আর্থিক অক্ষমতার কথা বিবেচনা করে ফি ছাড়া পরীক্ষার সুযোগ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনার জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাচ্ছি।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মকর্তাদের বেতন প্রদানে পরিচালনা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাখ-লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। সরকারি ও এমপিওভুক্ত ছাড়াও বিশাল একটি অংশ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এ সব শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হয়। এ সঙ্কটকালে প্রধানমন্ত্রী তাদের কথা মনে রেখে ইতোমধ্যে অনুদান দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানসমূহ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারী কষ্টকর জীবন যাপন করছেন। এ অবস্থায় আমি বেসরকারি ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার পরিচালনা সংশ্লিষ্টদের কষ্ট করে হলেও শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
সূত্র : বাসস