কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে নাটকীয় পতন, বেশী কমছে চীন ও ভারতে
-
২২ মার্চ ২০১৭
বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত তিনটি পরিবেশবাদী গোষ্ঠীর এক যৌথ সমীক্ষায় বলা হয়েছে বিশ্বব্যাপী গত এক বছরে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও নির্মাণের পরিকল্পনা নাটকীয়ভাবে কমেছে।
গ্রীনপিস, দ্যা সিয়েরা ক্লাব ও কোল সোয়ারম – এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের চালানো সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে ভারত ও চীনে নতুন কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কমে যাওয়ার কারণেই ২০১৬ সালে মূলত এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গত এক বছরে কমেছে ৪৮ শতাংশ, আর আগের এক বছরের তুলনায় এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ কমেছে অন্তত ৬২ শতাংশ।
আবার ইউরোপ ও আমেরিকায় পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বন্ধ করে দেয়ার পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে বলে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে।
সমীক্ষাটি এমন সময় প্রকাশিত হলো যখন বাংলাদেশেও সাম্প্রতিক কালে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হচ্ছে।
পরিবেশবাদীদের দাবি রামপালে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সেটি সুন্দরবনের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হবে।
তবে সরকার এসব সমালোচনা নাকচ করে বলেছে, আধুনিক প্রযুক্তির কারণে কেন্দ্রটি সুন্দরবন ও পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হবেনা।
গ্রীনপিস, দ্যা সিয়েরা ক্লাব ও কোল সোয়ারম-এর সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সরকারের নীতি পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক বিবেচনার কারণেই ভারত ও চীনে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নাটকীয়ভাবে কমছে।
গত দশ বছরে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়েছে ভারত ও চীনে।
কিন্তু এভাবে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের হিড়িক পড়ার দিন সম্ভবত শেষ হয়ে গেছে। বরং গত এক বছরে কয়লা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার প্রবণতাই ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
চীনে কেন্দ্রীয় সরকার কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, ফলে অন্তত ৬০০ কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কাজ সেখানে কমপক্ষে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
আর ভারতে এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ স্লথ হয়ে পড়ার মূল কারণ হলো ব্যাংকগুলো আর এখানে বিনিয়োগ করতে খুব একটা আগ্রহী নয়।
ইউরোপ ও আমেরিকায় গত দুই বছরে অনেকগুলো কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। এসব দেশে অন্তত ১২০টি বড় ধরনের কয়লা-ভিত্তিক ইউনিটকে উৎপাদন থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
তবে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে এ ধরনের রিপোর্টকে বিভ্রান্তিকর বলছে ওয়ার্ল্ড কোল অ্যাসোসিয়েশন।
তাদের মতে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার ছাড়া এশিয়ার দেশগুলোর হাতে বিকল্প খুব কমই রয়েছে।