
দীর্ঘ ১০ দিন ঈদুল আজহা ছুটি কাটিয়ে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। রোববার থেকে শুরু হবে কর্ম দিবস। সেজন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন কর্মজীবী মানুষ। আবার যারা ঢাকা বা আশপাশের জেলায় থাকেন, তারা ঢাকা থেকে তাদের নির্ধারিত কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষালয় যাচ্ছেন। ফলে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে।
শনিবার (১৪ জুন) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারগুলোর সামনে তেমন কোনো মানুষের ভিড় নেই। কাউন্টার পেরিয়ে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতেই দেখা যায় শত শত মানুষ অপেক্ষা করছেন ট্রেনের জন্য। দশটি প্ল্যাটফর্ম মিলে এই মানুষের সংখ্যা হবে কয়েক হাজার।
অন্যদিকে যেসব ট্রেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গতরাতে ছেড়ে এসে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে এসে থামছে, সেসব ট্রেন থেকে অন্তত এক হাজার করে মানুষ প্ল্যাটফর্মে নামছেন। সব মিলিয়ে প্ল্যাটফর্মে মানুষের বিচরণ কয়েক হাজারের মতো।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একতা এক্সপ্রেসের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা শাহরিয়ার। জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করি, আমার পোস্টিং নওগাঁ শহরে। এদিকে আমার বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। আগামীকাল থেকে যেহেতু ব্যাংক খোলা তাই আজকে রওনা হয়েছি। এখন অপেক্ষা করছি একতা এক্সপ্রেসের জন্য। ঈদের ছুটি শেষে মূলত আমি কর্মস্থলে যাচ্ছে।
এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে জয়ন্তীকা এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তরফদার জুয়েল। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ছেলে পড়ে। দীর্ঘদিন ছুটি শেষে ক্লাস শুরু হতে যাচ্ছে। তাকে ট্রেনে উঠিয়ে দিতেই স্টেশনে এসেছি।
এদিকে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে এক জনসমুদ্র নিয়ে ঢাকা স্টেশনে থামে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস। ট্রেনের কোচগুলো অতিরিক্ত মানুষ বোঝাই করা। তারপরেও ট্রেনের ছাদ, ইঞ্জিনের রেলিং কোনো জায়গায় বাদ নেই।
ওই ট্রেনের যাত্রী মিরাজ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, একই বেসরকারি ব্যাংকের মগবাজার শাখায় চাকরি করি। আগামীকাল থেকে ব্যাংক খোলা। বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরলাম।
জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমি দিনাজপুর থেকে ট্রেনে উঠেছিলাম। ট্রেনে উঠার সময় থেকেই অনেক মানুষের ভিড় ছিল। ট্রেনের ছাদেও মানুষ। পরবর্তী স্টেশন থেকে যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে অনেক চিল্লাচিল্লি করেছেন। অনেকে হয়তো উঠতেও পারেননি।
যমুনা এক্সপ্রেসে তারাকান্দি থেকে আসা শিক্ষার্থী দীনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামীকাল থেকে কলেজ খুলবে। ঈদের ছুটি শেষে তাই আজ ঢাকায় ফিরলাম। ট্রেনে প্রচুর পরিমাণে যাত্রী ছিল।
স্টেশন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল থেকে যেসব ট্রেন ঢাকায় এসেছে প্রত্যেকটা ট্রেনেই ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী সংখ্যা ছিল। আজ দিনব্যাপী ঢাকায় আসা প্রত্যেকটা ট্রেনেই এমন ভিড় হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।