- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জম্মু-কাশ্মিরের পাহেলগাঁমে সশস্ত্র হামলার জেরে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানোর পর আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক প্রচার শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেত্রী শামা মুহাম্মদ এক সাক্ষাৎকারে বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ভুক্তভোগী হওয়া সত্ত্বেও কেন ভারত আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছে না, বরং বিশ্ব কেন পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছে?
ভারত ও পাকিস্তান
ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতের পর ৩২টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে। এই প্রতিনিধি দলগুলোতে মোট ৫৯ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন, যার মধ্যে ৩১ জন এনডিএ জোটের এবং ২৮ জন বিরোধী দলের সদস্য।
নয়াদিল্লির এই ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যেই কংগ্রেস নেত্রী শামা মুহাম্মদ তার সাক্ষাৎকারে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, কেন সারা বিশ্ব পাকিস্তানের সমর্থনে দাঁড়াচ্ছে, যেখানে ভারতের পাশে কেউ নেই?
তিনি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার যুদ্ধবিরতির কথা বলছেন। এক্ষেত্রে তিনি ভারতকে সন্ত্রাসবাদের শিকার হিসেবে না দেখে বরং ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই একই দৃষ্টিতে দেখছেন। ২৬/১১-এর হামলার পর পুরো বিশ্ব ভারতের পাশে ছিল, কিন্তু এখন সেই সমর্থন কোথায়? অনেক দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা করছে এবং তাদের সমর্থন জানাচ্ছে। অথচ ভারত কেন আন্তর্জাতিক সমর্থন হারাচ্ছে, তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।
অন্যদিকে, সিঙ্গাপুরের শাংগ্রি-লা ডায়ালগে ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন যে, গত ৭ মে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারত কিছু যুদ্ধবিমান হারিয়েছে। তবে, পাকিস্তান তিনটি রাফায়েলসহ ছয়টি বিমান ধ্বংসের যে দাবি করেছে, তা তিনি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
বিমান হারানোর বিষয়টি স্বীকার করলেও তিনি এর সঠিক সংখ্যা জানাতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, সংখ্যা মুখ্য নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভারত দ্রুত তাদের কৌশলগত ভুল সংশোধন করেছে এবং পরের দিনই সফলভাবে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় পর্যটকসহ ২৬ জনের মৃত্যুর পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু হয়। ভারত দাবি করে যে, ৭ মে এই অভিযানে তারা পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মিরের একাধিক সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান এই হামলার জবাব দিয়ে পাল্টা হামলা চালায় এবং ছয়টি বিমানসহ বিমানঘাঁটি ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি করে। পরবর্তীতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ১০ মে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা