এশিয়া কাপে সবার আগে সুপার ফোরে পাকিস্তান

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:২৯, আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:৫২
এশিয়া কাপে সবার আগে সুপার ফোরে পাকিস্তান। – ছবি : সংগৃহীত

বৃষ্টির কারণে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলাফল ভাগাভাগি ফলে সবার আগে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। ৪ সেপ্টেম্বর ভারত নেপালের মোকাবেলা করবে। এবারের এশিয়া কাপে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল ভারত ও পাকিস্তানের। তবে বৃষ্টির বাধায় পাকিস্তান ব্যাটিং করার সুযোগই পায়নি। ভারতের ব্যাটিংয়ের পর ইনিংস বিরতিতে যায় দু‘দল। পাকিস্তানি বোলারদের তোপের মুখে ওভার শেষ করা হয়নি ভারতের, ৪৮.৫ ওভারে থামে ২৬৬ রানে আটকে যায় রোহিত- কোহলিদের ইনিংস। যখন ২৬৭ রানের লক্ষ্যে বাবর আজমদের ব্যাট হাতে নামার কথা, তখনই বিঘ্ন ঘটায় বৃষ্টি।

ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবারের এশিয়া কাপ। তবে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার আয়োজনে মাঠে গড়িয়েছে এশিয়ার মর্যাদার লড়াই। প্রায় চার বছর পর শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। স্মরণীয় এমন ম্যাচে শাহিন শাহ আফ্রিদির আগুনে পুড়লো ভারত, উত্তাপ ছড়ালেন হারিস রউফও। তাদের বিধ্বংসী বোলিংয়ে পুরো ৫০ ওভারও টিকতে পারলো না রোহিত শর্মার দল, ৪৮.৫ ওভারে ২৬৬ রানেই থামলো তাদের ইনিংস।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তানের এই ম্যাচে নিজেদের ইনিংসে আরো অল্পতেই থামতে পারতো ভারত। পাওয়ার প্লেতেই ভেঙে গিয়েছিল টপ অর্ডার। ৬৬ রানেই হারিয়ে ফেলেছিল ৪ উইকেট। তবে ইশান কিশান আর হার্দিক পান্ডিয়ার স্রোতের বিপরীতে করা লড়াই ভারতকে এনে দিয়েছে এমন সম্মানসূচক সংগ্রহ। দু’জনেই খেলেছেন আশির্ধ্বো ইনিংস।

পাল্লাকেল্লেতে এদিন টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামে ভারত। তবে পাকিস্তানি বোলারদের তোপের মুখে অসহায় হয়ে পড়ে তারা, ভেঙে পড়ে টপ অর্ডার। মাত্র ১৫ রানেই ভাঙে ভারতের উদ্বোধনী জুটি। ৬৬ রানে হারিয়ে বসে ৪ উইকেট।

শুরুটা করেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। পঞ্চম ওভারে ফেরান রোহিত শর্মাকে। ২২ বলে ১১ করেন রোহিত। পরের ওভারেই বিরাট কোহলিকেও নিজের শিকারে পরিণত করেন আফ্রিদি। কোহলি করেন ৭ বলে ৪ রান। ২৭ রানের দলের সেরা দুই ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে ভারত।

সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন শ্রেয়াস আইয়ার। ভয়ংকর হয়ে উঠার আগে তাকে ফেরান হারিস রউফ। ৯ বলে ১৪ করেন তিনি। ১৫তম ওভারে এসে শুভমান গিলেরও স্ট্যাম্প ভাঙেন এই পেসার। আউট হবার আগে ৩২ বলে ১০ রান করেন গিল। ফলে মাত্র ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ভারত।

সেখান থেলে ইশান কিশান আর হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। ধসের মুখ থেকে দলকে টেনে তুলেন দু’জনে মিলে। দুজনেই সাবলীলভাবে তুলে নেন ফিফটি, বাড়িয়ে তোলেন রানের গতি। শতাধিক রানের জুটি গড়ে উঠে তাদের মাঝে। এই জুটি ভাঙে এসে ৩৮তম ওভারে। ততক্ষণে দলের সংগ্রহ দ্বিশতক ছুঁয়ে ফেলেছে।

১৩৮ রানের এই জুটি ভেঙেছেন হারিস রউফ, ফিরিয়েছেন ইশানকে। শতকের পথে থাকা এই ব্যাটার আউট হয়েছেন ৮১বলে ৮২ রান করে। ২০৪ রানে পঞ্চম উইকেট পতনের পর জাদেযাকে নিয়ে হাল ধরেন হার্দিক, নিজেও এগিয়ে যেতে থাকেন শতকের দিকে।

তবে এরপরেই ফের দৃশ্যপটে শাহিন শাহ আফ্রিদি। আবারো ভারতের জন্য হুমকি হয়ে উঠেন তিনি। একই ওভারে ফেরান হার্দিক ও জাদেযাকে। তার জোড়া শিকারে ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। হার্দিক ৯০ বলে ৮৭ আর জাদেযা আউট হন ২২ বলে ১৪ রানে। ৪৪ ওভারে ভারতের সংগ্রহ তখন ২৪২/৭।

সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার আগেই পরের ওভারের প্রথম বলে নাসিম শাহর আঘাত। শার্দুল ঠাকুরকে ফিরিতে ম্যাচে প্রথম উইকেট তুলে নেন তিনি। ৩ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে যেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় পাকিস্তান।

বাকি কাজটাও সারেন নাসিম শাহ। ফেরান কুলদিপ যাদব আর জাসপ্রিত বুমরাহকে। যদিও শেষদিকে এসে জাসপ্রিত বুমরাহ ১৪ বলে করেন ১৬ রান। শাহিন আফ্রিদি ৩৫ রানে ৪, নাসিম শাহ ৩৬ রানে ৩ ও হারিস রউফ ৫৮ রানে নেন ৩ উইকেট।

জবাবে আর ব্যাট করতে নামা হয়নি পাকিস্তানের। ইনিংস বিরতিতে নামে মুষলধারে বৃষ্টি। যা নির্ধারিত সময় পেড়িয়ে গেলেও শেষ হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি।