জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরে অবস্থা সংকটাপন্ন। তিনি বর্তমানে তাঁর জন্মস্থান রাজশাহীতে আছেন। এখন তিনি বোন শিখা বিশ্বাসের বাসায় আছেন। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। তবে শারীরিক অবস্থা ক্ষণে ক্ষণে খারাপের দিকেই যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে আজ রোববার সোয়া চারটায় কথা বলা হয় তাঁর পারিবারিক চিকিৎসকের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তাঁর পাশেই আছি। তাঁর অবস্থা সংকটজনক। তিনি খুবই কষ্ট পাচ্ছেন। সবাই দোয়া করবেন, সৃষ্টিকর্তা তাঁর কষ্টটা যেন কমিয়ে দেন।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি দুঃখের সঙ্গে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এমনিতেই তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তায় আছি, এমন গুজব ছড়ানোর কারণে আমাদের ওপর আরও মানসিক চাপ পড়ে। প্লিজ, এসব যেন মানুষ না ছড়ায়।’
এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তাঁর শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে এন্ড্রু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এন্ড্রু কিশোরের খুব জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘পদ্মপাতার পানি’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল’ প্রভৃতি। এন্ড্রু কিশোর আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।