এক দিনে ৯ ইসরায়েলি সৈন্য নিহত :  ইসরায়েলে হামাসের টানেল

 

বাংলাদেশ ক্রনিকাল ডেস্ক : গাজায় ঢুকে স্থল অভিযান চালাতে গিয়ে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরাইল। হামাসের সাথে যুদ্ধে সেনা হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। ইসরাইলের হারেৎজ পত্রিকা জানিয়েছে, গাজায় স্থল অভিযানের সময় মঙ্গলবার ৯ জন সৈন্য নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এর আগের দিন মারা যায় আরো ২ জন সৈন্য। স্থল অভিযান শুরুর পর মোট ১১ জন মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করলো ইসরাই। তবে এ সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, হামাস যোদ্ধাদের সাথে ইসরাইলি সেনাদের মুখোমুখি যুদ্ধে বেশির ভাগ সৈন্য মারা যায়। এ সময় হামাসের দুজন কমান্ডার নিহত হয়েছে বলে দাবি করলেও হামাস তা অস্বীকার করে বলেছে তাদের কোনো কমান্ডার মারা যাননি।

ইসরাইলি সেনারা মঙ্গলবার গাজা উপত্যকার ৫ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়লে হামাসের যোদ্ধাদের সাথে তীব্র যুদ্ধ হয়। এই লড়াইয়ে ইসরাইলি এক সৈন্যকে হত্যা এবং ট্যাঙ্ক ও সাজোয়াযান ধ্বংস করার কথা জানিয়েছে হামাস। এক বিবৃতিতে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডস বলেছে, তাদের যোদ্ধারা গাজা শহরের উত্তর-পশ্চিমে ইসরাইলি বাহিনীর সাথে লড়াই করছে। এই লড়াইয়ে হামাস যোদ্ধাদের ছোড়া গোলার আঘাতে এক সৈন্য নিহত এবং একটি ট্যাংক ও বুলডোজার ধ্বংস হয়েছে।

হামাস বলছে, তাদের যোদ্ধারা উত্তর গাজায় ইসরায়েলের তিনটি সাঁজোয়া যান এবং ইরেজ ক্রসিংয়ের পূর্ব দিকে আরেকটি সাঁজোয়া যান গোলাবর্ষণ করে ও বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করেছে। আল-কাসাম ব্রিগেডস ইসরাইলি সৈন্যদের সাথে তাদের যোদ্ধাদের সংঘর্ষের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, গাজার উত্তরাঞ্চলের একটি সীমান্ত ক্রসিংয়ের কাছে ইসরাইলি বাহিনীর সাঁজোয়া যানে গোলাবর্ষণ করছে যোদ্ধারা।

২.
মিসরের সিনাই উপদ্বীপে গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনিকে স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করার ইসরাইলি পরিকল্পনা নিয়ে মিসরের সাথে ইহুদিবাদী দেশটির উত্তেজনা এখন তুঙ্গে । আল জাজিরা ও ডেইলি সাবাহর খবরে বলা হয়েছে, গাজায় অভিযান চলাকালে ফিলিস্তিনিদের সিনাই উপদ্বীপে সরিয়ে নিতে যুদ্ধকালীন পরিকল্পনা তৈরি করেছে নেতানিয়াহু সরকার। দেশটির গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। এব্যাপারে মিসরকে রাজী করাতে দেশটির উপর চাপ সৃষ্টির জন্য ইউরোপের প্রতি আহবান জানিয়েছে ইসরাইল। ইহুদিবাদী দেশটির সরকারি দফতরের ১৩ অক্টোবরের একটি নথির বরাত দিয়ে এসব খবর প্রকাশ হয়েছে।

গাজাকে জনশূন্য করার এই ইসরাইলি কূটকৌশল নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ কায়রো। দেশটির সরকার বলছে, গাজার লাখ লাখ বাসিন্দাকে মিসরের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করছে ইসরাইল। সিনাই উপদ্বীপ রক্ষার জন্য মিসর প্রস্তুত রয়েছে বলে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছে প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল সিসি’র সরকার। এর ফলে মিসরের সাথে ইসরাইলের যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ইসরাইলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে গাজাবাসীকে সিনাইয়ের উত্তরাঞ্চলে সরিয়ে নেবে তেলআবিব। পরবর্তীতে তাদের কোনো এক স্থায়ী শহরে নেয়া হবে। এই প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে সিনাই নিয়ে কায়রোর সাথে ইসরাইলের বহু বছরের পুরনো বিরোধ ফের চাঙ্গা হয়ে উঠছে। সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলটিকে যেকোনো মূল্যে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছে মিসর সরকার। তারা বলছে, জীবনের বিনিময়ে হলেও তারা সিনাইকে রক্ষা করবে।

মিসরের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা মাদবোলি বলেছেন, সিনাইয়ের এক কণা বালুর জন্যও লাখো মিসরীয় জীবন দিতে প্রস্তুত। তারপরও কাউকে আমাদের ভূখন্ডের ধারে-কাছে ঘেঁষতে দেবো না। মিসরের ওপর কিছু চাপিয়ে দিয়ে আঞ্চলিক সমস্যা সমাধান করতে দেয়া হবে না।

৩.

গাজা উপত্যকায় গত তিন সপ্তাহ ধরে ইসরাইলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে ইসরাইলে মঙ্গলবার দক্ষিণ ইসরাইলের এইলাত শহরে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। তারা ‘বিপুলসংখ্যক’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। এর আগে মঙ্গলবার ইসরাইলের এইলাত শহরের আকাশে শত্রুপক্ষের আকাশযানের উপস্থিতি টের পেয়ে সতর্ক সাইরেন বেজে ওঠে। ইসরাইলি বাহিনী সেটিকে গুলি করে লোহিত সাগরে ভূপাতিত করে ।

হুতির সামরিক শাখার মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরাইলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এইলাত শহরে এই হামলা চালানোর হয়। এটা ইসরাইলে তাদের তৃতীয় দফার বিশেষ অভিযান ছিল। গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই বিশেষ অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন ইয়াহিয়া সারি।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন জানিয়েছে, এর আগে গত ১৯ অক্টোবর ইসরাইল লক্ষ্য করে ইয়েমেন থেকে তিনটি ক্রুজ মিসাইল ও কয়েকটি ড্রোন হামলা করেছিল হুতি বিদ্রোহীরা। মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধ জাহাজ সেগুলো সাগরে ধ্বংস করে দেয় বলে পেন্টাগণের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

ইসরাইলের ভেতরেও হামাসের টানেল আছে বলে দাবি করেছেন ইরানি সেনাবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাঘেরি। তিনি বলেছেন, গাজা উপত্যকার উত্তর অংশের নিচে ৪শ কিলোমিটার পর্যন্ত হামাসের সুড়ঙ্গ আছে। ইসরাইলের ভেতরেও ওই সুড়ঙ্গের প্রবেশপথ আছে বলে জানিয়েছেন জনারেল বাঘেরি।

তেহরানে নাগরিক প্রতিরক্ষাবিষয়ক এক সম্মেলনে মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাঘেরি বলেছেন, ইসরাইলের ভিতরে তৈরি করা ঐ টানেলগুলো দিয়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন যেতে পারে। ইরানের তাসনিম নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে টাইমস অফ ইসরাইল একথা জানিয়েছে।

৪.
গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে গতকাল মঙ্গলবার ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত ও আহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৪ শ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। এই শরণার্থী শিবিরে বিমান বোমা হামলা চালানোর কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। জাবালিয়া শিবিরে নিহতদের নিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৮ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যাানিয়েল হাগারি বলেন, তাদের যুদ্ধবিমান জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে বোমা ফেলেছে। সেখানে হামাসের কামান্ডারেরা লুকিয়ে ছিলেন। হামলায় হামাসের সিনিয়র কমান্ডার ইব্রাহিম বিয়ারি নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন ড্যানিয়েল হাগারি। তিনি জানান, ইব্রাহিম ছাড়াও হামাসের আরও কয়েকজন কমান্ডার ঐ হামলায় নিহত হয়েছেন। তাঁদের হত্যা করার জন্যই শারণার্থী শিবিরে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

তবে ইসরাইলের এ দাবি নাকচ করে দিয়ে হামাস জানিয়েছে, সেখানে তাদের কোনো কমান্ডার ছিলেন না। বরং ইসরাইলি বাহিনী বেসামরিক মানুষের ওপর বোমা হামলা করেছে। হামাসের দাবি, এ হামলায় জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে থাকা অন্তত ৪শ মানুষ নিহত হয়েছেন। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলার প্রতিবাদে অধিকৃত পশ্চিমতীর ও জর্ডানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে গতকাল। পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিনিরা আজ বুধবার বিক্ষোভ দিবস পালনের ঘোষণা দিয়েছে। সৌদি আরব, কাতারসহ কয়েকটি আরব দেশ জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি খবর দিয়েছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য হাহাকার চলছে। এক গ্লাস পানির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন পিপাসার্ত ফিলিস্তিনিরা। এক ফোঁটা বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে প্রতিদনই তাদেরকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে জীবন বাঁচাতে তাদেরকে বাধ্য হয়ে পান করতে হচ্ছে অনিরাপদ পানি। ছড়িয়ে পড়ছে পেটের পীড়াসহ নানা অসুখ। গাজার এ পরিস্থিতিতে গোসল করাও হয়ে উঠেছে রীতিমতো বিলাসিতা। গোসল করতে না পেরে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন উপত্যকার ফিলিস্তিনিরা।৫.

গাজা উপত্যকায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যার প্রতিবাদে ইসরাইলে সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিন আমেরিকার আরো দুই দেশ চিলি ও কলম্বিয়া। তারা ইসরাইল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতও প্রত্যাহার করেছে। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরাইল ফিলিস্তিনি গণহত্যা বন্ধ না করলে দেশাটর সাথে কোন সম্পর্ক রাখবে না কলম্বিয়া। চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বরিক ফন্টও একই কথা বলেছেন। এর আগে দক্ষিন আমেরিকার আরেক দেশ বলিভিয়া ইসরাইলের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

বলিভিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রেডি মামানি ইসরাইলের সমালোচনা করে সাংবাদিকদের বলেন, গাজায় ইসরাইল আক্রমণাত্মক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ করে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে। এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বলিভিয়া সরকার গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে গাজাবাসীর জন্য সহায়তা পাঠানোর ঘোষণাও দিয়েছে দেশটি। ২০১৯ সালে দেশ দুটি কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সমর্থনে গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে ইসরাইল। ইসরাইলকে থামাতে হবে। গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধে জড়িত অপরাধীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমাদের আলোচনা আব্যাহত আছে। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে করা এক মন্তব্যে একথা বলেন এরদোয়ান।

ইসরাইল গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করার পর থেকেই ইহুদিবাদী দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর নিয়েছেন এরদোয়ান। তিনি নির্বিচার বিমান হামলার শুরু থেকেই বলে আসছেন যে, হামাস শাসিত গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা না বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব রয়েছে। এটা মানবতার জন্য লজ্জার বিষয় বলেও মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবিলম্বে গাজা উপত্যকায় অস্ত্রবিরতি কার্যকরের উদ্যোগ না নিলে ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাকে সমর্থন, অনুদান ও ভোট না দেয়ার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম ও আরব-আমেরিকান নাগরিকদের কয়েকটি সংগঠন। এক খোলা চিটিতে তারা এই হুমকি দিয়েছেন।

খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে প্রার্থী ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলাকে সমর্থন করবেন তার প্রার্থীতা অনুমোদন, সমর্থন ও ভোট না দেয়ার জন্য মুসলিম, আরব ও বন্ধুপ্রতীম গোষ্ঠিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার অঙ্গিকার করছি আমরা।’

খোলাচিঠিতে বাইডেনের উদ্দেশ্যে বলা হয়, ‘গাজায় ইসরাইলের হামলায় আপনার প্রশাসন নি:শর্ত সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে। আপনার প্রশাসনের এই সহযোগিতা ইসরাইলকে গাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যায় উৎসাহিত করছে। এ বিষয়টি আপনার প্রতি ভোটারদের আস্থাকে বিনষ্ট করেছে। এই ভোটাররাই এর আগে আপনাকে সমর্থন করেছিলেন।

৬.
চীন তাদের বৈশ্বিক মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণ থেকে রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইলের নাম মুছে দিয়েছে। গত সোমবার চীনের শীর্ষ দুই কোম্পানি বাইদু এবং আলিবাবা’র প্রকাশ করা মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণে নেই ইসরাইলের কোন নাম-চিহ্ন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রথম এ ব্যাপারটি খেয়াল করে। মার্কিন এই সংবাদমাধ্যমটি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনা মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণে লুক্সেমবার্গের মতো ক্ষুদ্র দেশের নাম আছে, কিন্তু ইসরাইলের নাম নেই।

চীনের অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীও ইসরাইল রাষ্ট্রের নাম না থাকার বিষয়টি ব্যাপারটি লক্ষ্য করেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরও মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণনটি একই রকম আছে। চীনের ভেতরেও এ ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই মানচিত্রে ইসরাইলের নাম না থাকার পেছনে বেইজিংয়ের রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। যদিও ঐতিহাসিকভাবে ইহুদিদের প্রতি চীনের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক।

বৈশ্বিক মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণ থেকে ইসরাইলকে বাদ দিতে চীনের সরকারি পর্যায় থেকে কোনো নির্দেশ রয়েছে কি না তা জানতে চাওয়া হয় বাইদু এবং আলিবাবা কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু চীনা প্রতিষ্টান দুটির কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।