চট্টগ্রাম নগরীর খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী ঋণখেলাপি মোহাম্মদ আবুল বশরের প্রতি প্রশ্নবিদ্ধ বিরল মহানুভবতা দেখিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। তাঁর ৫০ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করা হয়েছে। একই সঙ্গে আসল ৫৮ কোটি টাকা আদায়ে ৯ বছরে ১৯ কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দিয়েছে বেসরকারি ব্যাংকটি।
তবে এ বিষয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছেন আদালত। একই সঙ্গে সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো সার্কুলারের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে কিনা এবং নালিশি ঋণের টাকা পাচার হয়েছে কিনা– দু’জন যুগ্ম পরিচালকের সমন্বয়ে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের নির্বাহী পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, নগরের প্রাইম ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে আবুল বশরকে ২০১৪ সালের মার্চে ৫৮ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে। ১৬ শতাংশ সুদে চিনি ও গমসহ ভোগ্যপণ্য ব্যবসার জন্য এ ঋণ সুবিধা মঞ্জুর করা হয়। ৯০ দিন পরপর ঋণ পরিশোধের কথা ছিল। তবে তিনি কোনো টাকা ফেরত দেননি। এ অবস্থায় ২০১৬ মার্চে ৭৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে ব্যাংকটি।
পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৪৯ কোটি ১৪ লাখ টাকার বেশি সুদ মওকুফ করে দিয়ে ৫৮ কোটি টাকা আদায়যোগ্য দায় নির্ধারণ করে। অন্যদিকে সম্পূর্ণ বিনা সুদে মূল টাকা ২০২৪ থেকে ২০৩৩ সালের মধ্যে ছয় মাসের ১৯টি কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ সালের ২৫ জুন এবং ২০২২ সালের ১৬ মে মঞ্জুরিপত্র দিয়ে সুদ মওকুফ করা সত্ত্বেও বিবাদী সে অনুযায়ী ঋণের টাকা ফেরত দেননি। ৫৮ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের পর ৫ বছর পর্যন্ত কোনো টাকা পরিশোধ না করায় প্রতীয়মান হয়, বিবাদী বশর একজন ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। তাঁকে ঢালাওভাবে সুদ মওকুফ সুবিধা দেওয়া ন্যায়সংগত হয়নি। এ অবস্থায় উল্লিখিত প্রক্রিয়ায় ঋণ মওকুফের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
samakal