একাত্তরের মতো ভারতসহ কিছু বন্ধু এবারো আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে -ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দুঃসময়ে, একাত্তরে পাশে দাঁড়িয়েছে। সেই ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের খেলা, একাত্তরেও এই খেলা চলেছিল। এই অশুভ খেলায় একাত্তরের মতো ভারতসহ কিছু বন্ধু এবারো আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটা হলো ভারতের অপরাধ। সে ভারতীয় পণ্য বর্জন করতে বলে। ভারতীয় পণ্য যারা বর্জন করতে বলে, তাদের রান্নাঘরে ভারত, তাদের ড্রেসিং রুমে ভারত, তাদের শোবার ঘরে ভারত। এটা হলো বাস্তবতা। রাজনীতির এই নোংরা খেলা পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যে অশুভ খেলা ভারত বিরোধিতা, ঠিক একই অশুভ খেলা আবার শুরু হয়েছে। সবকিছু হারিয়ে বিএনপি এখন ভারত বিরোধিতায় নেমেছে।

   অ্যান্টি ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিভ্রান্ত হবেন না। কিছু করার ক্ষমতা তাদের নেই। আজকে নেতারা যখন একে একে জেল থেকে ছাড়া পেলো, তখন বলে ৮০ শতাংশ নেতাকর্মী নাকি কারাগারে নির্যাতিত হয়েছে। গতকাল রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত রংপুর বিভাগীয় মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সঠিক পথে আছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে যে যেটাই বলুক, ভেতরের খবর আমরা জানি। 

আর্থিক বিভিন্ন সূচকে আমাদের অবস্থান আমরা জানি। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্টেবল, আমাদের এখন আশঙ্কা করার কোনো কারণ নেই। আপনারা অপপ্রচার-মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নির্যাতিত নেতাকর্মীর তালিকা প্রকাশ করার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমাদের আজকে নিজেদের মনে রাখতে হবে, আপন ঘরে যার শত্রু তার শত্রুতা করার জন্য বাইরের শত্রুর দরকার হয় না। আপন ঘরের শত্রু তাড়াতে হবে। আপন ঘরে শত্রু রেখে আমরা কোনো দিনও আমাদের লক্ষ্য, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লড়াই সফল হবে না। ঘরের সমস্যা ঘরে সমাধান করা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঘরের মধ্যে যদি আমরা একে অপরের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করি; কিছু কিছু ঘটনা জাতীয় নির্বাচনের পরে বিভিন্ন জায়গায় ঘটে গেছে। এর পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয় সে ব্যাপারে আমি সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করবো। উপজেলা নির্বাচনে এমপিরা হস্তক্ষেপ করতে পারবে না: এদিকে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা হস্তক্ষেপ করতে পারবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে এমপিরা নিজের লোক জেতাতে প্রভাব বিস্তার করলে দল কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না।

নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের অনুরোধে উপজেলা নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এর আগে আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে নৌকা দিয়েছি। এবার উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কতোটা প্রতিযোগিতামূলক, কতোটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে তা দেখা যাবে। এই উদ্দেশ্য ব্যাহত করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা যারা করতে চায় করুক। ইলেকশন সম্পূর্ণভাবে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতে চাই। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। নির্বাচনের আগে অনেক আশঙ্কা, আতঙ্ক ছিল, তা নির্বাচনের মধ্যদিয়ে কেটে গেছে। সারা বিশ্ব নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেছে। ৮০টি দেশ শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তার সঙ্গে ৩২টি সংস্থা অভিনন্দন জানিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আওয়ামী লীগের মতো বড় দলে কখনো কখনো কিছু সমস্যা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বাধাগ্রস্ত করে বলে মন্তব্য করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা এবার প্রথম থেকেই আটঘাট বেঁধে নামতে চাই। নির্বাচনের পর থেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রমে আমরা নজর দিয়েছি। কিছু কিছু জেলায় সমস্যার ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। যার যেমন খুশি যখন তখন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখবেন সেটার দায়িত্ব দল গ্রহণ করবে না। একটা-দুটা বক্তব্য পুরো দলের শৃঙ্খলার উপর আঘাত হানে। তাতে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে। জেলার সঙ্গে উপজেলা, উপজেলার সঙ্গে ইউনিয়নের সাংগঠনিক সেতু তৈরি করতে হবে। আমাদের যেখানে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় ওয়াল আছে তা ভেঙে দিতে হবে।’ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

manabzamin