ঋণ করে হলেও হেলিকপ্টার চায় পুলিশ

ঋণ করে হলেও হেলিকপ্টার চায় পুলিশ

ছবি: দ্য মিরর এশিয়া

চলতি অর্থবছরের শেষ সপ্তাহে এসে রাশিয়া থেকে হেলিকপ্টার কেনার ৩০ শতাংশ ঋণপত্র মূল্য বা ১৭৭.০৩ কোটি ছাড় করার আবদার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

তবে এতে বাধ সেজেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সরকারের কৃচ্ছ্রতাসাধন নীতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন দুই তারকাখচিত মধ্যম মানের কেনা-কাটার অর্থ ছাড় করতে চায় না মন্ত্রণালয়।

২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে চালু হয়েছে পুলিশের এভিয়েশন উইং। এই উইংয়ের জন্য সরকারকে কিস্তিতে হেলিকপ্টার কিনতে হচ্ছে, যেহেতু ডলার সংকট।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আগামী ছয়মাস দেশে সংকোচন নীতিতে কেনাকাটাসহ প্রশাসন এবং উন্নয়ন কার্যক্রম চলবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তার এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগ ৩০ শতাংশ ঋণপত্র খোলার জন্য অর্থ চেয়ে বাংলাদেশ পুলিশের এই প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

প্রস্তাব থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ পুলিশের আকাশযান খাতে ১৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। সেখান থেকে রাশিয়ার জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টার্স কোম্পানির জন্য ঋণপত্র খুলতে ১৭৭.০৩ কোটি টাকা ছাড় করার কথা বলা হয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে দুটি জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টারের জন্য তহবিল বরাদ্দের সুযোগ নেই। সে কারণে চলতি অর্থবছরেই বরাদ্দের আবদার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

রাশিয়ান কোম্পানিটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আগামী আগস্ট মাসে রাশিয়ান এমআই-১৭১এ২ হেলিকপ্টার দুটি সরবরাহ করবে। ইতোমধ্যে পুলিশের পাইলট এবং কমকর্তারা রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ এবং স্টেজ ইনসপেশন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তারা হেলিকপ্টারগুলোর টেস রান এবং প্রি শিপমেন্ট ইনসপেশনের জন্য রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।

পুলিশের এভিয়েশন উইংয়ের কার্যক্রম দেখাতে ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়রুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় পলাতক দুজন আসামি গ্রেপ্তারে হেলিকপ্টার নিয়ে খাগড়ছড়ি-চট্টগ্রামে সাঁড়াশি অভিযানে নামে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপিসহ বিরোধী দলের জনসভা ছত্রভঙ্গ করার জন্য কার্যকর ভূমিকা রেখেছিল শান্তিনগরের বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ছররা গুলিবর্ষণ। এবার বিএনপিসহ বিরোধী দলের জনসভায় রাশিয়া থেকে কিনে আনা হেলিকপ্টার থেকে তা করতে চায় পুলিশ। তা হলে বিরোধী দলের মানুষজনকে হেলিকপ্টার দিয়ে ওপর থেকে চিহ্নিত করা সহজ হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান দ্য মিরর এশিয়াকে বলেন, টহল দেওয়া পুলিশের হেলিকপ্টারকে গানশিপে পরিণত করতে চায় কর্তৃপক্ষ। এটি পুলিশ আইনেই মানবাধিকার লঙ্ঘন। আর্মিদের ক্ষেত্রে এটা হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, একটা আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ দেশ থেকে কীভাবে কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়া পুলিশের জন্য আকাশযান কিনছে সরকার? ওই দুইটি হেলিকপ্টার সংগ্রহ করতে ২০২১ সালে চুক্তি করে সরকার। হেলিকপ্টারগুলো কিনতে সরকারের খরচ হচ্ছে ৪২৮ কোটি টাকা ১১ লাখ টাকা।

themirrorasia