ঋণখেলাপি হয়েও স্বপদে মধুমতি ব্যাংকের চেয়ারম্যান

রোহান রাজিব
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৫
> অর্থনীতি

ঋণখেলাপি হয়েও স্বপদে মধুমতি ব্যাংকের চেয়ারম্যান

রোহান রাজিব
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৫

মধুমতি ব্যাংকের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর এনআরবিসি ব্যাংক ও উত্তরা ফাইন্যান্স থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করছেন না। ফলে প্রতিষ্ঠান দুটি তাকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ঋণখেলাপি হয়ে পড়ায় এনআরবিসি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগও করেছে। ঋণখেলাপি হলেও হুমায়ুন কবীর মধুমতি ব্যাংকের পরিচালক পদে বহাল রয়েছেন।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, ঋণখেলাপি কেউ ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন না। কিন্তু পরিচালক পদে থাকা কেউ ঋণখেলাপি হলে তাকে অপসারণ করতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অবশ্য খেলাপি ঋণ নিয়মিত হলে তিনি আবার পরিচালক হতে পারবেন। তবে কেউ ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হলে খেলাপি থেকে অব্যাহতির ৫ বছর পার না হওয়া পর্যন্ত আর পরিচালক হতে পারবেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) তথ্য অনুযায়ী, হুমায়ুন কবীরের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নর্দান হেচারির অনুকূলে এনআরবিসি ব্যাংকে বর্তমানে প্রায় ১১৩ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। আর উত্তরা ফাইন্যান্সে একই প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ প্রায় ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা রয়েছে। এনআরবিসি ব্যাংক গত জুলাই মাসে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৭ ধারায় নোটিস দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিষয়টি জানিয়েছে। নর্দান হেচারির পরিচালক হুমায়ুন কবীর। একই সঙ্গে ঋণের গ্যারান্টারও তিনি।

এই ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো পরিচালক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হন এবং দুই মাস সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও ঋণ বা কিস্তি পরিশোধ না করেন, তবে তার পরিচালক পদ শূন্য হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই নোটিস জারি করে ঋণ পরিশোধের নির্দেশ দিতে পারে।

জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুল আলম খান আমার দেশকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি ঋণখেলাপি। আমরা নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে নোটিস দিয়েছি।

সিআইবি তথ্য অনুযায়ী, হুমায়ুন কবীর নিজ ব্যাংক মধুমতি থেকেও ঋণ নিয়েছেন। তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ইনসেক্টিসাইড এন্টারপ্রাইজ বাংলাদেশ লিমিটেডের ঋণ রয়েছে ৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ঋণের মেয়াদ গত বছরের ১৯ নভেম্বরে শেষ হলেও ব্যাংক এখনো এই প্রতিষ্ঠানকে খেলাপি না করে নিয়মিত দেখাচ্ছে। এছাড়া ঢাকা আইসক্রিম নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ১১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার ঋণের গ্যারান্টারও তিনি।

ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মধুমতি ব্যাংকে চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীরের এক কোটি ৫৫ লাখ ৮ হাজার ৫০০টি শেয়ার রয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মধুমতি ব্যাংকের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর আমার দেশকে বলেন, আমি নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করছি। আমার কাছে এ ধরনের কোনো নোটিস এখনো আসেনি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আমার দেশকে বলেন, কোনো পরিচালক নিজ ব্যাংক বা অন্য ব্যাংকে যদি খেলাপি হন, আর তা যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসে, তখন তা যাচাই-বাছাই করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে যদি প্রমাণ পাওয়া যায় ওই ব্যক্তি ঋণখেলাপি তাহলে বিধি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here