উত্তাল ঢাবি, মধ্যরাতে মিলল রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোতে সব ধরনের প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতে ছাত্রদলের হল কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের তীব্র বিক্ষোভের মুখে এ সিদ্ধান্ত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, গত বছরের ১৭ জুলাইয়ের পরিপত্র অনুসারেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার সকালে। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়, যা দিনভর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং আবাসিক হলগুলোতে ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হলের ছাত্রীরাও মিছিলে যোগ দিলে বিক্ষোভের মাত্রা বাড়ে। রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে রাত ২টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ বাসভবনের সামনে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনার পর উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্রে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাইয়ের প্রভোস্ট কমিটির সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে এবং হলে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’

তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এই ঘোষণায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তারা ‘না, না’ বলে স্লোগান দিয়ে এর বিরোধিতা করেন এবং হলে ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধের দাবিতে অটল থাকেন। একই সঙ্গে তারা ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিভিন্ন হলে শিবিরের কথিত গুপ্ত কমিটির বিষয়ে তদন্তেরও দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে অবশেষে প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ চূড়ান্ত ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে সব ধরনের প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে।’

প্রক্টরের এই ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন এবং ‘এই মুহূর্তে খবর এল, হল পলিটিকস নিষিদ্ধ হলো’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর রাত ৩টার দিকে তারা শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ হলে ফিরে যান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here