উত্তর রাখাইন থেকে সেনাদের সরিয়ে নিচ্ছে মিয়ানমার: আরাকান আর্মি

জান্তা সেনাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও যানবাহন জব্দ করেছে আরাকান আর্মি
জান্তা সেনাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও যানবাহন জব্দ করেছে আরাকান আর্মিছবি: স্ক্রিনশট থেকে নেওয়া

 

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চল থেকে সেনাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে জান্তা সরকার। একই সঙ্গে রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা জোরদার করছে তারা। মিয়ানমারের সর্বপশ্চিমের এই রাজ্য হারাতে চলেছে বুঝতে পেরে তারা এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) এসব কথা বলেছে।

গতকাল রোববার রাখাইনের মিয়েবন শহরে দুটি তল্লাশিচৌকি থেকে সেনাদের হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়ার পর আরাকান আর্মি এ বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিরাপত্তার জন্য এসব সেনাকে দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আরাকান আর্মির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জান্তার সেনাবাহিনী এটা নিশ্চিত হয়ে গেছে যে আমাদের প্রতিরোধ করতে গেলে তারা পরাজিত হবে। সে কারণে আমরা যেসব শহর দখলের লক্ষ্য নিচ্ছি, সেগুলোর তল্লাশিচৌকি ও ঘাঁটি পুড়িয়ে দিয়ে সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে তারা।’

আরাকান আর্মি জানিয়েছে, জান্তা সেনারা গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মিয়েবন শহরের ৪০২ ও ৪০৮ তল্লাশিচৌকির ভেতরে তাঁদের মজুত অস্ত্র ও গোলাবারুদ ধ্বংস করেন। তল্লাশিচৌকির যেসব অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব, তাঁরা সেগুলো নিয়ে গেছে।

দুটি তল্লাশিচৌকির সেনাদের হেলিকপ্টারে করে রাখাইনের উত্তরাঞ্চল থেকে রাখাইনের দক্ষিণাঞ্চলের অ্যান শহরে জান্তার পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। আরাকান আর্মি বলেছে, এই দুই ঘাঁটি থেকে চার দফায় সেনাদের সরিয়ে নিয়েছে জান্তা বাহিনী।

জান্তা সেনারা দক্ষিণ রাখাইনের রামরিতে অনবরত বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছেন। আকাশ, নৌ ও স্থলপথে শহরটিতে হামলা চালাচ্ছেন তাঁরা।

গত শনিবার বিমান হামলা ও গোলার আঘাতে চার নম্বর কিং তাই ওয়ার্ডের অন্তত ১৫০টি ঘর পুড়ে গেছে। থেইম তং প্যাগোডা হিল থেকে গতকালও রামরি শহরে কামানের গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে।

মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জান্তাবিরোধী এ তৎপরতা শুরু হয়েছিল ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর। তখন থেকেই ভিন্নমতের ওপর চরম দমন–পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে জান্তা সরকার। এ অবস্থায় জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন অনেকে। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র বিদ্রোহীরাও।

গত বছরের অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের এই বিদ্রোহীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল দখলে নিয়েছে তারা।

প্রথম আলো