- গোলাম মাওলা রনি
- ২০ জুলাই ২০২০
টেলিফোনে একজন মহিলার কণ্ঠস্বর যে এত সুন্দর হতে পারে তা আপনারা যারা শোনেননি তাদের কিছুতেই বোঝাতে পারব না। আবার সেই কণ্ঠস্বর যে কত বিশ্রী শব্দমালা উচ্চারণ করতে পারে, তা কেবল ভুক্তভোগীরাই বলতে পারেন। ভদ্রমহিলা আমার মোবাইলে পরপর কয়েকবার ফোন দিলেন এবং প্রতিবারই ‘হ্যালো’ বলার পর বলতে থাকলেন- ‘কুুরুরে কাকুকা’ : তারপর খিলখিলিয়ে হাসতে লাগলেন। বিদেশী নম্বর থেকে আসা অদ্ভুত সেই মহিলার কথা শুনে আমার মধ্যে লজ্জা-ভয়-সঙ্কোচ একসাথে উথাল পাথাল শুরু করল। প্রথমত, আমি কুরুরে কাকুকার অর্থ যেমন বুঝি না, তেমনি ফোন নম্বরটি আমার পরিচিত নয়। দ্বিতীয়ত, জানি, আমার কথাবার্তা দেশের বিভিন্ন সংস্থা রেকর্ড করে থাকে। কাজেই কোনো ‘বিদেশী ফাঁদ’ মনে করে আমি বারবার ফোন কেটে দিলাম। এরপর ভদ্রমহিলা আমাকে ইংরেজিতে খুদে বার্তা পাঠিয়ে বললেন, ‘প্রিয় বন্ধু রনি! আমি ডা: জেন রুথ! তোমার সাথে জরুরি কথা বলতে চাই।’
ডা: জেন রুথের খুদে বার্তা পাওয়ার পর নড়েচড়ে বসলাম। কারণ যারা দুনিয়াতে ডা: জেন ইদানীংকালে খুবই নামকরা একজন ব্যক্তিত্ব। অথচ ২০১২ সালে যখন ম্যানিলাতে তার সাথে আমার পরিচয় এবং বন্ধুত্ব হয়েছিল, তখন জেনের পরিচিতি ছিল না বললেই চলে। তার চেয়ে বরং ভুটানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের গোলাম মাওলা রনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিশ্বের স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আমলাদের মধ্যে ব্যাপক চমক সৃষ্টি করেছিল। ফলে একেকটি সম্মেলনের একেকটি পর্ব শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা আমার সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়লেন যাদের মধ্যে ডা: জেন অন্যতম। জেনের বয়স আর আমার বয়স প্রায় কাছাকাছি। অধিকন্তু তার মেধাদীপ্ত অভিব্যক্তি এবং আন্তরিকতাপূর্ণ সরলতা আমাকে মুগ্ধ করল। ফলে উগান্ডার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনের সাথে আমার বন্ধুত্ব এত গভীর হলো যে, সম্মেলনের অনেকেই আমাদের বন্ধুত্ব নিয়ে ডিপ্লোম্যাটিক ভাষায় টিপ্পনি কাটতে শুরু করলেন।
সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে জানলাম, সব দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত হয়েছেন কেবল বাংলাদেশ ছাড়া। আমাদের দেশ থেকে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার যে ভদ্রলোক গিয়েছেন তিনি দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তো দূরের কথা, তার নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে ইংরেজিতে কথা বলার যোগ্যতাসম্পন্নও ছিলেন না। আমি যেহেতু সরকারি দলের সংসদ সদস্য ছিলাম, সেহেতু আয়োজকরা আমাকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার প্রস্তাব দিলেন এবং আমার স্বাভাবিক দায়িত্বের বাইরে তাদের প্রস্তাবমতো অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলাম। ফলে উগান্ডার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: জেনের সাথে অতিরিক্ত কয়েকটি বৈঠক করতে গিয়ে দু’জনের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ব্যক্তিগত পর্যায়ে চলে এলো।
ডা: জেন রুথ ১৯৯৫ সাল থেকে সেই দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে তার বয়স ৫২ বছর। ১৯৯৫ সালে তিনি যখন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৭ বছর। তার এই নিয়োগ সম্ভব হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী রুগুন্ডার জন্য যিনি কেবল উগান্ডা নয়Ñ পুরো আফ্রিকা আর সাহারা অঞ্চলে একজন বিখ্যাত চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। অন্য দিকে, দেশটির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী প্রেসিডেন্ট কাগুতা ১৯৮৬ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেও এমনভাবে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ করেছেন যে, সরকার ও প্রশাসনের প্রতিটি বিভাগে যোগ্যতম লোকরাই নিরপেক্ষভাবে নিয়োগ পায় এবং স্বাধীনভাবে কাজ করে। উগান্ডা তখন আফ্রিকার রোলমডেল, যাদের মাথাপিছু আয় তিন হাজার ডলারেরও বেশি। পুরো আফ্রিকার দু’জন শ্রেষ্ঠ ডাক্তার তাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন অত্যন্ত সুনামের সাথে। ফলে করোনা সঙ্কট শুরু হওয়ার পর উগান্ডা যেভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে তা কেবল আফ্রিকা নয়- পুরো দুনিয়াতে প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং উগান্ডার এই সফলতার জন্য সবাই একবাক্যে সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: জেন রুথ এছিংকেই প্রশংসা করছেন।
ডা: জেনের সাথে আমার সম্পর্কের কথা স্মরণ করে মাঝে মধ্যে পুলকিত বোধ এবং করোনাকালে তার সফলতার জন্য রীতিমতো গর্ব অনুভব করতাম। কাজেই স্কাইপিতে তাকে পাওয়া মাত্রই অনুযোগ করে বললামÑ তুমি আমাকে ‘কুরুরে কাকুকা’ বলে কী বোঝাতে চেয়েছিলে? সে আরেক দফা হেসে আমাকে শব্দ দু’টির অর্থ জানাল। সে বলল, তুমি তো জানোÑ আমরা মূলত সরকারি কাজকর্ম ইংরেজিতে করে থাকি। আমাদের দেশের চার কোটি মানুষ যদিও চমৎকারভাবে ইংরেজি বলে, কিন্তু নিজেদের মধ্যে সবসময় কথা বলে স্থানীয় ভাষায়। অঞ্চলভেদে এবং জাতিভেদে আমাদের দেশে তিনটি ভাষা ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এগুলো হলোÑ সাওয়াহিলি, বান্টু এবং লুগান্ডা। ভাষা নিয়ে উগান্ডাবাসীর মধ্যে অতীতকাল থেকে বিরোধ চলে আসছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ইদি আমিন চেষ্টা করেছিলেন তার মাতৃভাষা সাওয়াহিলিকে রাষ্ট্রভাষা করতেÑ কিন্তু পারেননি। ফলে পরবর্তী সময়ে কোনো প্রেসিডেন্টই আর ভাষা নিয়ে বাড়াবাড়ি করেননি।
জেন আরো জানালেন, তিনি বান্টু ভাষাভাষী এবং তার যখন মন খুব খারাপ হয় অথবা তিনি যখন খুব ভালো মুডে থাকেন তখন তিনি মাতৃভাষায় কথা বলেন। তিনি কয়েক দিন ধরে পরিকল্পনা করেছিলেন, আমার সাথে আড্ডা দেবেন। তাই আজ সুযোগ পেয়ে আমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য ফোনে দুষ্টুমি করার চেষ্টা করছিলেন এবং আমি যে তার দুষ্টুমিতে ভড়কে গেছি, সেটা বুঝতে পেরে তিনি খুবই মজা পেয়েছেন। তিনি আমাকে যে শব্দ দুটি শুনিয়েছিলেন সেগুলো হলো বান্টু ভাষার সম্ভাষণমূলক বাক্য, যার অর্থ বন্ধু তুমি কেমন আছ? জেনের মুখে কুরুরে কাকুকার অর্থ শুনে বেশ আশ্বস্ত হলাম।
এবার আমি তাকে তার অনবদ্য সফলতার গুপ্ত রহস্য সম্পর্কে জানাতে বললাম। সে আমার আগ্রহ দেখে বেশ অবাক হলো এবং প্রাণ খুলে বলতে শুরু করে নিজের অতীত কাহিনী। ডা: জেনের আত্মজবানিতে সেই কাহিনীর চুম্বক অংশ আপনাদের জন্য তুলে ধরছিÑ আমি যখন ১৯৯৫ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলাম, তখন আমার শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক এবং প্রধানমন্ত্রী রুগুন্ডা আমার সাথে টানা কয়েক দফা বৈঠক করলেন। দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা, জনগণের চাহিদা, সরকারের সামর্থ্য এবং স্বাস্থ্য খাতের মাফিয়াদের সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিলেন। তিনি আমাকে বারবার যে কথাটি বলে সতর্ক করলেন সেটি হলোÑ এই খাতের মাফিয়ারা নিকৃষ্ট পশুর চেয়েও হিংস্র, বিবেকহীন এবং বিকৃত রুচিসম্পন্ন। সুতরাং তাদের দমন করতে অবশ্যই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জানোয়ারদের সাহায্য লাগবে। তিনি উদাহরণ হিসেবে জার্মানির স্বাস্থ্য খাতের সফলতা বর্ণনা করতে গিয়ে সেই দেশের মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ও শূকরের ব্যবহারের সফলতার কথা জানালেন। আমি খুব অবাক হয়ে ভাবছিলাম- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিভাবে এবং কেন কুকুর ও শূকর ব্যবহার করে?
প্রধানমন্ত্রী আমার মনের অবস্থা বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন, স্বাস্থ্য খাতের মাফিয়ারা এমন মনমানসিকতা ধারণ করে, যা স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে কল্পনাও করা সম্ভব নয়। কেবল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের মাধ্যমেই ওই মাফিয়াদের এমনভাবে শনাক্ত করা হয়, যা কেবল কুকুর এবং তার প্রশিক্ষক সাঙ্কেতিকভাবে বুঝতে পারে। ফলে ‘ডগ টেস্ট’ বলে পরিচিত থেরাপির মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিভাগকে মাফিয়ামুক্ত রাখা হয়। ডা: রুগুন্ডার কাছে কুকুর থেরাপি সম্পর্কে জানার পর শূকরের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলাম। তিনি মুখ গম্ভীর করে জানালেন, ‘মেডিক্যাল বর্জ্য যা পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং বিষাক্ত বর্জ্য- তাকে ব্যবহার করে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিবাজরা এমন সব কুকর্ম করে যা শনাক্ত করার জন্য প্রশিক্ষিত শূকরের কোনো বিকল্প নেই। কারণ শূকর হলো এমন প্রাণী, যারা সব বর্জ্যরে মধ্য থেকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসটি খুঁজে বের করে নিতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে লজ্জায় মাথা নিচু করে রইলাম এবং ভাবতে থাকলাম : আমাকে আগামী দিনগুলোতে কী কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে কর্মরত ভালো মানুষদের সাথে নিয়ে পশুরূপী মাফিয়াদের সাথে কিভাবে লড়াইটা করব, এমন কথা স্মরণ করা মাত্রই আমি এক ধরনের জোশ অনুভব করতে থাকি। আমার মধ্যে কেমন যেন একটা অলৌকিক বিদ্যুতের তরঙ্গ বয়ে গেল। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকালাম।
তিনি আমার মনের অবস্থা বুঝলেন, আমাকে সমর্থন দেয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালেন এবং আমার মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিলেন। সেই দিন থেকে আমি যে লড়াইটা শুরু করেছিলাম তা আজো চলছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে সফলতা লাভের পূর্বশর্ত হিসেবে সবার আগে নিজের এবং আমার পরিবারের দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করলাম। যখন অনুভব করলাম, আমি সপরিবারে সুস্থ, ঠিক তখনই অসুস্থ মানুষের জন্য কাজ শুরু করার অদম্য এক প্রেরণা লাভ করলাম। আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য আলাদা গোয়েন্দা ইউনিট চালু করেছি যারা শুধু আমার কাছে জবাবদিহি করে থাকে।
প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আমাদের দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট যদিও সব ব্যাপারে খবরদারি করার এখতিয়ার রাখেন, কিন্তু তারা কেবল আমার সাথেই কথা বলেন বা তাদের আদেশ-নিষেধ জারি করেন। স্বাস্থ্য খাতের কোনো লোক আমার দরজা পেরিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কামরায় উঁকি দিতে সাহস পায় না, তেমনি কর্তৃপক্ষও আমাকে বাদ দিয়ে মন্ত্রণালয়ের অধস্তন কারো সাথে সাক্ষাতের হীনম্মন্যতা দেখায় না। ফলে এক ধরনের কর্তব্যবোধে তাড়িত হয়ে আমার শরীর-মন-মস্তিষ্ক, বিবেক এবং আত্মাকে দেশ ও জাতির জন্য নিবেদন করে যাচ্ছি অবিরতভাবে। মন্ত্রণালয়ের কাজ করতে গিয়ে আমি মাঝেমধ্যে মাফিয়াদের দ্বারা অদ্ভুত সব বিপদ বিপত্তিতে পড়েছি। একবার আমাদের মন্ত্রিপাড়ায় মানুষের গলিত লাশের দুর্গন্ধ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ল। সরকারের গোয়েন্দা ইউনিটগুলো রীতিমতো পাগল হয়ে গেল। কারণ পুরো মন্ত্রিপাড়ার আনাচে-কানাচে লাশের বিশ্রী গন্ধ এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল যে, সবাই সপরিবারে সে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে অব্যাহত তদন্তের পর জানা গেল, কে বা কারা পুরো এলাকায় এক ধরনের বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত বায়ো কেমিক্যাল ছড়িয়ে দিয়েছে মন্ত্রীদের সপরিবারে ভয় দেখানোর জন্য। বায়োকেমিক্যালের উৎস এবং জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য যে কমিটি গঠিত হলো- তার প্রধান করা হলো আমাকে। আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা সদস্য এবং প্রশিক্ষিত কুকুর ও শূকরের সহযোগিতায় যেদিন অপরাধীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হলাম, সে দিন সারা দেশে ধন্য ধন্য রব পড়ে গেল।
ডা: জেন কথাগুলো বলার পর আমাদের দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করলেন। আমাদের বাংলাদেশের মাফিয়াদের শনাক্ত করার জন্য কোনো প্রশিক্ষিত শূকর বা কুকুর রয়েছে কি না, এই কথা বলার পরই সে আমাকে অবাক করে দিয়ে জিজ্ঞেস করলÑ ‘আচ্ছা! রিজেন্ট হাসপাতালের টাউট শাহেদ বা ডা: সাবরিনার কুকর্ম শনাক্ত করার কোনো ব্যবস্থা কি তোমাদের দেশে ছিল না?’ জেনের কথা শুনে রীতিমতো ঘামতে শুরু করলাম। মনে হলো, আমি হয়তো দুঃস্বপ্ন দেখছি। কারণ অস্বাভাবিক অবস্থায় আমি খুব ঘেমে যাই এবং আমার পেটের মধ্যে প্রবল বায়ুবেগ দেখা দেয়। আমি সম্বিত ফিরে পেতে চেষ্টা করলাম।
কারণ উগান্ডার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পক্ষে টাউট শাহেদের নাম কিংবা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা জানা অসম্ভব। আমি স্কাইপিতে ডা: জেনের মুখের দিকে মনোযোগসহকারে তাকানোর চেষ্টা করলাম এবং দেখলাম, আমার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে। কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম, ঠিক এমন সময় আমাদের পোষা বিড়ালটা ‘ম্যাও ম্যাও’ শব্দে লাফ দিয়ে আমার ওপর পড়ল এবং আমার দিবানিদ্রার দুঃস্বপ্নের ইতি ঘটে।