ইরাক ও সিরিয়ায় প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনী ও তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত মিলিশিয়াদের ৮৫টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে এই হামলা চালানো হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর আল-জাজিরার।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিক্রিয়া আজ থেকে শুরু হলো। আমাদের পছন্দমতো সময়ে ও জায়গায় এটি চলতে থাকবে।’
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানায়, দুই দেশের ৮৫টি বেশি লক্ষ্যবস্তুতে তাদের সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়েছে। একাধিক বিমান হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরপাল্লার বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানায় তারা।
গত সপ্তাহে সিরিয়া সীমান্তবর্তী জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র এই হামলা চালাল। প্রাণঘাতী সেই হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত এবং আরও ৪০ জনেরও বেশি সেনা আহত হয়েছিলেন।
ওই হামলার পর কঠোর প্রতিশোধের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরানের বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। অনুমোদনের পরদিনই দুই দেশে এ হামলা চালাল মার্কিন সামরিক বাহিনী।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনসহ অন্যান্য শীর্ষ মার্কিন নেতারা কয়েকদিন ধরে সতর্ক করে আসছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা আঘাত হানবে। এসময় তারা স্পষ্ট করে দেন, প্রতিক্রিয়া কেবল একটি আঘাতে হবে না, সময়ের সাথে সাথে বেশ কয়েকটি ‘স্তরে প্রতিক্রিয়া’ দেখানো হবে।
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড এবং তাদের সমর্থনকারী মিলিশিয়াদের সাথে যুক্ত ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে বলে চার মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন।
যদিও ইরানের অভ্যন্তরে কোনও অবস্থানকে লক্ষ্য করে হামলা করেনি যুক্তরাষ্ট্র, তারপরও গাজায় হামাসের সাথে ইসরায়েলের চার মাসের যুদ্ধের মধ্যে হওয়া এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই হামলার বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরে মার্কিন সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, হামলায় কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার, রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন স্টোরেজ সুবিধা, সেইসাথে লজিস্টিক এবং যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ চেইন সুবিধাসহ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে।
সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সাতটি অবস্থানে বিস্তৃত ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এই সাত স্থানের মধ্যে সিরিয়ার চারটি এবং ইরাকের স্থান তিনটি। এবং এই হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসা দূরপাল্লার বি-১ বোমারু বিমানও ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া বলেছে, সিরিয়ার মরুভূমি অঞ্চলে এবং সিরিয়া ও ইরাকি সীমান্তের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় ‘আমেরিকান আগ্রাসনের’ ফলে অনেক লোক নিহত এবং আহত হয়েছেন।