রংপুর
রংপুরে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ইভিএমের চেয়ে বড় সমস্যা নির্বাচন কমিশন নিয়ে। কারণ, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা নেই। সুতরাং তাদের যদি ইভিএম দেওয়া হয়, তাহলে সেটি আরও বড় সংকটের দিকে ঠেলে দেবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে রংপুর নগরের আরডিআরএস বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে নাগরিক সংলাপে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলছে, ইভিএম দিয়ে জালিয়াতি করা যায়, এটা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। আমরা বলছি, ইভিএম এমন একটা দুর্বল যন্ত্র, নিকৃষ্ট যন্ত্র যে এটা দিয়ে স্যুট-কোট-টাই পরে ভদ্রলোকেরা জালিয়াতি করতে পারেন। তিনি বলেন, এটা দিয়ে জালিয়াতি করতে পারে মূলত নির্বাচন কমিশন, তাদের কর্মকর্তা, তাদের কারিগরি টিম ও নির্বাচন কেন্দ্রে বা বুথে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা।’
সুজন সম্পাদক বলেন, ‘ইভিএমের বড় আরেক দুর্বলতা হলো, ভোট হয় ইলেকট্রিক্যাল আর ফলাফল তৈরি হয় ম্যানুয়ালি। এখানে অনেক সুযোগ আছে কারসাজির। সুতরাং এই ইভিএম আমাদের জন্য সঠিক নয়। আর বর্তমান বাজারমূল্য ও অর্থনৈতিক মন্দায় ৯ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম কেনা কোনোভাবেই সমুচিত হবে না।’
কোনো দলীয় সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সংবিধান সংস্কার করে ইসির অধীনে থাকা সংস্থাগুলো শক্তিশালী করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘কোনো দলীয় সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়েছে। তবে নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে, নাকি নির্বাচনকালীন সরকারের মাধ্যমে হবে তা নির্ধারণ করবে রাজনৈতিক দলগুলো। আমরা শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করছি। তা ছাড়া সংবিধান সংস্কার করে ইসির অধীনে থাকা সংস্থাগুলো শক্তিশালী করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।’
গাইবান্ধায় উপনির্বাচন বন্ধ করায় কমিশনকে সাধুবাদ জানালেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে না পারায় সমালোচনা করেন সুজন সম্পাদক। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্বাচন বন্ধ করা না। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা।
পরে আরডিআরএসের বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে সুজন জেলা ও মহানগর কমিটির আয়োজনে ‘কেবল অর্থনৈতিক সংস্কার নয়, সংকট সমাধানে প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে সুজন রংপুর জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন সভাপতিত্ব করেন। এ সময় সুজনের রংপুর মহানগর সভাপতি ফখরুল আনাম, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নাসিমসহ সুশীল সমাজের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।