- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৭ মে ২০২২, ১১:৪০, আপডেট: ১৭ মে ২০২২, ১১:৪২
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে অবস্থান মূলত ইসলাম ও দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক অপতৎপরতার আসল উদ্দেশ্য জনগণ জানতে চাই।
তথাকথিত গণকমিশন কর্তৃক দেশের শীর্ষ আলেম-ওলামার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তান ফুলবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে অ্যাডভোকেট ড. মো: হেলাল উদ্দিন ও মু. দেলাওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, আমিনুল ইসলাম, ড. মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি মু. আবুল খায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুল কাইউম মুরাদ, এছাড়াও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমীর, সেক্রেটারিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, তথাকথিত গণকমিশন কর্তৃক প্রকাশিত শ্বেতপত্রে দেশের শীর্ষস্থানীয় ১১৬ জন আলেম-ওলামাদের সম্পর্কে যেসব অশালীন মন্তব্য ও ধৃষ্টতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দেশের বরেণ্য এসব আলেম-ওলামা ও মাশায়েখদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তারা মূলত ইসলাম ও দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক অপতৎপরতার আসল উদ্দেশ্য জনগণ জানতে চাই। ওয়াজ মাহফিল দেশের হাজার বছরের সংস্কৃতি। ওয়াজ মাহফিল শান্তি-সমৃদ্ধি, আদর্শ সমাজ গঠন ও সমাজ সংস্কারের অন্যতম মাধ্যম। সমাজের সব অনাচার, অন্যায় ও ভুল থেকে ফিরিয়ে মানুষকে সৎ পথে ও কল্যাণের পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে ওয়াজ মাহফিল। এ সংস্কৃতি ধ্বংস করতে যারা কাজ করছেন, তারা আর যাই হোক দেশপ্রেমিক হতে পারেন না।
তিনি আরো বলেন, সেই সাথে আমরা বলতে চাই সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, অনিয়ম, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের সাথে এদেশের আলেম-ওলামাদের কখনো কোনো সম্পর্ক ছিল না এবং এখনো নেই। দেশের আলেম সমাজ সর্বদাই দেশ ও জাতির পক্ষে। তারা ঈমান, ইসলাম, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ইসলামী সংস্কৃতির পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা বুঝতে পারছি ইসলাম ও ওলামা-মাশায়েখদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও আশকারায় একশ্রেণীর কথিত বুদ্ধিজীবী মহল শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশের তৌহিদী জনগণকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
ড. মাসুদ বলেন, দেশে আইন-আদালত থাকতে গণকমিশন গঠন করা দেশের সংবিধানবিরোধী কর্মকাণ্ড। নাকি দেশের সংবিধান কোনো একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা দলের এককেন্দ্রীক সম্পদ। দেশের ১১৬ জন ওলামায়ে কেরামের তালিকা করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দেয়ার এখতিয়ার এই কমিশনের নেই। যারা তালিকা তৈরি করেছেন, তারা নিজেরাই বিভিন্ন অন্যায় অপরাধে অপরাধী। আমরা বুঝতে পারছি দেশবিরোধী একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করতে তথাকথিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত গণকমিশনের নামে নতুন চক্রান্তে মেতেছে। এমতাবস্থায় ইসলামপ্রিয় দেশপ্রেমিক জনগণকে নিরব বসে থাকলে চলবে না। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের এমন নাজুক পরিস্থিতির মধ্যেও সরকার বিরোধী দল-মত দমন করার মত হঠকারী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত হচ্ছে না। বরং ধারাবাহিকভাবে সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার, হয়রানি, মিথ্যা মামলা দিয়ে, কারাগারে আটক রেখে আবারো দেশে ভোট ডাকাতির পরিবেশ তৈরি করছে। আমরা সাধারণ মানুষের পক্ষে দাবি জানিয়ে বলতে চাই এসব মিথ্যা মামলা, হামলা, অপরাজনীতি বন্ধ করুন। তিনি এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি