মার্কিন প্রতিবেদন
২৮ জুন ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ডে আবারও ন্যূনতম আর্থিক স্বচ্ছতা অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। গত বছর বাজেটের নথিপত্র অনলাইনে প্রকাশ করলেও খরচের বিস্তারিত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ। তাই এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে উল্লেখযোগ্য হিসেবে মনে করছে না যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত ২০২৩ সালের ফিসক্যাল ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট বা আর্থিক স্বচ্ছতার প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ফিলিস্তিনসহ ১৪১টি দেশের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রতিবছর এই প্রতিবেদন তৈরি হয়। সর্বশেষ এই প্রতিবেদনে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই এক বছরে বাংলাদেশ বাজেটের নথিপত্র প্রকাশ করলেও বিভিন্ন নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং আয়-ব্যয়ের তথ্যের যে স্বচ্ছতা দেখানোর কথা, সেগুলো দেখাতে পারেনি। এ ছাড়া দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলন, লাইসেন্স প্রদান ও কার্যাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের স্বচ্ছতা বজায় রাখার কথা সেখানেও তা দেখাতে পারেনি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের মতো আরও বেশ কিছু দেশের বাজেটের নথিপত্র পর্যালোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ বাজেটের নথিপত্র এবং এর তথ্যগুলো প্রকাশ করলেও সরকারের যে নিরীক্ষা সংস্থা রয়েছে, তাদের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে ব্যয়ের বিস্তারিত যেসব খাত রয়েছে, তার নিরীক্ষিত তথ্য জনসমক্ষে প্রচার করা হয়নি। আর এর মধ্য দিয়েই বোঝা যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার ন্যূনতম যে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার কথা, তা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনসহ ১৪১ দেশের মধ্যে ৭২টি দেশ স্বচ্ছতার ন্যূনতম মান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ৬৯টি দেশ কাঙ্ক্ষিত ন্যূনতম মান অর্জন করতে পারেনি। এই ৬৯ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে। তবে ৬৯ দেশের মধ্যে ২৫টি দেশ ন্যূনতম মান অর্জনের চেষ্টায় অগ্রগতি অর্জন করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যেহেতু দেশটি তাদের জনগণের করের টাকার তহবিল থেকে এসব দেশকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে থাকে, তাই দেশগুলো অর্থ ব্যয়ের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পারছে কি না—এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে সেটাই দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতায় উন্নতি করতে ওই প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—একটি যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে ওই অর্থবছর শেষের প্রতিবেদন সবার মধ্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া; আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতি অনুযায়ী বাজেট নথি প্রস্তুত করা; বাজেটে নির্বাহী অফিসগুলোকে সহায়তা করার জন্য ব্যয়ের খাতগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা; সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে স্বাধীনভাবে আন্তর্জাতিক মান রেখে কাজ করতে পর্যাপ্ত দক্ষ করা; যথাসময়ে নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা, যাতে মূল অনুসন্ধান, সুপারিশ ও বর্ণনার বিস্তারিত তথ্য থাকে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের কার্যাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় থাকে, সেটা নিশ্চিত করা।