ঢাকা
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি গ্রাহকদের ঋণ শোধে বড় ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে খেলাপি গ্রাহকেরা এখন ঋণ স্থিতির ২ শতাংশ পরিমাণ জমা দিয়েই টাকা শোধ করতে পারবেন। এ জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ মওকুফ করতে পারবে। আর পুরো ঋণ শোধে এক বছর পর্যন্ত সময় পাবেন গ্রাহকেরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব এবং নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ঋণগ্রহীতারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অনেক ঋণ যথাসময়ে আদায় হচ্ছে না। এতে ঋণ বিরূপ মানে শ্রেণীকৃত হয়ে পড়ছে এবং ঋণের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই গত ডিসেম্বরে যেসব ঋণ মন্দ মানে শ্রেণীকৃত হয়েছে, তার জন্য নতুন নির্দেশনা অনুসরণ করা যাবে।
নতুন সুবিধা অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যেসব গ্রাহক তাঁদের ঋণের দায় সমন্বয়ে ইচ্ছুক এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখতে সমর্থ হচ্ছেন না, তাঁরা ঋণ স্থিতির ন্যূনতম ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে এককালীন ঋণ শোধের আবেদন করতে পারবেন। এসব গ্রাহক ঋণ শোধের জন্য আবেদন অনুমোদনের সময় থেকে এক বছর সময় দিতে পারবেন। এই মেয়াদের মধ্যে এককালীন বা মাসিক বা ত্রৈমাসিক কিস্তিতে অর্থ আদায় করা যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ঋণের পুরো অর্থ পরিশোধের আগপর্যন্ত ঋণ হিসাবটি আগের মতো মন্দ/ক্ষতি মানে শ্রেণীকৃত থাকবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ৫০ শতাংশ সুদ বা জরিমানা মওকুফ করতে পারবে। তবে কোনোভাবেই আসল ঋণ মওকুফ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে মওকুফ করা সুদ একটি পৃথক সুদবিহীন ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে।
এই সুবিধা নিতে আগ্রহী গ্রাহকদের আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হবে। আগে জমা দেওয়া কোনো কিস্তি বা জমা অর্থ এখন ২ শতাংশ জমা হিসেবে গণ্য হবে না। কোনো গ্রাহক ২ শতাংশ টাকা জমা দিয়ে আবেদন করলে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে তাঁর আবেদনের বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সুবিধা নেওয়া গ্রাহকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা থাকলে সলেনামা বা আপস–মীমাংসার ভিত্তিতে তা স্থগিত রাখা যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে কোনো ঋণগ্রহীতা কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে তাঁর সব সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে