
সম্প্রতি ব্রাজিলিয়ান লিগে সান্তোসের পরাজয়ের পর কোচ পেদ্রো কাইসিনহাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। বোঝাই যাচ্ছিল নেইমার জুনিয়রকে আনার পর কোচ বদল করে এবার ক্লাবটি ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন পথে হাঁটতে চলেছে। সেই তালিকায় জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে ২০১৮ বিশ্বকাপে লিওনেল মেসিদের আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হোর্হে সাম্পাওলি। অবশ্য এর আগেও তিনি সান্তোসকে কোচিং করিয়েছেন।
ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম ‘গ্লোবো’ বলছে, সাও পাওলোর দলটি প্রাথমিকভাবে ব্রাজিলের সাবেক কোচ তিতে এবং সদ্য বরখাস্ত হওয়া দরিভাল জুনিয়রকে প্রস্তাব দিয়েছিল। তাদের কেউই সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। বিশেষত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে সম্প্রতি ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া দরিভাল এই মুহূর্তে কোনো দলের দায়িত্বে না থাকলেও তিনি আগ্রহী নন সান্তোসের কোচ হতে। এরপর প্রতিবেশি ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ আর্জেন্টিনার দিকেই তাদের নজর।
সাম্পাওলিকে নতুন করে আবারও সান্তোসের কোচ করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন ক্লাব সভাপতি মার্সেলো তেইশেইরা। যদিও সান্তোসের বোর্ডের একাংশ আবার সাম্পাওলির ফিরে আসা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত—কারণ তার কোচিংয়ের জন্য বড় বাজেট দরকার, এবং তিনি খেলোয়াড় কেনা-বেচাতেও বড়সড় দাবি রাখতে পারেন। একইসঙ্গে সান্তোসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাদের বিষয়ে সাম্পাওলি আবেগী একজন। ক্লাবটি যেন পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারে এমন শুভকামনা জানিয়েছিলেন সান্তোসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে।
এর আগে ২০১৯ সালে সান্তোসের হয়ে সফল একটি মৌসুম কাটানোর পর ক্লাবটি ছেড়ে যান সাম্পাওলি। সেই মৌসুমে তার অধীনে সান্তোস ব্রাজিলিয়ান লিগে রানার্সআপ হয়েছিল। তার কোচিংয়ে দলটি সবমিলিয়ে ৬৪ ম্যাচ খেলে ৩৪টিতে জয় এবং ড্র করেছিল ১৫টিতে, বাকি ১৫টিতে হেরেছিল। খেলার বাইরেও দলের অভ্যন্তরীণ পরিবেশে কড়া ব্যবস্থাপনা আর আক্রমণাত্মক ফুটবলের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন এই আলবিসেলেস্তে কোচ।
সম্প্রতি সাম্পাওলি দায়িত্ব পালন করেছেন ফরাসি ক্লাব রেঁসে। যদিও তাদের সঙ্গে তার পথচলাটা বেশি দীর্ঘ হয়নি। স্থানান্তর বাজারে চাওয়া-পাওয়ার মিল না থাকায় দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হন বলে তিনি জানিয়েছেন। ফলশ্রুতিতে মাত্র ১০ ম্যাচেই রেঁসের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ হয় সাম্পাওলির।
অন্যদিকে, এর আগে সাম্পাওলির সান্তোস ছাড়ার মুহূর্তটা তার জন্য ঠিক সুখকর ছিল না। চুক্তির একটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগে কেবল দু’পক্ষের সম্পর্ক ছিন্ন–ই হয়নি, বরং তিনি একটি মামলাও করেন ক্লাবটির বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য আদালতের রায় যায় সাম্পাওলির পক্ষে। সেই তিক্ততা ক্লাব সংশ্লিষ্ট একাংশের মনে এখনও থেকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। এ ছাড়া কোচ হিসেবে পুনরায় ফিরলে বর্তমানে সান্তোসের প্রধান তারকা নেইমার জুনিয়রের সঙ্গেও কতটুকু মিলে সেটাই দেখার বিষয়।