মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেছেন, ‘আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’
জেলার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসের সঙ্গে ফোনালাপে এ কথা বলেন তিনি। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ফোনালাপের অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে।
ফোনে ডা. অলোক কুমার দাসকে হুমকি দিয়ে প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, ‘তুমি বাইরে থেকে এসে মেহেরপুরে খুব আরামেই আছো। টাকা-পয়সা অনেক কামাই করছো। বাড়ি-ঘর করেছো। আমি যদি আর একটা কথা শুনি মন্ত্রীকে (প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন) ভোট দেওয়ার ব্যাপারে, আমি এমপি হই, আর না হই, তোমার মেহেরপুরের বাসা আমি উঠিয়ে দেব। আর যদি তুমি সাবধান হয়ে যাও তাহলে আমার প্রিয় পাত্র হয়ে থাকতে পারবে। এটুকু আমি তোমাকে বললাম। পারলে তোমার মন্ত্রীকে বলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী, এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি। সাবধান হয়ে যাও তুমি। আমি তোমার কোনো কথা শুনব না। আমি যে রিপোর্ট পেয়েছি, আমি খুব অসন্তুষ্ট তোমার প্রতি, তুমি সাবধান হয়ে যাও।’
এ বিষয়ে ডা. অলোক কুমার দাশ বলেন, গেল ১৭ ডিসেম্বর প্রফেসর আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে আমার ফোনে একটি ফোন আসে। সে ফোনে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। তবে এটি সাধারণ বিষয় মনে করেছি। বিষয়টি আমার ফোনে অটোকল রেকর্ড হয়ে যায়। এর বেশি কিছু বলতে চায় না। আমি শান্তিতে থাকতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন এটি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। এসব নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হাসান অডিওটি মেহেরপুরের দায়রা জজ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির এই শাখার সভাপতি মো. কবির হোসেনকে দিয়েছেন।’
প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, ‘একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। অথচ ডা. অলোক কুমার দাস সবসময় প্রতিমন্ত্রীর বাসায় যায়। সেটি কোনো ক্রমেই কাম্য নয়। আমি ফোনে তাকে এটা বোঝাতে চেয়েছি, তার এই আচরণ অন্যায়। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য কেউ এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আমি ভারতের প্রার্থী না বলেছি। ‘না’ শব্দটি কেটে দেওয়া হয়েছে। আমাকে ভারতের প্রার্থী হিসেবে প্রমাণ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘প্রফেসর আব্দুল মান্নান যেটি করেছেন তা নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন। একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে এমন কথা বলতে পারেন না। আর উনি যে প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রার্থী হিসেবে নিজেকে দাবি করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছেন এটা অন্যায়। আমি বিষয়টি নিয়ে রির্টার্নিং কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেব।’
সমকাল