- by নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কেএম আমিনুল হক ওরফে রজব আলীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর কলাবাগান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৪ সাল থেকে পলাতক ছিলেন তিনি।
র্যাব জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর কেএম আমিনুল হকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়। ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর বর্ণিত অভিযোগের তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
আমিনুলের অপরাধ সম্পর্কে র্যাব জানায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশের নিরীহ মুক্তিকামী মানুষকে হত্যাসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন আমিনুল হক।
ওই সময় ভৈরবের একটি কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ইসলামি ছাত্রসংঘের কলেজ শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আমিনুল। এর পাশাপাশি পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে পাক বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য এলাকায় আলবদর বাহিনী গঠন করেন এবং কিশোরগঞ্জ জেলার কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আমিনুল ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর যৌথবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করেন। ১৯৭২ সালে তার বিরুদ্ধে অষ্টগ্রাম থানায় দালাল আইনে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে তার ৪০ বছর সাজা হয় কিন্তু রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমায় ১৯৮১ সালে মাত্র ১০ বছর সাজা ভোগ করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রেপ্তারকৃত আমিনুল ‘আমি আলবদর বলছি’ ও ‘দুই পলাশী দুই মীরজাফর’ নামে দুটি বই প্রকাশ করেন। বই দুটিতে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের শোকাবহ ১৫ আগস্টের দিনসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।