যখন লিবারেল আদর্শের কলা দেখিয়ে কিম্বা গণতন্ত্রের কেচ্ছা গেয়ে একটি অনির্বাচিত ও খুনি রেজিম জবরদস্তি ক্ষমতায় থাকে এবং শ্রমিক তার সময় মতো ন্যায্য মজুরি চাইলে কিম্বা রমজানে কাজের সময়ের পুনর্বিন্যাস দাবি করলে পুলিশ গুলি করে তাদের হত্যা করে, তখন ‘বিচার চাই’ বলার অর্থ কি? কার কাছে বিচার চাইছি?
আপনার কাছে। আপনার বিবেকের কাছে। বিচার চাই বলার অর্থ এভাবে দেশ চলতে পারে না। কারন বিচার চাইবার কোন জায়গা আর নাই। তখন কি চাই সেটা নেহায়েত স্টুপিড না হলে কাউকে ভেঙে বলার দরকার পড়ে না।
গণমাধ্যমগুলোর খবর খেয়াল করুন। তারা দাবি করছে ‘সংঘর্ষ’ হয়েছে, তাতেই নাকি শ্রমিক মারা গিয়েছে। কার সাথে কার সংঘর্ষ হোল? খবরে দেখা যাচ্ছে গুলি মারা হয়েছে শ্রমিকদের বক্ষ বা বুক লক্ষ্য করে। কেন? তাদের কাছে ইট পাটকেল ছিল বলে?
আপনি কাজ করিয়েছেন মজুরি মিটিয়ে দেবেন না কেন? এটা বিপ্লবী কোন দাবি না। বাজার ব্যবস্থার নিয়ম। আমি সর্বহারা। শ্রমশক্তি ছাড়া আর কিছু বাজারে বিক্রি করতে পারি না। নিজেকে না বেচলে আমি বেঁচে থাকতে পারি না। তাহলে আমার শ্রম বা শ্রমশক্তির দাম আপনি মিটিয়ে দেবেন না কেন? বাজার ব্যবস্থাই যদি বলেন তাহলে বাজারের নিয়ম মানবেন না কেন? আপনার পণ্য কিনলে সঙ্গে সঙ্গে দাম পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু আমার শ্রম আপনি কিনলে আপনি বকেয়া রাখেন কেন? এটা কোন ধরনের অবাধ বাজার ব্যবস্থা?
আপনারা কেউ কেউ কাছাখোলা বাজার ব্যবস্থাকে ‘নিউ লিবারেজম’ বলে মনে করেন পণ্ডিত হয়ে গিয়েছেন!! ওয়ার্ড গেইম ভাল। কিন্তু এতে বাজারও বোঝা যায় না, ক্ষমতা বা রাষ্ট্রও বোঝা যায় না, দৈনন্দিন জীবনে – বিশেষত শ্রমিকের জীবনে তা গ্রিক ভাষায় ওয়াজ করার মতো ব্যাপার। আপনি কাজ করিয়েছেন সময় মতো মজুরি দেবেন। ব্যস। রমজানে শ্রমিকরা যদি শ্রমঘণ্টার পুনর্বিন্যাস যদি চায় মানবেন না কেন? সহজ বিষয় আপনার সহজ ভাবে বুঝতে অসুবিধাটা কোথায়?
শুধু তাই নয়। আপনাদের বিবেক কোথায় গিয়ে ঠেকেছে ভাবুন, কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো আপনারা ফ্যাসিস্টকেফ্যাসিস্ট না বলে একে বলেন ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকার। রাষ্ট্র মানেই কর্তৃত্ব তাকে আলাদা করে কর্তৃত্ব কায়েম করতে হয় না। আপনাদের তামাশা দেখছি দীর্ঘদিন ধরে।
ফ্যাসিস্টকে ফ্যাসিস্ট বলুন, খুনিকে খুনি।