বাংলাদেশে রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্ন ধীরে ধীরে মাঠে গড়াচ্ছে। ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক বসাবসি শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতও আসছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে মনোযোগ পেল নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের আলাপ-আলোচনা-মতামত। এটা স্বাভাবিক। কারণ, একটি সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ। এটাই হতে যাচ্ছে আগামীর মূল আকর্ষণ।
ইতিমধ্যে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ হিসেবে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন নিয়ে সমাজে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। কয়েকটি রাজনৈতিক দল পদ্ধতি হিসেবে একে পছন্দের কথা বলছে। একই সঙ্গে এ রকমও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, আনুপাতিক পদ্ধতির ভেতর দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের বিপক্ষ শক্তিগুলো জাতীয় রাজনীতিতে ঢুকে পড়ার সুযোগ পেতে চলেছে কি না? এ উদ্বেগ সামাল দিয়ে কীভাবে আলোচিত এই সংস্কারের পথ বাধামুক্ত করা যায়—সে নিয়ে নিশ্চয়ই ভাবতে হবে এখন।
বর্তমান পদ্ধতি ও আনুপাতিক পদ্ধতির মধ্যে ‘নতুন উদ্বেগ’
বাংলাদেশের এখনকার নির্বাচনী ব্যবস্থায় একজন প্রার্থী বিপক্ষ ভোটের চেয়ে কম পেয়েও জিততে পারেন; যদি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিভিন্ন মার্কায় বিভক্ত থাকেন। ধরা যাক, একজন প্রার্থী ১ লাখ প্রদত্ত ভোটে ৪০ হাজার পেলেন, আর তাঁর তিন প্রতিদ্বন্দ্বী মিলে ৬০ হাজার (২৫+২০+১৫) ভোট পেলেন। এ রকম ক্ষেত্রে প্রথমজন জয়ী হয়েছেন বলেই ধরা হয়। এতে জাতীয় পার্লামেন্টে ওই নির্বাচনী এলাকার যিনি প্রতিনিধি হন, তিনি আসলে সংখ্যাগরিষ্ঠের বাছাই নন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার কার্যত সেখানে প্রতিনিধিত্বহীন থাকেন। কিন্তু এভাবেই চলছে বহুকাল। সংস্কার করা না হলে এ ব্যবস্থাতেই সামনে ভোট হতে পারে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে এটা অনুমান করা যায়, চলতি ব্যবস্থা বহাল থাকলে আসন্ন ভোটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে। জনসমর্থন ও সাংগঠনিকভাবে তারা অন্য দলগুলোর চেয়ে এখন এগিয়ে আছে। তবে বিএনপি ছাড়া অন্য দলগুলো চাইছে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন। এমনকি বিএনপির অনেক পুরোনো জোট-সহযোগীও ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন চায়। এ রকম হলে তারা লাভবান হতে পারবে বলে মনে করছে। এই ‘লাভে’র চিন্তায় কোনো অন্যায় নেই।
কমিউনিস্ট পার্টি থেকে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন পর্যন্ত সবারই আনুপাতিক পদ্ধতিতে পার্লামেন্টে কমবেশি আসন পাবে বলে অনুমান করা যায়। তবে এ ধরনের ‘সংস্কারে’ আওয়ামী লীগও ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারে—যদি তাদের নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া না হয়। বিএনপি কর্মীরা সামাজিক পরিসরে আনুপাতিক পদ্ধতির বিরোধিতা করতে গিয়ে এ রকম ‘বিপদে’র কথা বলছেন। তাঁদের এই বক্তব্য এক অর্থে অমূলক নয়। গণ-অভ্যুত্থানের সব শক্তির বিএনপির উদ্বেগ নিয়ে ভাবার দায় আছে।
আওয়ামী লীগের যে প্রথাগত ‘ভোটব্যাংক’ তাতে বর্তমানের বিরূপ অবস্থায় পুরোনো পদ্ধতিতে দলটি যে সংখ্যায় আসন আশা করতে পারে—আনুপাতিক পদ্ধতিতে ভোট হলে আসন-হিস্যা সেই তুলনায় বাড়বে। এর বাইরে আনুপাতিক পদ্ধতিতে এই দলের ভিন্ন লাভও আছে।
এই মুহূর্তে পুরোনো আসনভিত্তিক ভোটে নৌকা মার্কার পক্ষে অনেক জায়গায় প্রার্থী হতে গিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারেন এই দলের প্রার্থীরা। কিন্তু আনুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয়ভাবে কেবল মার্কাকে সামনে রেখে ভোট হলে লীগ তাদের এখনকার সাংগঠনিক সংকট এড়িয়ে যেতে সক্ষম হবে।
■ বাংলাদেশের চলমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় একজন প্রার্থী বিপক্ষ প্রাথীদের চেয়ে কম ভোট পেয়েও জিততে পারেন।
■ শ্রীলঙ্কায় একজন ভোটার ভোট দেওয়ার সময় পছন্দের দল বাছাই করেন এবং একই সময় পছন্দের দলের প্রার্থীদেরও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাছাই করেন।
■ নির্বাচনী ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের কারণে নেপালে নারী ও নিচুতলার মানুষের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ বেড়েছে।
তবে এখনো কোনো ধরনের সংস্কার প্রস্তাব অনুমোদন হয়নি। ফলে ওপরের অনুমানগুলো কল্পনাপ্রসূত বলা যায়। এখানে আনুপাতিক পদ্ধতির কোন মডেল বেছে নেওয়া হবে, তা কেউ জানে না এখনো। ফলে মতামত দেওয়ার সুযোগ আছে এখনো।
এ রকম ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আনুপাতিক পদ্ধতি নিয়ে যে দুটি দেশে নিরীক্ষা হয়েছে, তাদের অভিজ্ঞতাও খতিয়ে দেখা যায়। আনুপাতিক পদ্ধতির পুরো সুফল পেতে এ রকম অভিজ্ঞতার পাশাপাশি আরও সহায়ক সংস্কার দরকার আছে কি না, সেটাও ওই দুই দেশের সংস্কারকদের কাছ থেকে চাইলে আমরা জানতে পারি। শ্রীলঙ্কা ও নেপালের এ বিষয়ে অর্জিত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিপুল।
শ্রীলঙ্কা যেভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচন করে
এটা সবার জানা, শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের মতো একাধিক ধর্ম ও জাতির দেশ। জাতি হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলিদের সঙ্গে ১৫ শতাংশের তামিল সমাজ পুরোনো পদ্ধতির ভোটে পেরে উঠত না। ভোটে জাতি ও ধর্ম পরিচয় যুক্ত হয়ে পড়ে বিধায় বৌদ্ধ-সিংহলিদের সঙ্গে হিন্দু ও মুসলমান তামিলরা অনিবার্যভাবে কোণঠাসা থাকত। একপর্যায়ে আনুপাতিক পদ্ধতিতে এই সমস্যার সমাধান খুঁজেছে দেশটি। যদিও সেই সমাধান মূলত পার্লামেন্ট নির্বাচনে কাজ করছে। সংসদ ও প্রেসিডেন্ট—দুটিই থাকলেও নির্বাহী ক্ষমতায় এ দেশে শেষোক্ত পদেরই দাপট।
এ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কায় পার্লামেন্টে আসন ২২৫। এর মধ্যে দেশকে ১৯৬ আসনে ভাগ করে আনুপাতিক পদ্ধতিতে সেসবে প্রার্থীভিত্তিক সরাসরি ভোট হয়। এই ১৯৬টি আসন দেশটির ৯ প্রদেশকে ২২টি ‘নির্বাচনী জেলায়’ ভাগ করে বণ্টিত হয়। এই বণ্টন হয় দুভাবে।
প্রতিটি প্রদেশকে দেওয়া হয় ৪টি করে আসন (৩৬টি), আর প্রদেশগুলোর ভেতরে থাকা ‘নির্বাচনী জেলা’গুলোকে জনসংখ্যার ভিত্তিতে দেওয়া হয় বাকি ১৬০ আসন। এই ১৯৬ আসনের বাইরে পার্লামেন্টের বাকি ২৯টি আসন রাখা হয় ‘জাতীয়ভিত্তিক আসন’ হিসেবে। সেগুলো রাজনৈতিক দলগুলো পায় পূর্বোক্ত ১৯৬ আসনে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হিস্যা অনুযায়ী। রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটের আগেই ওই ২৯ ‘জাতীয়’ আসনের প্রার্থীদের অগ্রাধিকারভিত্তিক নামের তালিকা দিতে হয়। তবে পরে সেই তালিকায় নতুন নামও দেওয়া যায়।
১৯৮৯ সাল থেকে লঙ্কায় এভাবে পার্লামেন্টে জনপ্রতিনিধি বাছাই হচ্ছে। নির্বাচিতরা আনুপাতিক পদ্ধতিতে দুই উপায়ে বাছাই হন। একজন ভোটার তাঁর নির্বাচনী জেলায় ভোট দেওয়ার সময় পছন্দের দল বাছাই করেন এবং একই সময় পছন্দের দলের প্রার্থীদেরও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাছাই করেন। এসব পছন্দের ভিত্তিতে ১৯৬ জন সরাসরি মাঠে নির্বাচিত; ২৯ জন ওই ১৯৬ আসনের ভোটের হিস্যায় পরে নির্বাচিত।
কোনো ‘নির্বাচনী জেলায়’ কোনো দল ৫ শতাংশের কম ভোট পেলে তাদের আসন বণ্টনের বাইরে রাখা হয়। মজার দিক হলো, যে দল বা প্রতীক একটা নির্বাচনী জেলায় সবচেয়ে বেশি ভোট পায়, তাদের সেই জেলার কোটা থেকে একটা আসন দিয়ে দেওয়া হয় ‘বোনাস’ হিসেবে। মূলত এই বোনাস ব্যবস্থা বড় দলগুলোকে আনুপাতিক সংস্কারে সম্মত করিয়েছে।
নেপালে যেভাবে চূড়ান্ত বিকেন্দ্রীকরণ হলো
দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কার বেশ পরে নেপাল নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করে। এ কাজে বাধ্য করে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতি।
নেপালে আনুপাতিক পদ্ধতির আগের সমস্যাটা জাতিগত বা ধর্মতাত্ত্বিক ছিল না। অর্থাৎ তাদের সমস্যা শ্রীলঙ্কার মতো নয়। সেখানে পুরোনো পদ্ধতিতে গরিব ও ক্ষুদ্র জাতিগুলো ভোটে প্রতিনিধি হতে পারত না। বিশেষ করে পাহাড়ি জনজাতি, দলিত এবং প্রান্তিক সমাজের মানুষ পার্লামেন্টে আসত কম। এই চিরবঞ্চিত মানুষগুলোই সেখানে বিপ্লবের লক্ষ্যে মাওবাদীদের ডাকে সাড়া দিয়েছিল। যার একটা ফল নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার।
নেপালে এখন নির্বাচন হচ্ছে তিন স্তরে। জাতীয় পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে মধ্যবর্তী স্তর হিসেবে আছে ‘প্রাদেশিক সরকার’। ২০১৫ সালে রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে রাজতন্ত্র থেকে তারা এ রকম বিকেন্দ্রীকৃত শাসনপদ্ধতি পেয়েছে। এই ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় বা ফেডারেল পার্লামেন্টের (‘প্রতিনিধিসভা’ নামে পরিচিত) ২৭৫টি আসনের ১৬৫ আসনে বাংলাদেশের এখনকার মতোই ভোট হয়। বাকি ১১০ আসনে সদস্যরা নির্বাচিত হন প্রথমোক্ত ১৬৫ আসনে বিভিন্ন দলের পাওয়া ভোটের হিস্যায়। প্রতিটি দলকে শেষের ১১০ আসনের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রার্থী তালিকা আগেই প্রকাশ করতে হয়।
প্রতিনিধিসভার মতোই সাতটি ‘প্রাদেশিকসভা’র জন্য একইভাবে ভোট হয়। সাত প্রদেশে আসন আছে ৫৫০টি। অর্থাৎ প্রতিনিধিসভা এবং প্রাদেশিক সভা—দুই জায়গাতেই ৬০ ভাগ আসন বাংলাদেশের এখনকার মতো পদ্ধতিতে এবং বাকি ৪০ ভাগ আনুপাতিক পদ্ধতিতে পূরণ হয়। এভাবে এই দুই স্তর মিলে ৮২৫ জন নেতার ৩৩০ জন আনুপাতিকভাবে আসেন। তবে তৃতীয় স্তরের স্থানীয় সরকারে নির্বাচন হয় বাংলাদেশের মতো পদ্ধতিতে। স্থানীয় সরকারের ৭৫৩টি ইউনিট আছে এখানে। তবে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদেরও জাতীয়ভাবে মতামত রাখার সুযোগ আছে।
প্রতিনিধিসভার পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের অংশ হিসেবে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বা ‘রাষ্ট্রীয় সভা’ নামে আরেকটি কক্ষ আছে। যার সদস্যসংখ্যা ৫৯। এখানে ৫৬ জন নির্বাচিত হন প্রতিনিধি সভা ও প্রাদেশিক সভার সদস্য এবং স্থানীয় সরকার ইউনিটগুলোর চেয়ারম্যান/মেয়র মিলে। ৫৯ জনের বাকি ৩ জনকে রাষ্ট্রপতি পছন্দ করেন। তবে খেয়াল রাখা হয়, ৫৯ জনে যেন সাতটি প্রদেশ থেকে ন্যূনতম ৮ জন করে প্রতিনিধি থাকেন। যার মধ্যে আবার তিনজন নারী থাকতে হবে।
নেপালে নির্বাচনী সংস্কারের একটা বড় দিক—সব স্তরে আসনের অন্তত তিন ভাগের এক ভাগ নারী থাকতেই হবে। একদম স্থানীয় স্তরে এটা ৪০ শতাংশ থাকতে হয়। এর মধ্যে আবার প্রতি ওয়ার্ডের নারী সদস্যদের একজন হতে হয় দলিত। এর ফলে দেশটিতে রাতারাতি প্রায় সাড়ে ছয় হাজার দলিত নারীর অভিষেক ঘটেছে রাজনৈতিক জগতে। দেশটিতে জনসংখ্যার ১৩-১৪ শতাংশ দলিত হলেও আগে তাঁরা রাজনীতিতে এমন উপস্থিতির কথা ভাবতেও পারতেন না। মাওবাদীদের চাপে দেশটির নিচুতলায় এই রাজনৈতিক পরিবর্তন সাধিত হয়।
বড় দলগুলোকেও সংস্কারে রাজি করানো সম্ভব!
শ্রীলঙ্কা ও নেপালের নিরীক্ষা থেকে স্পষ্ট, পার্লামেন্টের কোনো আসনে একজন ‘বিজয়ী’ যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চেয়ে কম ভোট পেয়েও ওই এলাকার সবার প্রতিনিধি বনে যান, এটাই বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থার একমাত্র সংকট নয়। বরং বিভিন্ন পেশাজীবী, নারী ও প্রান্তিক সমাজের দরিদ্র মানুষের জনপ্রতিনিধি আকারে সংসদে এনে জাতীয় নীতিনির্ধারণে যুক্ত করতে পারা হলো ভোটব্যবস্থা সংস্কারের প্রধান বৈপ্লবিক দায়িত্ব। নেপালে এটা সম্ভব হয়েছে সেখানকার পরিবর্তনবাদীদের রাজনৈতিক চাপে।
বাংলাদেশের ‘বৈষম্যবিরোধী গণ-অভ্যুত্থান’ চাইলে এসব নিরীক্ষা থেকে শিখতে পারে। চাইলে ভোটব্যবস্থাকে আরও অগ্রসর স্তরেও নিতে পারে। সংস্কারের মাধ্যমে সমাজের সেসব জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সংসদে আনা সম্ভব—যাঁরা কোনো দিন তেমন প্রত্যাশার কথা বলার সুযোগ পাননি। নারী আসনের পাশাপাশি সংখ্যালঘু জাতি ও সংখ্যালঘু ধর্মের জনপ্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর পথও খোঁজা দরকার।
তবে এ রকম সংস্কারে প্রধান দলগুলোর সম্মতিও দরকার। বিশেষ করে বিএনপির। এই দলকে আনুপাতিক পদ্ধতিতে সম্মত করাতে শ্রীলঙ্কায় যেভাবে ‘নির্বাচনী জেলা’সমূহে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দলের জন্য বোনাস আসনের ব্যবস্থা আছে, সেই ধারণাকে বিবেচনা করা যায়।
বলা বাহুল্য, বাংলাদেশ এ মুহূর্তে ইতিহাসের এক দুর্দান্ত মুহূর্তে আছে—যেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক-সমাজ গঠনের সম্ভাবনা আকাশের সমান বিশাল। আবার কায়েমি স্বার্থবাদীদের কাছে হেরে যাওয়ার শঙ্কাও প্রবল। আসন্ন সংস্কারকে যেমন বৈপ্লবিক চরিত্রের হতে হবে, তেমনি রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতে সেটাকে ভবিষ্যতের জন্য টেকসইও করে যেতে হবে।
●আলতাফ পারভেজ: গবেষক ও লেখক